রাশিয়া বিশ্বের প্রধান জ্বালানি শক্তিগুলোর মধ্যে একটি। তাদের প্রচুর তেল ও গ্যাস সম্পদ আছে যা উত্তোলন করে সারা বিশ্বের ফ্যাকটরি, গ্যাস ট্যাংক ও পাওয়ার স্টেশনে সরবরাহ করা হয়। বিশাল জ্বালানি সরবরাহ পুতিনের হাতে এক মারাত্মক ক্ষমতাশালী অস্ত্র তুলে দিয়েছে, যা ব্যবহার করে শত্রুকে শায়েস্তা করতে, বন্ধুদের পুরষ্কৃত করতে এবং বিশ্বের ব্যবসা ও রাজনীতিতে প্রভাব খাটাতে সে দ্বিধা করে না। নানাভাবে জ্বালানিশক্তি সংগ্রহের জন্য ইউরোপের বর্তমান ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা আছে। প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার স্পট মার্কেট দিনদিন বড় হচ্ছে। তবুও অন্তত বর্তমানে পুরো মহাদেশ রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। পুতিন মূহুর্তের নোটিশে পুরো উপমহাদেশের অর্থনীতিকে লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারে। জার্মান…
Author: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
সুরা কাসাসের অধিকাংশ স্থানে ফেরাউনের সাথে মুসা আলাইহিস সালামের যে ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল, তার আলোচনা করা হয়েছে। হরফে মুকাত্তায়াত-ত-সীন-মীম দ্বারা সুরাটি শুরু হয়েছে। এরপরই কুরআনের সত্যতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এরপর মুসা আলাইহিস সালামের ঘটনা শুরু হয়েছে। সুরা কাসাসের মাধ্যমে জানা যায়, মিসরের ফেরাউন অত্যন্ত দুরাচার ছিল। অহংকার, জুলুম ও নিষ্ঠুরতার ক্ষেত্রে সে সীমালঙ্ঘন করেছিল। জনগণ যাতে তার ক্ষমতার জন্য কাল হয়ে না দাঁড়ায় এজন্য সে বর্তমানকালের সাম্রাজ্যবাদী নীতিতে মিসরবাসীকে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীতে বিভক্ত করে রেখেছিল। মিসরের সংখ্যালঘু বনি ইসরাইলকে সে জুলুম-নির্যাতনের বিশেষ টার্গেট বানিয়ে রেখেছিল। একসময় আল্লাহ তায়ালা দুর্বলদের দাঁড় করানোর এবং শক্তিশালী দলকে লাঞ্ছিত করার ইচ্ছা করেন। তখন মুসা…
ইয়াকুব আলাইহিস সালামের বারো ছেলে ছিল। হজরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম তাদের মধ্যে অস্বাভাবিক সুন্দর ছিলেন। তার চেহারা ও চরিত্র —দুটোই সুন্দর ছিল। তিনি ও তার ভাই বিনয়ামিনের সবার ছোট হওয়াও এই ভালোবাসার একটি কারণ ছিল। আর তাদের মায়েরও ততদিনে মৃত্যু হয়ে গিয়েছিল। ছোট বাচ্চার প্রতি ভালোবাসা মানুষের স্বভাবগত বিষয়। হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহুর মেয়েকে জিজ্ঞাসা করা হয় আপনার নিকট আপনার কোন সন্তান সবচেয়ে বেশি প্রিয়? তিনি উত্তরে বলেন, ছোট সন্তান, যতক্ষণ না সে বড় হয়। অনুপস্থিত সস্থান, যতক্ষণ না সে উপস্থিত হয়। অসুস্থ সন্তান, যতক্ষণ না সে সুস্থ হয়। এ ভালোবাসার কারণে ভাইয়েরা তার সাথে হিংসা করা শুরু করে। তারা তাদের…
ইসলামে নামাজ এক পবিত্র অনুশীলন যা একজন বিশ্বাসী এবং তাদের সৃষ্টিকর্তার মধ্যে সরাসরি সংযোগ হিসাবে কাজ করে। এটি বিশ্বাসের একটি স্তম্ভ, আধ্যাত্মিকতার উৎস এবং নির্দেশনা ও ক্ষমা চাওয়ার একটি মাধ্যম। তবুও, এর গভীর তাৎপর্য থাকা সত্ত্বেও, এমন কিছু ব্যক্তি আছেন যারা স্রষ্টার সাথে সঠিকভাবে কথা বলতে পারে না, সম্পর্ক তৈরী করতে পারে না। নফসের সাথে সংগ্রামের মুখোমুখি হয়। ইসলামী শিক্ষায়, এই ধরনের ব্যক্তিদের “মুনাফিক” বলা হয়। তার এই রোগের জন্য তার অন্তরে বাসা বাঁধা সংশয়বাদই দায়ী। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, وَ اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ؕ وَ اِنَّهَا لَکَبِیۡرَۃٌ اِلَّا عَلَی الۡخٰشِعِیۡنَ ﴿ۙ۴۵﴾ الَّذِیۡنَ یَظُنُّوۡنَ اَنَّهُمۡ مُّلٰقُوۡا رَبِّهِمۡ وَ اَنَّهُمۡ…
মুদ্রাস্ফীতি হলো বর্তমান অর্থব্যবস্থার সবচেয়ে বড় জালিয়াতিগুলোর মধ্যে একটি। মুদ্রাস্ফীতি ঘটে যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও পরিষেবার দাম বাড়তে থাকে। যখন এটা ঘটে তখন আমাদের পকেটে থাকা টাকার দাম কমে যায়, আমরা একই দামে আগের পরিমাণ জিনিস কিনতে পারি না। সামান্য মূল্যস্ফীতি স্বাভাবিক এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, কিন্তু অত্যধিক মুদ্রাস্ফীতি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এটি মানুষের জন্য খাদ্য এবং বাসস্থানের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর ব্যয়ভার বহন করা কঠিন করে তুলতে পারে। এটি ব্যবসার ভবিষ্যতকেও অনিশ্চিত করে তুলতে পারে। তাই ব্যবসায়ীরা আরও বেশি কর্মী নিয়োগ বা নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ করার সাহস করে উঠতে পারে না। কেউ কেউ বিশ্বাস করে যে মুদ্রাস্ফীতি শুধুমাত্র…
‘হৃৎপিণ্ড পাম্পের মতো কাজ করে’ এ উপমাটি প্রথম দেওয়া হয় ১৮ শতকে, যখন বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কৃত হয়। ইঞ্জিনের পিস্টনগুলোর পাম্পিংয়ের মতো নড়াচড়া শারীরতত্ত্ববিদদের এতটাই ভালো লেগে যায় যে, তারা হৃৎপিণ্ডকে পাম্প বলতে শুরু করেন। হৃৎপিণ্ডের পাম্পিং দক্ষতার দিকে তাকালে বিস্মিত হতে হয়। হৃৎপিণ্ড দিনে প্রায় 1 লাখ বার স্পন্দিত হয়। বছরে 4 কোটি বার এবং প্রায় ৬০ থেকে ৭০ বছর একটুও না থেমে স্পন্দিত হতে থাকে। এটি প্রতি মিনিটে দুই গ্যালন এবং প্রতি ঘণ্টায় ১০০ গ্যালনেরও বেশি রক্ত পাম্প করে। যে সংবহনতন্ত্র এই প্রাণের জন্য অপরিহার্য রক্ত পরিবহন করছে, তা ৬০ হাজার মাইলের চেয়েও অধিক দীর্ঘ, যা পৃথিবীর পরিধির দ্বিগুণেরও…
ইতিহাস জুড়ে, পশ্চিমা সভ্যতার লজ্জাশীলতার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বেশ অনেক বার পরিবর্তনের সম্মুখীন হয়েছে। প্রাচীন গ্রীস ও রোমে নগ্নতাকে সহজাতভাবে অশ্লীল বলে মনে করা হত না। শিল্প ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নগ্নতাকে তারা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করত। রেনেসাঁ যুগে অশ্লীলতার প্রতি আগ্রহের পুনরুজ্জীবন দেখা যায় তাদের মধ্যে। যার ফলে অসংখ্য নগ্ন ভাস্কর্য ও চিত্রকর্ম তৈরি করা হয়। পশ্চিমে খ্রিস্টধর্মের উত্থান এবং পশ্চিমা সমাজে এর প্রভাবের কারণে খ্রিষ্টধর্মের লজ্জার ধারণাগুলো ধর্মীয় বিশ্বাস ও শিক্ষার সাথে জড়িয়ে পড়ে। ১৯ শতকে ভিক্টোরিয়ান যুগে, শালীনতা ও পোষাকআশাকের ওপর জোর দিয়ে কঠোর সামাজিক আচরণবিধি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই যুগটি ছিল পূর্ববর্তী সময়ের সাথে সম্পূর্ণ বৈপরীত্যের সাক্ষী। এই সমাজে নারীদের শরীরের আবরণ অত্যন্ত মূল্যবান বলে মনে করা হয়তো। পোশাক সামাজিক মর্যাদা এবং নৈতিক গুণের প্রতীক হয়ে ওঠে। সমাজের সেট করা মানদণ্ড থেকে যে কোনো বিচ্যুতি ঘটলে কঠোর বিচার…
একটা সিরিয়াস প্রশ্ন! ইসলামের কি কোনো বিকৃতি হয়েছে? বিগত ১৪ শতাব্দীতে এর সাথে কিছু ঘটেছে? আবদুল্লাহ ইবনু আমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, لَيَأْتِيَنَّ عَلَى أُمَّتِي مَا أَتَى عَلَى بَنِي إِسْرَائِيلَ حَذْوَ النَّعْلِ بِالنَّعْلِ حَتَّى إِنْ كَانَ مِنْهُمْ مَنْ أَتَى أُمَّهُ عَلاَنِيَةً لَكَانَ فِي أُمَّتِي مَنْ يَصْنَعُ ذَلِكَ وَإِنَّ بَنِي إِسْرَائِيلَ تَفَرَّقَتْ عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ مِلَّةً وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً كُلُّهُمْ فِي النَّارِ إِلاَّ مِلَّةً وَاحِدَةً قَالُوا وَمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِي বনি ইসরাইল যে অবস্থায় পতিত হয়েছিল, নিঃসন্দেহে আমার উম্মাতও সেই অবস্থার সম্মুখীন হবে, যেমন একজোড়া জুতার…
ব্রিটেনে একটি গল্প বেশ প্রচলিত। গল্পটি ব্রিটেনের ভারতের উপনিবেশিকরণ নিয়ে। উপনিবেশটা যতই ভয়ংকর হোক না কেন এটি ব্রিটেনের জন্য কোনো অর্থনৈতিক সুবিধা বয়ে আনেনি। বরঞ্চ, ভারতে প্রশাসন পরিচালনা করতে গিয়ে ব্রিটেনের নিজের পকেটের টাকা গচ্চা দিতে হয়েছে। কিন্তু এরপরও তারা ভারতের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ রেখেছিল। কারণ তারা ভারতের জনগণের প্রতি আন্তরিক ছিল, তাদের সাহায্য করতে চেয়েছিল। উত্সা পাটনায়েক নামক এক বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ সম্প্রতি একটি গবেষণা করেছেন এবং দেখেছেন যে, ব্রিটেনের অনেকে ভারতে তাদের উপনিবেশ সম্পর্কে যে গল্প বলে তা সত্য না-ও হতে পারে। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস[1] থেকে প্রকাশিত তার গবেষণা অনুসারে, ১৭৬৫ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত ১৭৩ বছর ধরে ব্রিটেন…
ভারত ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট দীর্ঘদিন অন্যদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকার পরে একটি স্বাধীন দেশ হয়ে ওঠে। কিন্তু এই আনন্দের সময়টাও দুঃখজনক ছিল “দেশভাগ”-এর কারণে। এই সময় ভারত দুই ভাগে বিভক্ত হয়: পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে। এই বিভক্তের কাজটি করে দিয়ে যায় ব্রিটিশরা। তারপর থেকে এখন ৭০ বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু আসলে কী ঘটেছিল তা ভাবাটা আজও কঠিন। মারামারি, মানুষকে আহত করা, সম্পত্তি ধ্বংস করার মতো অনেক খারাপ ঘটনা ঘটে৷ প্রচুর লোককে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে হয়েছিল এবং প্রচুর সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছিল। কয়েক মাসের পরই ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীর নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। যার ফলাফল আজও আমাদের প্রভাবিত…
সিপাহি বিদ্রোহ বা সৈনিক বিদ্রোহ ১৮৫৭ সালের ১০ মে অধুনা পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরে শুরু হওয়া ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর সিপাহিদের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহ। ক্রমশ এই বিদ্রোহ গোটা উত্তর ও মধ্য ভারতে ছড়িয়ে পড়েছিল। বিদ্রোহটি ১৮৫৭ সালে দমানোর পর ব্রিটিশরা বুঝতে পারল যে তাদেরকে নিজেদের পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে। তারা যেভাবে ভারতকে শাসন করছে এভাবে আর করা যাবে না। অর্থাৎ, বর্ণবাদী ও বৈষম্যবাদী হওয়া যাবে না, ভারতীয়দের সকল সরকারী অবস্থান থেকে বঞ্চিত রাখা যাবে না। তাই তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে লাগল। কিন্তু এরপরও মুসলিমরা তখনও প্রান্তিক গোষ্ঠী হিসেবেই ছিল। আমি এটা বানিয়ে বলছি না, পক্ষপাতিত্ত্বও করছি না। এই বিষয়টি ঐতিহাসিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের পর মুসলিম সম্প্রদায় ভারতের ঔপনিবেশিক শক্তির ক্রোধের…
প্রথম কারণঃ মানুষের সহজাত ঘাটতি প্রকৃতপক্ষে, আল্লাহ যতটা প্রশংসা বা ইবাদত পাওয়ার যোগ্য; মাখলুকের পক্ষে তার ততটা প্রশংসা বা ইবাদত করা সম্ভব না। আর যদি তা সম্ভবও হতো (আল্লাহ যতখানি ইবাদতের যোগ্য তা করা), তবুও আল্লাহ তাকে সে সামর্থ্য দান না করলে তার পক্ষে এটি করা সম্ভব হতো না। আর, বান্দা যদি তার সম্পূর্ণ জীবন ইবাদত ও আল্লাহর আনুগত্যে কাটিয়ে দিত, এরপরও সে আল্লাহর প্রাপ্য হক আদায় করতে পারত না। এরপরও বান্দা যে সামান্য নেক আমল করে আল্লাহ তাতে সন্তুষ্ট থাকেন। এই ইবাদত বান্দার জন্য কঠিন হয় না, তাদেরকে খুব একটা সময় ব্যয়ও করতে হয় না। সহিহাইনে আবু হুরাইরা রা.…