অশ্লীলতা সর্ব পর্যায়েই ঘৃণ্য ও পরিহার্য। অশ্লীলতার অতি নিকট সম্পর্ক রয়েছে যৌন লালসা এবং পংকিলতার সাথে । মুখে অশ্লীল কথাবার্তা তখনই উচ্চারিত হয় বা হতে পারে যখন ব্যক্তির মন-মানসিকতা যৌন ভাবধারা কানায় কানায় ভর্তি হয়ে চারপাশ থেকে উপচে পড়তে শুরু করে। যাদের মনে আল্লাহ্র প্রতি ঈমান নেই, নৈতিক পবিত্রতার কোন চেতনা নেই, পরকালের কোন ভয় নেই, সামাজিক অতি সাধারণ লাজ-লজ্জাটুকুও নিঃশেষ হয়ে গেছে, তাদের মুখে লাগামহীনভাবে অশ্লীল কথাবার্তার খৈ ফোটে । এসব অশ্লীল কথাবার্তায় প্রত্যক্ষ ইঙ্গিত থাকে কোন-না-কোন নারীর যৌনতা সম্পর্কে। নারীর রূপ-সৌন্দর্যও অনেক সময় অশ্লীল কথাবার্তার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে পড়ে। নারীর নানা গোপন বিষয়াদি নিয়ে নির্লজ্জ আলাপ চলে পুরুষ সমাজের…
Author: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
বর্তমান পৃথিবীতে অবিশ্বাস্য গতিতে প্রযুক্তিক্ষেত্রের বিকাশ ঘটছে। আর সেই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ যেসব পালক যুক্ত হয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা, যেখানে মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তা শক্তিকে কম্পিউটার দ্বারা অনুকৃত করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন হয়ে উঠেছে একটি একাডেমিক শিক্ষার ক্ষেত্র যেখানে পড়ানো হয় কীভাবে বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করবে এমন কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার তৈরি করতে হয়। মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তা শক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তি নির্ভর করে যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে। কম্পিউটারকে মিমিকস কগনেটিক এককে আনা হয় যাতে করে কম্পিউটার মানুষের মত ভাবতে পারে। যেমন শিক্ষা গ্রহণ এবং সমস্যার সমাধান। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সক্ষমতা আমাদের কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই এটি নানা যুগান্তকারী উদ্ভাবন ঘটিয়ে চলছে, আমূল বদলে দিয়েছে অনেক ইন্ডাস্ট্রিকে। ব্রেইনের কার্যকলাপ ট্র্যাক করা থেকে শুরু করে কেবল বর্ণনা থেকেই ছবি তৈরী করে ফেলার বিস্ময়কর ক্ষমতা – সব কিছুতেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স রেখে চলছে তার কৃত্রিম মেধার ছাপ। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দুনিয়ার সাথে আমাদের সম্পর্ককে আরেকটু বদলে দিতে চলেছে। উঁহু, অনেকটাই বদলে দিবে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভিত্তিক আবিষ্কার বা ইনোভেশন যা-ই বলি না কেন, তা আশ্চর্য বললেও কম বলা…
অহংকার অন্তরের মারাত্মক রোগগুলোর অন্যতম, যা আরবিতে ‘তাকাব্বুর’ নামে পরিচিত। অহংকার উদ্ভুত হয় আত্মম্ভরিতা থেকে; যার ফলে ব্যক্তি নিজের যোগ্যতা ও গুণের ব্যাপারে অতিশয় প্রভাবিত হয়ে পড়ে। ইংরেজিতে ‘to arrogate’ শব্দের অর্থ, কোনো ব্যাপারে অন্যায় দাবি করা। অহংকারী ব্যক্তি তার যোগ্যতা বা গুণের ব্যাপারে অন্যায় দাবি করে, যা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহই তাকে দান করেছেন। সে অন্যকে উপহাস করার মাধ্যমে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করে। ইসলামে অহংকারকে তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের বলেছেন, অহংকার কেবল তাঁর বৈশিষ্ট্য। একটি হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন, গৌরব আমার নিম্ন পোশাক এবং অহংকার আমার আবরণ। যে এই দুটি ব্যাপারে আমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে, নিশ্চয়ই আমি…
কুরআনের আলোকে মানুষের হৃৎপিণ্ড কুরআন অন্তর বা হৃদয়ের (কালব বা ফুআদ) উল্লেখ কয়েক জায়গায় করেছে। আরবিতে ‘কালাবা’ ক্রিয়ার অর্থ ঘোরানো, ঘুরপাক খাওয়া, উলটো দিকে ঘোরা ইত্যাদি। আরবি ‘ফুআদ’ শব্দের অর্থ ‘উপকার লাভের স্থান’। কুরআন স্পষ্টভাবেই মানবহৃদয়কে বুদ্ধি ও চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে উল্লেখ করেছে। কুরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ﴿لَهُمْ قُلُوْبٌ لَّا یَفْقَهُوْنَ بِهَا﴾ তাদের রয়েছে অন্তর, তা দ্বারা তারা বোঝে না। [সুরা আরাফ : ১৭৯] সুরা হজে আল্লাহ বলেন, ﴿اَفَلَمۡ یَسِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَتَکُوۡنَ لَہُمۡ قُلُوۡبٌ یَّعۡقِلُوۡنَ بِہَاۤ اَوۡ اٰذَانٌ یَّسۡمَعُوۡنَ بِہَا ۚ فَاِنَّہَا لَا تَعۡمَی الۡاَبۡصَارُ وَ لٰکِنۡ تَعۡمَی الۡقُلُوۡبُ الَّتِیۡ فِی الصُّدُوۡرِ﴾ তারা কি জমিনে ভ্রমণ করেনি? তাহলে তাদের…
পুতিন যেমন জ্বালানিকে ব্যবহার করে বহির্বিশ্বে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ খাটায়, তেমন জ্বালানি সরবরাহের ওপর নিয়ন্ত্রণ অর্জনেও সে রাশিয়ার রাজনৈতিক শক্তিকে কাজে লাগায়। বিশ্বের তেল ও গ্যাসের মজুদে রাশিয়ার আধিপত্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে সে কাজ করছে। কেবল ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহ করেই সে ক্ষান্ত নয়; পুতিন রাশিয়াকে এশিয়ার মূল জ্বালানি সরবরাহকারী করার চেষ্টা করছে। ভারত, চীন ও জাপানে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের দিকে তার মূল মনোযোগ। পুতিন একটি নতুন পশ্চিম সাইবেরিয়ান তেল পাইপলাইনের জন্য বড় চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন যা চীনকে ৪০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের গ্যাস সরবরাহ করবে এবং এ চুক্তি চীনকে রাশিয়ার গ্যাসের প্রাথমিক গ্রাহক করে তুলবে। এভাবে রাশিয়ার বিস্তৃতি ক্রমাগত বাড়বে; এশিয়ার…
রাশিয়া জ্বালানি নিয়ে যে খেলা খেলছে তা রাশিয়ার অন্যান্য আক্রমণাত্মক দিক – সামরিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক – এর মতো। এগুলি যেমন গুরুতর ও শক্তিশালী তেমনি আপন মৃত্যুর বীজ এর ভেতরেই বপিত আছে। তাই এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী পশ্চিমা প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এখন পর্যন্ত আমরা পশ্চিমে এটারই অভাব দেখেছি। অথচ পুতিনের জ্বালানি খেলায় তাকে পরাজয় ঘটানোর রাস্তা স্পষ্ট। পাজলটি সমাধানের একটি রাস্তা হচ্ছে, ইউরোপকে একটি এনার্জি ইউনিয়ন তৈরী করতে হবে যার মাধ্যমে সদস্য দেশগুলোর অর্থনীতির মধ্যে সমন্বয় বাড়বে এবং রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমবে। এই ইউনিয়নের আইডিয়া বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। তবে একে বাস্তবায়িত করতে হলে সদস্য দেশগুলোর জাতীয় জ্বালানি নীতিতে কিছু পরিবর্তন…
রাশিয়া বিশ্বের প্রধান জ্বালানি শক্তিগুলোর মধ্যে একটি। তাদের প্রচুর তেল ও গ্যাস সম্পদ আছে যা উত্তোলন করে সারা বিশ্বের ফ্যাকটরি, গ্যাস ট্যাংক ও পাওয়ার স্টেশনে সরবরাহ করা হয়। বিশাল জ্বালানি সরবরাহ পুতিনের হাতে এক মারাত্মক ক্ষমতাশালী অস্ত্র তুলে দিয়েছে, যা ব্যবহার করে শত্রুকে শায়েস্তা করতে, বন্ধুদের পুরষ্কৃত করতে এবং বিশ্বের ব্যবসা ও রাজনীতিতে প্রভাব খাটাতে সে দ্বিধা করে না। নানাভাবে জ্বালানিশক্তি সংগ্রহের জন্য ইউরোপের বর্তমান ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা আছে। প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার স্পট মার্কেট দিনদিন বড় হচ্ছে। তবুও অন্তত বর্তমানে পুরো মহাদেশ রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। পুতিন মূহুর্তের নোটিশে পুরো উপমহাদেশের অর্থনীতিকে লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারে। জার্মান…
সুরা কাসাসের অধিকাংশ স্থানে ফেরাউনের সাথে মুসা আলাইহিস সালামের যে ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল, তার আলোচনা করা হয়েছে। হরফে মুকাত্তায়াত-ত-সীন-মীম দ্বারা সুরাটি শুরু হয়েছে। এরপরই কুরআনের সত্যতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এরপর মুসা আলাইহিস সালামের ঘটনা শুরু হয়েছে। সুরা কাসাসের মাধ্যমে জানা যায়, মিসরের ফেরাউন অত্যন্ত দুরাচার ছিল। অহংকার, জুলুম ও নিষ্ঠুরতার ক্ষেত্রে সে সীমালঙ্ঘন করেছিল। জনগণ যাতে তার ক্ষমতার জন্য কাল হয়ে না দাঁড়ায় এজন্য সে বর্তমানকালের সাম্রাজ্যবাদী নীতিতে মিসরবাসীকে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীতে বিভক্ত করে রেখেছিল। মিসরের সংখ্যালঘু বনি ইসরাইলকে সে জুলুম-নির্যাতনের বিশেষ টার্গেট বানিয়ে রেখেছিল। একসময় আল্লাহ তায়ালা দুর্বলদের দাঁড় করানোর এবং শক্তিশালী দলকে লাঞ্ছিত করার ইচ্ছা করেন। তখন মুসা…
ইয়াকুব আলাইহিস সালামের বারো ছেলে ছিল। হজরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম তাদের মধ্যে অস্বাভাবিক সুন্দর ছিলেন। তার চেহারা ও চরিত্র —দুটোই সুন্দর ছিল। তিনি ও তার ভাই বিনয়ামিনের সবার ছোট হওয়াও এই ভালোবাসার একটি কারণ ছিল। আর তাদের মায়েরও ততদিনে মৃত্যু হয়ে গিয়েছিল। ছোট বাচ্চার প্রতি ভালোবাসা মানুষের স্বভাবগত বিষয়। হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহুর মেয়েকে জিজ্ঞাসা করা হয় আপনার নিকট আপনার কোন সন্তান সবচেয়ে বেশি প্রিয়? তিনি উত্তরে বলেন, ছোট সন্তান, যতক্ষণ না সে বড় হয়। অনুপস্থিত সস্থান, যতক্ষণ না সে উপস্থিত হয়। অসুস্থ সন্তান, যতক্ষণ না সে সুস্থ হয়। এ ভালোবাসার কারণে ভাইয়েরা তার সাথে হিংসা করা শুরু করে। তারা তাদের…
ইসলামে নামাজ এক পবিত্র অনুশীলন যা একজন বিশ্বাসী এবং তাদের সৃষ্টিকর্তার মধ্যে সরাসরি সংযোগ হিসাবে কাজ করে। এটি বিশ্বাসের একটি স্তম্ভ, আধ্যাত্মিকতার উৎস এবং নির্দেশনা ও ক্ষমা চাওয়ার একটি মাধ্যম। তবুও, এর গভীর তাৎপর্য থাকা সত্ত্বেও, এমন কিছু ব্যক্তি আছেন যারা স্রষ্টার সাথে সঠিকভাবে কথা বলতে পারে না, সম্পর্ক তৈরী করতে পারে না। নফসের সাথে সংগ্রামের মুখোমুখি হয়। ইসলামী শিক্ষায়, এই ধরনের ব্যক্তিদের “মুনাফিক” বলা হয়। তার এই রোগের জন্য তার অন্তরে বাসা বাঁধা সংশয়বাদই দায়ী। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, وَ اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ؕ وَ اِنَّهَا لَکَبِیۡرَۃٌ اِلَّا عَلَی الۡخٰشِعِیۡنَ ﴿ۙ۴۵﴾ الَّذِیۡنَ یَظُنُّوۡنَ اَنَّهُمۡ مُّلٰقُوۡا رَبِّهِمۡ وَ اَنَّهُمۡ…
মুদ্রাস্ফীতি হলো বর্তমান অর্থব্যবস্থার সবচেয়ে বড় জালিয়াতিগুলোর মধ্যে একটি। মুদ্রাস্ফীতি ঘটে যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও পরিষেবার দাম বাড়তে থাকে। যখন এটা ঘটে তখন আমাদের পকেটে থাকা টাকার দাম কমে যায়, আমরা একই দামে আগের পরিমাণ জিনিস কিনতে পারি না। সামান্য মূল্যস্ফীতি স্বাভাবিক এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, কিন্তু অত্যধিক মুদ্রাস্ফীতি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এটি মানুষের জন্য খাদ্য এবং বাসস্থানের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর ব্যয়ভার বহন করা কঠিন করে তুলতে পারে। এটি ব্যবসার ভবিষ্যতকেও অনিশ্চিত করে তুলতে পারে। তাই ব্যবসায়ীরা আরও বেশি কর্মী নিয়োগ বা নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ করার সাহস করে উঠতে পারে না। কেউ কেউ বিশ্বাস করে যে মুদ্রাস্ফীতি শুধুমাত্র…
‘হৃৎপিণ্ড পাম্পের মতো কাজ করে’ এ উপমাটি প্রথম দেওয়া হয় ১৮ শতকে, যখন বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কৃত হয়। ইঞ্জিনের পিস্টনগুলোর পাম্পিংয়ের মতো নড়াচড়া শারীরতত্ত্ববিদদের এতটাই ভালো লেগে যায় যে, তারা হৃৎপিণ্ডকে পাম্প বলতে শুরু করেন। হৃৎপিণ্ডের পাম্পিং দক্ষতার দিকে তাকালে বিস্মিত হতে হয়। হৃৎপিণ্ড দিনে প্রায় 1 লাখ বার স্পন্দিত হয়। বছরে 4 কোটি বার এবং প্রায় ৬০ থেকে ৭০ বছর একটুও না থেমে স্পন্দিত হতে থাকে। এটি প্রতি মিনিটে দুই গ্যালন এবং প্রতি ঘণ্টায় ১০০ গ্যালনেরও বেশি রক্ত পাম্প করে। যে সংবহনতন্ত্র এই প্রাণের জন্য অপরিহার্য রক্ত পরিবহন করছে, তা ৬০ হাজার মাইলের চেয়েও অধিক দীর্ঘ, যা পৃথিবীর পরিধির দ্বিগুণেরও…