বিষাদ বৃষ্টি কবিতাটি এক বিষাদময় দৃশ্যকে তুলে ধরে, যেখানে প্রকৃতি ও মানুষের জীবনযাত্রার কঠিন বাস্তবতা পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। বিষাদের দমকা হাওয়ায় আকাশের কান্না বৃষ্টি হয়ে নামে, যা একজোড়া পাখির ছোট্ট নীড় ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আশ্রয়হীন পাখিরা অসহায়ের মতো তাকিয়ে দেখে তাদের স্বপ্নের বাসা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, শহরের বিলাসী মানুষরা এই বৃষ্টিতে আনন্দে মেতে ওঠে, কিন্তু রাস্তার ওপারে দাঁড়িয়ে থাকা এক পথশিশু হাতে কদম ফুল নিয়ে ভাবছে—আজকের দিনটা তার কেমন যাবে? একমুঠো ভাতের জন্য সে অপেক্ষা করছে, অথচ শহরের মানুষগুলোর হৃদয় কঠিন কনক্রিটের মতো। কবিতাটি সমাজের বৈষম্য, প্রকৃতির নীরব কান্না এবং জীবনের কঠিন বাস্তবতাকে অত্যন্ত গভীরভাবে তুলে ধরে। দেয়ালের…
Author: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
এই অংশে আয়রার সংসার জীবনের সুখ ও পারিবারিক বন্ধনের উষ্ণতা ফুটে উঠেছে। ছোটফুপি আয়রাকে তার সৌভাগ্যের জন্য প্রশংসা করেন, কারণ সে আয়ানের মতো একজন যত্নশীল ও ভালো স্বামী পেয়েছে। আয়রা লজ্জায় মাথা নিচু করে, তবে মনে মনে আয়ানকে সত্যিই আল্লাহ্র আশীর্বাদ বলে মনে করে। আয়রার বাবা প্রতিবছর পরিবারের সবাইকে গ্রামে আমন্ত্রণ জানান, যেখানে সবাই একত্রিত হয়। এবারের আয়োজনের সব রান্নার দায়িত্ব নিয়েছে আয়ান, এবং তাকে সাহায্য করছে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। অন্যদিকে, মা, চাচি ও ফুপিরা ড্রয়িংরুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে, যার মূল আলোচনার বিষয় আয়রা ও তার স্বামী। এতে আয়রা বেশ লজ্জিত হলেও, পরিবারের ভালোবাসা ও আয়ানের প্রতি সবার প্রশংসায় সে…
“জীবন প্রদীপ” কবিতাটি এক গভীর আবেগ ও যন্ত্রণার চিত্র তুলে ধরে, যেখানে প্রেম, বেদনা ও একতরফা অনুভূতির এক কঠিন বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে। কবি কবিতা লিখতে চাইলেও পারেন না, কারণ তার সমস্ত লেখা, সমস্ত স্বপ্নই প্রিয়জনকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সেই প্রিয়জন কখনো তার অনুভূতিগুলোর মূল্য দেয়নি, বুঝতে চায়নি। অভিযোগ, রাগ, এবং মানসিক যন্ত্রণার মাঝে কবি নিজেকে ধীরে ধীরে নিঃশেষিত হতে দেখেন। ভালো থাকার ভান করেও কবি ভিতরে ভিতরে কষ্টের আগুনে দগ্ধ হন। সুখের উষ্ণতা পাওয়ার আশায় বেদনার নীল চাদর জড়িয়ে নিয়েছেন, কিন্তু সে সুখ অধরাই থেকে যায়। শেষ পর্যন্ত, জীবনের পথ হয়ে ওঠে অনিশ্চিত, সূর্যাস্ত ঘনিয়ে আসে, আর কবির “জীবন…
এই সংলাপের মধ্যে এক গভীর, দার্শনিক অনুভূতি রয়েছে। এটি এমন একজন ব্যক্তির অন্তর্দ্বন্দ্ব ও একাকীত্বের প্রতিচ্ছবি, যে রাতের অন্ধকারকে আশ্রয় হিসেবে গ্রহণ করেছে। অন্যজন তার কৌতূহল মেটাতে চায়, জানতে চায়—কেন অন্ধকারই প্রিয় হয়ে উঠেছে? প্রথম ব্যক্তি রাতের নির্জনতা ও নিস্তব্ধতাকে ভালোবাসে, কারণ সেটি তাকে একধরনের মানসিক শান্তি দেয়। কিন্তু সে মনে করে, অন্যজন এটি উপলব্ধি করতে পারবে না, কারণ সে দিনের আলোর মানুষ—যে ঘুমিয়ে থাকে, আর অন্ধকারের গভীরতা বোঝে না। কিন্তু দ্বিতীয় ব্যক্তি হাল ছাড়তে রাজি নয়। সে এই অনুভূতিকে বুঝতে চায়, সঙ্গ দিতে চায়, রাতের রহস্য ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে চায়। এই সংলাপে সম্পর্কের গভীরতা, অনুভূতির তীব্রতা ও একাকীত্বের…
এই কবিতাটি একটি অন্তর্দ্বন্দ্বের মুহূর্তের চিত্র তুলে ধরেছে, যেখানে মূল চরিত্র নিরবতায় ডুবে যায়। নিঝুমের কথা শুনে তার মনে একটা অসম্পূর্ণতার অনুভূতি তৈরি হয়, এবং সে বুঝতে পারে কিছু মূল্যবান কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। নিঝুমের কথায় এক ধরনের উপলব্ধি ফুটে ওঠে, যেখানে নতুন দিনের সূচনা এবং জীবনের পথের মাঝে সৃষ্টির গভীরতা এবং তার উল্টে চলার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। গল্পটি সঙ্গীতের মতো সময়ের প্রবাহের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মুহূর্তে আটকে থাকার অনুভূতি ও পরিবর্তনের আশঙ্কা সৃষ্টি করে। ওর কথাগুলো শুনে আমি থ’ হয়ে গেলাম! কী বলবো? কিছু বলার মতো ভাষাও খুঁজে পাচ্ছি না এই মুহূর্তে। কেমন যেন খারাপও লাগছে। মনে হচ্ছে মূল্যবান কিছু…
ইন্দ্রজালের কল্লোল” কবিতাটি এক গভীর অনুভূতির জগতকে তুলে ধরে, যেখানে প্রকৃতি, নীরবতা ও অতীত স্মৃতি একসঙ্গে মিশে গেছে। কবি অন্ধকার নদীর তীরে বসে স্রোতের কথোপকথন শুনতে চায়, বাতাসের এলোমেলো শব্দে হারিয়ে যেতে চায়। নক্ষত্রখচিত আকাশের নিচে, মেঘের দীর্ঘশ্বাস পাশ কাটিয়ে একফালি চাঁদ উঁকি দেয়, আর তার স্নিগ্ধ আলোয় সৃষ্টি হয় এক রহস্যময় নীরবতা যা শুধুই এক ইন্দ্রজালের কল্লোল। কবিতার শেষাংশে, অতীতের কষ্টময় স্মৃতি জেগে ওঠে। বিষাদের অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া একদিনের কথা মনে পড়ে, যেখানে হতাশার বিরুদ্ধে আত্মার এক নিঃশব্দ আন্দোলন চলছিল। বিষাদের সূর্য অস্ত যেতে পারছিল না, কারণ অতৃপ্ত আত্মারা পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে ছিল। এই কবিতাটি স্মৃতি, নৈঃশব্দ্য ও…
দরজা খোলার সাথে সাথে আমার চোখ পড়লো নিঝুমের উপর। ওর দিকে তাকিয়ে আমার নিজেরই খারাপ লাগলো! মুখটা শুকনো লাগছে। চোখের নীচটা ফুলে গেছে, চোখে লালিমা ভাব একদম স্পষ্ট। বোঝা যাচ্ছে, মেয়েটা অনেকক্ষণ ধরেই কেঁদেছে। তাড়াহুড়ো করে চোখের পানি মুছতে গিয়ে পুরোটা মুছতে পারে নি। বাম চোখের কোণে একটু জল এখনও চিকচিক করছে। আর চোখের পাতা এখনও ভেজা। ওর ঐ অশ্রুসিক্ত চোখ যেন আমাকে উদ্দেশ্য করেই বলছে, “তুই একটা স্বার্থপর! তুই একটা প্রতারক! তুই মেয়েটাকে ঠকাচ্ছিস!” নিঝুম মিথ্যে হাসি হেসে আমাকে সালাম দিল। আমি বেশিক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলাম না। সালামের উত্তর দিয়ে চোখ নামিয়ে নিলাম। খুব দ্রুত হেঁটে…
আমি আর ফিরবো না,এই যে আমাকে ঘর থেকে বের করে চৌকির উপর শোয়ানো হলো,এই শেষ দুনিয়ার আরামের জীবন।আমি আর ফিরবো না।তুমি কেঁদেকেটে অস্থির হয়ে যাবে,আমি আর তোমার চোখের জলমুছে দিতে পারবো না।আমার স্মৃতিরা তোমাকে ঘিরে ফেলবে, আমার স্মৃতির কারাগারেবন্দি থেকে তুমি ছটফট করবে,এই কারাগার আর কখনও খুলবে না।নোনতা জলে ভেজা চোখবোবা আর্তনাদে ক্ষয়ে গেলেওপ্রতিবাদের ঝড় তুলবে হৃদয়।ছিন্নভিন্ন হৃদ-গহীনেআনাড়ি হাতে কষ্ট আঁকবেনিকষ কালো মেঘ।প্রিয় ডায়েরীর হারানোকোনো একটি পাতার মতোআমিও হারিয়ে যাব।আর কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি! writer: Mahazabin Sharmin Priya
-বোন, তুমি আমার স্বামীকে বিয়ে করো। -হেই নূহা! আর ইউ ম্যাড? হাউ ইজ ইট পসিবল? আমার হাজবেন্ড আছে। সে এখন বিদেশে। আর সবচেয়ে ইমপর্টেন্ট কথা হচ্ছে, হি ইজ এ মিলিওনেয়ার। বাট রাফানের তো এত টাকা নেই। ও আমার সাথে শপিং এ বের হলে আমাকে মাত্র ৩টা ড্রেসই কিনে দিতে পারে না, হা হা হা! বাট রাফান ইজ এ ভেরি স্মার্ট এন্ড চার্মিং বয়। তাকে ভালবাসা যায়, বাট বিয়ে! ঊফ! নো ওয়ে। -তাহলে, তোমরা কি এভাবেই বেপরোয়া হয়ে ঘুরবে শুধু! আই মীন জাস্ট টাইম পাসিং? -ইয়াহ্, বেইবি! এইতো বুঝেছো। আর এটাতে কি আর প্রবলেম? কাম অন ডিয়ার, ইট’স এ নরমাল…
কবিতা:” অন্য তুমি” তোমার ওষ্ঠাধরের হাসিতেবিষাদের মেঘ কেটেরাতের নীলিমায় হাতছানি দেয়উদ্ভাসিত পূর্ণিমার একখানি বিশাল চাঁদ। সেই চাঁদ বেয়ে নেমে আসাস্নিগ্ধ জ্যোৎস্নার ফোয়ারায়ভিজে উঠে তোমার মায়াবী বদন।ঐ বদনে কোনো ক্লান্তি নেই,ললাটে নেই কোনো দুশ্চিন্তার ছাপ!হঠাৎ দেখে মনে হয় যেনসুখের নদীতে ভেসে চলাবিলাসী নৌকোর এক পরিতৃপ্ত পাল। কিন্তু! এ-কী?তোমার চোখের নীচে সাজিয়ে রাখাঅনিদ্রার শোকচিহ্ন আমার ভাবনারজানালায় উঁকি দিয়ে হেসে যায়।বিদ্রুপের হাসি হেসেআমার চেতনাকে জেগে তোলে।আমি লক্ষ্য করি,তোমার নয়নদ্বয়ের অভয়ারণ্যেমুখ থুবড়ে পড়ে আছেব্যাথার অনলে পুড়ে যাওয়াকিছু কাঠগোলাপ আর শিউলীফুল। ভাল থাকার প্রামাণ্য ছায়াছবিতেতুমি ঠোঁটের হাসি, মুখের অবয়বেতোমার ভিতরের আসল তুমিটাকেঢাকতে এত ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলে যে,দু’চোখ ঢাকা কষ্টের করাল মেঘটাআর সরাতে পারোনি।আমি তা দেখে…
এই অংশে আয়রা ও আয়ানের মধ্যকার এক আন্তরিক মুহূর্ত ফুটে উঠেছে। আয়রা অসুস্থ থাকার পর জেগে ওঠে এবং দেখে আয়ান তার পাশেই বসে আছে, হাত না ধুয়ে। আয়ানের উদ্বিগ্নতা ও যত্ন আয়রাকে আশ্বস্ত করে। আয়ান ভয় পেয়েছিল, কিন্তু আয়রার সুস্থতা দেখে সে স্বস্তি অনুভব করে। এরপর আয়ান পার্টির পরিকল্পনা করে, কিন্তু আয়রা তাকে আগে খেয়ে নিতে বলে, কারণ সে নিজে কিছুই খায়নি। আয়ান চায় একসঙ্গে খেতে, তবে আয়রা একা বিশ্রাম নিতে চায়। শেষ পর্যন্ত আয়ান বুঝতে পারে যে, ওখানে ফিরে গিয়ে খাওয়াই ভালো হবে, এবং সে তাই করে। এই অংশটি দুজনের সম্পর্কের যত্ন, সংবেদনশীলতা ও বোঝাপড়ার প্রতিচিত্র তুলে ধরে। বিছানা…
এই অংশে আয়রা পারিবারিক এক খাবারের আয়োজনে বসে, কিন্তু হঠাৎ তার শরীর খারাপ লাগতে শুরু করে। সে বমি বমি অনুভব করে, তবে সেখান থেকে উঠে যাওয়ার সুযোগ পায় না। আয়ান, যে সবসময় আয়রাকে বুঝতে পারে, এবারও তার অস্বস্তি বুঝে ফেলে এবং তৎক্ষণাৎ তাকে সবার মাঝ থেকে বের করে নিয়ে যায়। ভেতরে যাওয়ার পর আয়রা ওয়াশরুমে ছুটে গিয়ে বমি করে ফেলে এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। সে পড়ে যাওয়ার আগেই আয়ান তাকে ধরে ফেলে এবং যত্ন নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়। আয়ান মুখ মুছিয়ে তাকে পানি খাওয়ায়। কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ রেখে আয়রা খানিকটা ভালো অনুভব করতে থাকে। আয়ানের যত্নশীল আচরণ ও দুজনের বোঝাপড়া…