রাবী ইবনে খাইসাম রহ. বলেন, সাহাবায়ে কেরামরা আজ আমাদের অবস্থা দেখলে বলতেন, আরে এরা তো বিচার দিবসের প্রতি ঈমানই রাখে না। (ফায়জুল কাদীর ৩/৪৭৮) এটা তো রাবী রহ. এর যুগের অবস্থা অর্থাৎ তাবেঈদের যুগ বা খায়রে কুরুনের যুগের কথা কিন্তু সাহাবারা যদি আজ আমাদের অবস্থা দেখতেন, তাহলে কী বলতেন? “যদি তোমরা সাহাবীদের দেখতে, তাদের তোমরা পাগল বলতে; আর যদি সাহাবায়ে কেরাম তোমাদের দেখতো, তাহলে অমুসলিম বলতো”। ————- হযরত হাসান আল বসরী (রহঃ) গ্রন্থসূত্রঃ হিলইয়াতুল আউলিয়া(২/১৩২৪) কথাটা আমাদের আমলে বলা হয়নি, বরং সাহাবিদের (রাঃ) ঠিক পরে তাবেঈনগণের আমলে তাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে। ভাবা যায়? আমাদের আমলের ফিতনাময় জীবনযাপন দেখলে হাসান বসরী…
Author: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
১ বড়ো দুঃসময় পার করছি আমরা। আমি, আপনি এবং সে – আমরা সবাই। আমরা জুমুআর সালাত ছাড়া মাসজিদে যাই না। রমাদানের ৩০টি সাওমের সবগুলো রাখা হয়ে ওঠে না আমাদের। আমরা যাকাতের বিষয়ে উদাসীন। যাকাত আদায় করলেও হিসেব করে সঠিক পরিমাণ যাকাত দিই না। পৃথিবীর অর্ধেক দেশ ঘুরে ফেললেও মক্কাতে গিয়ে হাজ্জ করার মতো টাকা-পয়সা ম্যানেজ করতে পারি না আমরা। আমরা হিজাব করতে অস্বস্তি বোধ করি। কোনোভাবে শরীরের হিজাব পালন করলেও মনের হিজাবের কথা বেমালুম ভুলে আছি। সুদ-কে ‘ইন্টারেস্ট’ হিসেবে বিবেচনা করতে আনন্দ হয় আমাদের। প্রতিনিয়ত আমরা খুঁজে বেড়াই ‘সুদ এবং ইন্টারেস্ট-এর পার্থক্য’ এবং ইন্টারেস্ট গ্রহণের যৌক্তিকতা। ইসলাম-শিক্ষা আমাদের কাছে চতুর্থ…
পারাপারের সাকোঁ বা সাম্পান ভালোবাসার স্তরে পৌঁছার আলামত কী? কীভাবে পৌঁছাবেন সেই কাঙ্ক্ষিত স্থানে? শুনুন হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা কী বলে, ‘আমি তার কান, তার চোখ, তার পা, তার হাত হয়ে যাই।’ আপনার কান সব সময় আল্লাহর আদেশ মেনে চলবে। – কখনো শয়তানের আদেশ মেনে চলবে না, – কখনো প্রবৃত্তির অনুসরণ করবে না। কান যা শ্রবণ করে, তা অন্তরে গেঁথে যায়। আপনি যদি দৃঢ় প্রত্যয়ী এবং আল্লাহমুখী হন – তাহলে আল্লাহর অপছন্দনীয় কথা শোনামাত্রই তা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন। ছুড়ে ফেলবেন আস্তাকুঁড়ে কোনো বিকৃত চিন্তা কিংবা ভ্রান্ত মতবাদ শ্রবণে আপনার কান হবে বধির, অন্তর হবে আবদ্ধ।…
যখনি কোনো টাফ সিচুয়েশনে পড়বেন তখন এই লিখাটাই আপনাকে প্রশান্তি দিবে। রব আপনাকে কী বলেন শুনুন- আমার রবের সাথে আমার কথোপকথনে আমার মনে হয় আমার রব আমাকে যে কথাগুলো বলেনঃ “হে আমার বান্দা, আমি জানি কেন তোমার অন্তর এত বিক্ষিপ্ত। আমি জানি কিসের জন্য তোমার এত হাহাকার। দুঃখ পেও না, আমি তোমার সাথেই আছি। আমি তখনো তোমার সাথে ছিলাম যখন এই দুনিয়াতে তোমার কোনো অস্তিত্ব ছিল না। আমি তখনো তোমার সাথে ছিলাম, যখন মায়ের গর্ভে এক অচেনা পরিবেশে তুমি ছিলে। আমি তখনো তোমার সাথে ছিলাম যখন তুমি আমাকে চিনতে না। আমি তখনো তোমার সাথে ছিলাম যখন তুমি আমার অবাধ্য…
Writing-Therapy🌻: নামাজ শেষ করে মসজিদের মুসল্লায় মধ্যবয়স্ক জর্ডানিয়ান এক ভদ্রলোক জবুথবু হয়ে বসে আছেন। উনাকে দেখেই মনে হচ্ছে কিছু একটা ঠিক নেই। আমার হাজব্যান্ড জিয়া, ভদ্রলোকের দিকে এগিয়ে গেলেন। সালাম দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো হ্যান্ডশেক করার জন্য। তিনি কেমন একটা শূন্য দৃষ্টিতে জিয়ার দিকে তাকালেন, মনে হচ্ছিল হ্যান্ডশেক করতে হাত উঠানোর মতো কঠিন কাজ দুনিয়াতে আর একটাও নেই। এই জর্ডানিয়ান ভদ্রলোকের নাম ধরলাম মুয়ায (ছদ্মনাম)। : “কি ভাই ? সব ঠিকঠাক আছে তো? : “নারে ভাই, কিছুই ঠিক নেই …” : “কি হয়েছে আপনার বলেন ?” : বলবো? সময় আছে তোমার হাতে? : আমার হাতে সময় আছে, আপনি সব খুলে…
প্রসঙ্গ: হাদীস প্রচারে সচেতনতা আগে প্রায় সময়ই বোনেরা প্রশ্ন করতেন বিভিন্ন হাদীস দেখিয়ে, “এটা কি সহীহ?” প্রতিবারই বলতাম, আমার হাদিসের রেফারেন্স লাগবে সহীহ কিনা খোঁজার জন্য। আল্লাহর ইচ্ছায় প্রযুক্তির অগ্রগতির মাধ্যমে আলোচ্য বিষয় দিয়ে খুঁজলেও মূল হাদীস পাওয়া যায় বেশিরভাগ সময়। কিন্তু যেগুলো আসলে হাদীসই না, মানুষ “হাদীসে আছে” বলে ভাইরাল করে দিচ্ছে, সেসব তো খুঁজে পাওয়া সম্ভব না! তাই রেফারেন্স চাওয়া। সাধারণত সেই হাদীস নিয়েই প্রশ্ন আসতো যেগুলো হাদীস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই কিছু খুঁজে পাওয়াও যেত না। এসব অনেক আগের কথা- এখন বোনেরা জানেন যে রেফারেন্স না থাকলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা মুশকিল। এবার দুইটা পোস্টে চোখ…
Writing-Therapy🌻: এয়ারপোর্টে সবেমাত্র লাগেজ চেক-ইন করেছি। সামনে লম্বা সফর! এমন সময় মনে হলো, প্লেনে ওঠার আগে একটু ফ্রেশ অজু করে নেই। এটা বছর দুয়েক আগের ঘটনা। অজু করতে এয়ারপোর্ট ওয়াশরুমে গেলেই বরাবরের মতো কিছু খাদেমা আপাদেরকে সেখানে দেখা যায়। ঢুকতেই আপা খুব সুন্দর করে আমাকে সালাম দিল, কেমন আছি, কোথায় যাচ্ছি সব জিজ্ঞেস করল মিষ্টি করে। ওযু শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমাকে টিস্যু এগিয়ে দিল মুখ মোছার জন্য। বুঝতে পারছি যে, আপু বকশিশের জন্য আশা করে আছেন। খেটে খাওয়া মানুষদেরকে কিছু দিতে পারলে নিজেরও ভালো লাগে। কিন্তু আমার সাথে পার্স নিয়ে আসিনি। আর বেশি সময়ও আসলে হাতে নেই, ইমিগ্রেশন লাইনে…
আপনি কি জীবনের সম্পর্ক গুলো নিয়ে খুব পেরেশান? কোন কারনে বনিবনা হচ্ছে না অথবা পারিবারিক কলহগুলো কিছুতেই মিটছে না? আমরা ভুলে যাই অন্যের অন্তরের ওপর আমাদের সামান্য মানুষদের কোন ক্ষমতা নেই। যিনি অন্তরের মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামিন, তিনি চাইলেই অপর ব্যক্তির অন্তর থেকে আমার জন্য সব ঘৃণা দূর করে দিতে পারেন এবং আমার শত্রুর অন্তরেও আমার জন্য ভালোবাসা এবং আন্তরিকতা সৃষ্টি করে দিতে পারেন। সম্পর্ক সংক্রান্ত পেরেশানিগুলো আমাদেরকে দুনিয়াতে নানাভাবে মানসিক কষ্ট দেয়। তাই আপনাদেরকে অসম্ভব সুন্দর একটা দোয়া শিখিয়ে দিচ্ছি যে দুয়াটি সম্পর্ককে মজবুত করতে, এবং এই ব্যাপারে অন্তরকে পরিষ্কার রাখতে আমাদেরকে অনেক সাহায্য করবে ইন শা আল্লাহ সম্পর্ককে…
নতুন পাঠ্যপুস্তকে যেসব বিষাক্ত চিন্তা ও বিকৃত ইতিহাস ঢুকানো হয়েছে, এর প্রধান আঘাতটা পড়বে আমাদের সন্তানদের আত্মপরিচয়ের উপর। কতভাবে তাদের আত্মপরিচয়ে আঘাত হানা হয়েছে, তার কিছু দিক পয়েন্ট আকারে বলছিঃ ১) বিবর্তনবাদের মাধ্যমে আল্লাহর সরাসরি সৃষ্টি হিসেবে যে আমরা মানুষ- এই পরিচয়কে আঘাত করা হয়েছে। ২) এই অঞ্চলের ইতিহাস থেকে ইসলামী শাসন ও কালচারকে ক্রিমিনালাইজ করে আমাদের সোনালী ইতিহাস থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। অথচ কোন জাতির আত্মপরিচয় গঠনের অন্যতন একটি উপাদানই হল ইতিহাস। ৩) পৌত্তলিক নেতা, নিদর্শন ও সংস্কৃতিকে মহান ও প্রধান হিসেবে চিত্রিত করে মুসলিম আত্মপরিচয়ের স্বকীয়তাকে আঘাত করা হয়েছে। মুসলিমদের ভিতর পৌত্তলিক চিন্তা ও সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগ…
এবারের পাঠ্যপুস্তকে ইসলামী যেকোন নিদর্শনকেই মুছে ফেলা হয়েছে। এমনকি আলিয়া মাদ্রাসার পাঠ্যপুস্তক থেকে পর্যন্ত টুপি, পায়জামা, হিজাব ও সালামকে বিদায় জানানো হয়েছে। ইসলাম বিদ্বেষ, পৌত্তলিকতা আর পশ্চিমা সংস্কৃতির সুস্পষ্ট উপস্থিতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এসব বইয়ে। শেষবার যখন নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করা হয়েছিল, সেখানে ইসলামের বিভিন্ন নিদর্শন ও সংলাপ যুক্ত করা হয়েছিল। এই সংস্করণ বিতরণের পর থেকেই কলকাতা কেন্দ্রিক বাম ও ব্রাক্ষ্মণ্যবাদী কথিত বুদ্ধিজীবিদের আস্ফালন শুরু হয়ে যায়। তারা এর তীব্র সমালোচনা করে এবং পরিবর্তনের জোর দাবি তুলতে থাকে। তাদের সেই আষ্ফালনের প্রভাবেই নতুন পাঠ্যসূচিতে ভয়াবহ পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। কিছুটা অনুমেয় ছিল যে, তারা পরিবর্তনের দাবি তুলে কিসব পাঠ সংযোজন করতে…
স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে কী শেখানো হচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তর খুজতে তৃতীয় ও দশম শ্রেণী পর্যন্ত “বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়” এবং “ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান” বিষয়কগুলো এক নজর দেখলাম। সংক্ষেপে কয়েকটা পয়েন্ট বলি। . ১। ইসলামবিদ্বেষ: পাঠ্যপুস্তকে এমন কিছু বক্তব্য আছে যেগুলো স্পষ্টভাবে ইসলামবিদ্বেষী। সপ্তম শ্রেনীর “ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান” (অনুশীলন) বইয়ের ১২১ পৃষ্ঠায় রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের লেখা থেকে এমন কিছু অংশ উল্লেখ করা হয়েছে যা ইসলামের প্রতি; বিশেষ করে পর্দার বিধানের প্রতি বিদ্বেষ এবং তাচ্ছিল্য প্রকাশ করে। . পর্দা করা মুসলিম নারীদের উপস্থাপন করা হয়েছে নির্বোধ, মূর্খ, ভয়ঙ্কর এবং সাব-হিউম্যান টাইপের কিছু একটা হিসেবে। যেসব কথা এখানে তুলে ধরা হয়েছে পশ্চিমা বিশ্বেও…
প্রসঙ্গ: কুরআন জার্নাল আমি নিজে সেই ২০১২ থেকে, অর্থাৎ যখন থেকে আমার হিফজ যাত্রা শুরু তখন থেকে, চেষ্টা করি বিভিন্ন উপায়ে নিজেকে ট্র্যাকে রাখতে। কখনো নিজের জন্য হিফজ/রিভিশন ট্র্যাকার বানিয়ে, কখনো নিজের উপলব্ধি/শিক্ষিকার বলা কোনো কথা নোট করে রেখে। কখনো নিজের জন্য বুকমার্ক বানিয়ে। ইদানিং কুরআন জার্নাল কথাটা দেখি। অনেকে অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে কোনো একটি আয়াতের ব্যাখ্যা থেকে যা শিখলেন ডায়েরীতে লিখে রাখেন। সেই সাথে ছবি এঁকে, আয়াত লিখে, প্রাসঙ্গিক হাদীস ইত্যাদি লেখেন। আমার দেখতে সুন্দর লাগে। মেন্টাল থেরাপি হিসেবে ভালো। অবসর সময়ে যখন সিরিয়াস কিছু করতে ভালো লাগে না তখন করার মত একটি কাজ। বাচ্চাদের কুরআন পড়তে…