এবারের পাঠ্যপুস্তকে ইসলামী যেকোন নিদর্শনকেই মুছে ফেলা হয়েছে

এবারের পাঠ্যপুস্তকে ইসলামী যেকোন নিদর্শনকেই মুছে ফেলা হয়েছে। এমনকি আলিয়া মাদ্রাসার পাঠ্যপুস্তক থেকে পর্যন্ত টুপি, পায়জামা, হিজাব ও সালামকে বিদায় জানানো হয়েছে। ইসলাম বিদ্বেষ, পৌত্তলিকতা আর পশ্চিমা সংস্কৃতির সুস্পষ্ট উপস্থিতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এসব বইয়ে।

শেষবার যখন নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করা হয়েছিল, সেখানে ইসলামের বিভিন্ন নিদর্শন ও সংলাপ যুক্ত করা হয়েছিল। এই সংস্করণ বিতরণের পর থেকেই কলকাতা কেন্দ্রিক বাম ও ব্রাক্ষ্মণ্যবাদী কথিত বুদ্ধিজীবিদের আস্ফালন শুরু হয়ে যায়। তারা এর তীব্র সমালোচনা করে এবং পরিবর্তনের জোর দাবি তুলতে থাকে।

তাদের সেই আষ্ফালনের প্রভাবেই নতুন পাঠ্যসূচিতে ভয়াবহ পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। কিছুটা অনুমেয় ছিল যে, তারা পরিবর্তনের দাবি তুলে কিসব পাঠ সংযোজন করতে যাচ্ছে। কিন্তু সেই অনুমানকে ডিঙ্গিয়ে তারা আরো বেশি ভয়াবহ পাঠ অন্তর্ভুক্ত করেছে।

এলজিবিটি ও ট্রান্সজেন্ডার মুভমেন্ট বাংলাদেশের সমাজে একটি ট্যাবু ও ঘৃণিত বিষয়। ইসলাম ধর্মেও এগুলো অত্যন্ত নিকৃষ্ট কাজ ও অভিশপ্ত হারাম বিষয়। পাঠ্যপুস্তকে সমকামিতা ও লিঙ্গ পরিবর্তনের ব্যাপারটিকে স্বাভাবিক হিসেবে কিশোরদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।

আপনি চিন্তা করুন। আমাদের লক্ষ্য লক্ষ্য সন্তান এই পাঠ্যপুস্তকের অধীনে শিক্ষাগ্রহণ করছে। কিশোরমন হল গড়নের মন। এই সময়ে তাদের মনস্তত্ব ও মানসিকতা গড়ে উঠে, বিকশিত হয়। ঠিক এই সময়টাতে যদি, তাদেরকে পড়ানো হয় পর্দা খারাপ জিনিস, মুসলিমদের শাসনব্যবস্থা বর্বর, সমতার ভিত্তিতে যৌন সম্পর্কে সমস্যা নেই, সমকামিতা স্বাভাবিক যৌনতা, লিঙ্গ পরিবর্তন করাও স্বাভাবিক প্রক্রিয়া- এসব পাঠ যদি তাদের কিশোর মনে পুশ করা হতে থাকে, তাহলে আমাদের আগামী প্রজন্মটা কেমন হতে যাচ্ছে?

আপনি ভাবছেন, তারা কেবল ধর্মীয় বোধ, বিশ্বাস ও জীবনাচার থেকে ছিটকে পড়বে। হ্যাঁ এটা অবশ্যই এই শিক্ষাক্রমের সবচেয়ে বড় সমস্যা। কিন্তু সমস্যা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, এটা আমাদের প্রজন্মের ভিতর যেই যৌন উচ্ছৃঙ্খলতা আর যৌন বিকৃতির প্রসার ঘটাবে, সেটা পুরো সামাজিক কাঠামোকে আঘাত করবে।

যৌনতা কেন্দ্রিক উচ্ছৃঙ্খলতা আর বিকৃতির নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর, আমাদের সামাজিক নিরাপত্তার উপর, আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ও দাম্পত্য সম্পর্কের উপর।

তাই দ্বীন ও মানবসভ্যতা বিধ্বংসী পাঠ্যক্রম নিয়ে আলোচনা তোলাটা দলমত নির্বিশেষে সকলের জন্যই জরুরী। আপনি যেই দলেরই হোন, এই সংকটের আঘাত থেকে আপনার ভবিষ্যত প্রজন্ম নিরাপদ নয়। মানসিকভাবে অস্থির, যৌনচিন্তায় উচ্ছৃঙ্খল ও বিকৃত, পুরুষ কিংবা নারী হিসেবে অপূর্ণাঙ্গ বিকাশ, দায়িত্বভারে অক্ষম একটি প্রজন্মের জন্য আপনি অপেক্ষা করতে থাকুন।

– মুহতারাম ইফতেখার সিফাত হাফিজাহুল্লাহ

Leave a Comment