“তাও তোমাক কিছু খায়া যাওয়াই নাগবে, মায়ো। মুই তোমাক খালি মুখে যাবার দিবার নেও।” বলেই খালা উঠতে যাচ্ছিল।আমি তাকে আশ্বস্ত করে বললাম, “আচ্ছা পরে না হয় খাবো। কিন্তু আপনি বাইরে থেকে কিছু আনাবেন না, খালা। তাহলে কিন্তু আমি কিছুই খাবো না। আর আমি তো গল্প করতে এসেছি। এখন খেতে থাকলে গল্প করার সময় ই তো পাব না।” খালা আমার কথা শুনে গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করলো। আমার খুব ভাল লাগছিল। তখনই আয়েশা এক গ্লাস ভর্তি ডাবের পানি নিয়ে এলো। আমি ওদের একটু খেতে বললাম। কিন্তু কেউই খেল না। আমি তৃপ্তিসহকারে খেয়ে নিলাম। তারপর বললাম, “আয়েশা, তুমি তো ঠিকই বলেছো। আসলেই…
Author: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
এই প্রথম নিজেকে যেন খুব অসহায় মনে হলো। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম, বাইরে বের হবার জন্য সুতির কয়েকসেট বড় জামা বানিয়ে নিব। যাতে পরবর্তীতে আর এরম সমস্যায় পড়তে না হয়। .এসব ভাবতে ভাবতেই খালার বাড়িতে এসে পৌঁছালাম। বাড়িতে ঢুকতেই গেটের কাছে দু’টি নারকেল গাছ। বাড়ির গেটসহ পুরো বাড়িটি টিনে ঘেরা। দু’টি শোবার ঘর, একটি গোয়ালঘর, একটি বড় ছাউনির নীচে মাটির চুলা আর তারই পাশে একটি রিক্সা রাখা। বাড়িতে ঢুকেই খালা তার মেয়েকে ডাকলো। মেয়েটির নাম আয়েশা। খালার ডাক শুনে আয়েশা নামের মেয়েটির দরজা খুলে বেরিয়ে এলো। পরনে কালো রঙের লম্বা জামা আর মাথায় বিশাল কালো ওড়না। উচ্চতা ৫ ফুট ২ইঞ্চি…
দুপুরে সবাই একসাথে খেয়ে নিলাম। খাওয়া শেষে আম্মুকে জানালাম আমি আলেয়া খালার বাসায় যেতে চাই। আম্মু বিকেলে যেতে বললো। কিন্তু আমি এখনই যাব বলে বায়না ধরলাম। আম্মু আর কিছু বললো না। শুধু বললো সাবধানে যেন যাই আর খালার সাথে সন্ধ্যার আগেই যেন ফিরে আসি। আমি আম্মুকে জড়িয়ে ধরে বললাম,” তাই হবে মা।” খালা কিচেনে রেডি হচ্ছিলো বাসায় যাবার জন্য। আমি গিয়ে খালাকে যখন বললাম তার বাসায় যেতে চাই। বিস্ময়ে খালার মুখ হা হয়ে গেল। আমি বললাম, “এত অবাক হবেন না, খালা। আমি আপনার মেয়েকে দেখতে এবং তার সাথে কথা বলতে যাব। আপনি আমাকে নিয়ে যাবেন না, খালা?” খালা খুশি হয়েছেন…
হতাশা কী? হতাশাকে ইংরেজিতে বলে Frustration. সহজ কথায়, খুব করে চাওয়া কোনো কিছু না পেলে মানুষের মধ্যে যে অবসাদের ভাব সৃষ্টি হয়, তাকেই হতাশা বলে। মানুষ যা চায় সব চাওয়াই যে পূর্ণতা পাবে এমনটা ভাবা চরম বোকামী। আমাদের চাওয়া এবং পাওয়ার মধ্যে অনেক বাধা এসে থাকে। এই চাওয়া বা প্রেষণা চরিতার্থ না হলে মনের মধ্যে যে উদ্যমহীনতা দেখা দেয়; আবেগ, অনুভূতি ও কর্মস্পৃহার মধ্যে যে শৈথিল্য ভাব চলে আসে, তাকেই বলে হতাশা। মূলত, এটিই হলো হতাশার সুসংজ্ঞায়িত সংজ্ঞা। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে কর্মজীবন পর্যন্ত আমাদের আকাঙ্ক্ষা আর প্রাপ্তির পারদ সমান তালে উঠতে থাকলে, আমরা পুলকিত হই। আনন্দের শিহরণ বয়ে যায়…
সুখ তারাটি একলা হাসেআঁধার মেঘের ভাঁজে,জোনাকিরা নৃত্য করেঝিঁঝিঁর কলতানে। নিঝুম নিস্তব্ধ রাতেতরঙ্গ তুলেছে বাতাসগভীর নিঃশ্বাসে,বিশ্বাসী কিছু কথাহারিয়ে গিয়েছেসময়ের সাথে সাথে। সন্ধ্যার আহ্বানেপাখিরা নীড়ে ফিরে,বিদায়ী সূর্য হেসে যায়রাত্রি নামার আয়োজনে। নিয়তির বালুচরে বেঁধেছিলামসুখের কুঁড়েঘর,উড়িয়ে নিয়ে গেছে সব সুখবেপরোয়া এক ঝড়। ভরা পূর্ণিমার রাতে,এক কোছা জোছনাকুড়িয়েছিলাম একটু আহ্লাদে,হৃদয়ে অবরুদ্ধ উচ্ছ্বাস আমারভেঙ্গে চুরমার করে দিলোএক টুকরো কালো মেঘে। দৃষ্টির অগোচরে শুনিহাজারো স্মৃতির পদধ্বনি,স্মৃতি জাগানিয়া সুরে বলেতারা কিছু ভোলেনি। স্বস্তির রাহিত্য খুঁজি,অশ্রু ধোয়া কালো চোখে,আনন্দ শিশির ঝরে পড়ুকআমার ম্লান বদনে। বিস্ময়ের কীর্তিনাশা নদী হয়েস্রোতের বাহার গুটিয়েকোনো এক মৌন সন্ধ্যায়দাঁড়িয়ে থাকবো তোমার তটের দুয়ারে। Writer: Mahazabin Sharmin Priyq
এরম ভাবে কিছু সময় পার হয়ে যাবার পর, আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম ক’টা বাজে। সে তার হাতঘড়ি দেখে জানালো বারোটা বেজে পঁচিশ মিনিট। আমি বড়শি গোছাতে শুরু করলাম। ওকেও বললাম বড়শি গোছাতে। তার কারণ জিজ্ঞেস করতেই ওকে খালার বাসায় যাবার কথা মনে করিয়ে দিলাম। বাধ্য ছেলের মতো সে বড়শি গুছিয়ে নিল। আমি উঠতে যাব, সে আমার হাত ধরে আবার বসালো। আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টি ওর দিকে তাকালাম। সে প্রথমে কিছু বললো না। খানিক পরেই আমাকে জিজ্ঞেস করলো, আমি খালার বাসায় যাবার জন্য এত উদগ্রীব কেন। আমি সিরিয়াস একটা ভাব মুখে এনে বললাম সে আমাকে কোনো কিছু নিয়ে সন্দেহ করে নাকি। তাৎক্ষণিক…
পুরো বাগানটাকে এত সুনিপুণ করে বানিয়ে নিয়েছেন আমার বাবা। এখানে এসে আব্বুর রুচিশীলতার তারিফ করেননি এমন মানুষ একটিও নেই। এখানকার বেশ কয়েকটি গাছে মৌচাক আছে। পাখিদের কলকাকলি আর মৌমাছির গুঞ্জনে মন খারাপেরাও যেন অবকাশ পায়। তারাও যেন মিশে যায় প্রকৃতির মাধুর্যে। পশ্চিমদিকের শান বাঁধানো ঘাটে এসে আমরা খুব সাবধানে সিঁড়ি বেয়ে নামলাম। আর দু’টো সিঁড়ি পেরুলেই পানি ছুঁতে পারব আমরা। কিন্তু পানি থেকে উপরে এই তৃতীয় নাম্বার সিঁড়িটাই আমরা বসলাম। মাছ রাখার জন্য বড় সাইজের যে ব্যাগ দু’টো নিয়ে এসেছিলাম, দু’জন দুই দিকে সেটি রাখলাম। শুরু হলো মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। আমি মাছ ধরায় পটু। ছোলবেলা থেকেই আমি মাছ ধরায় অভ্যস্ত।…
আমি আমাদের নবাগত সন্তানের কথা বললাম। এখন এত জার্নি করলে প্রবলেম হতে পারে সে কথাও জানালাম। এটা অবশ্য মিথ্যে কথা নয়। আসলেই প্রবলেম হতে পারে। সে তার কাজিনকে দেখেছে। বেশি জার্নি করায় তার মিসক্যারেজ হয়েছিল। এরপর আর কিছু বলতে হয়নি। সে আমাকে নিয়ে খুব সিরিয়াস। আমি এইবার প্রথম প্রেগন্যান্ট। এরম কিছু হলে আমার চেয়ে সে ই বেশি ভেঙ্গে পড়বে। তবে আমার কথা বলার ধরণ দেখে সে কিছুটা বুঝেছে কি না জানি না। তবে আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমার আজ কোনো বিশেষ কাজ আছে কি-না। আমি অবশ্য বলে দিয়েছি যে, আমি খালার বাসায় যাবো। বেশি দূর না। হেঁটেই যাওয়া যায়। মাত্র পাঁচ…
খালা যেভাবে পর্দা মেইনটেইন করে এগুলো তার মেয়ের থেকে শিখেছেন। তার মেয়ে নাকি ঢাকায় কোন ভার্সিটিতে পড়ে। ইসলাম সম্পর্কে উনি আমাকে যা জানালেন ওনার মেয়ে নাকি আরও বেশি জানেন। খালার কথা শুনে উনার মেয়েকে দেখার এবং তার কথা শোনার কৌতূহল বেড়ে গেল। আমি মনে মনে স্থির করলাম, কাল দুপুরে খাবার পর সবাই যখন ঘুমোবে, আমি ঘুমাবো না। খালার সাথে তার বাসায় গিয়ে তার মেয়ের সাথে দেখা করব। সে এতকিছু কীভাবে শিখেছে আর কী কী জানে সব শুনে নিব। এই পরিকল্পনা আগেই খালাকে বললাম না। কাল যখন খালা তার বাসায় যাবার জন্য তৈরি হবে, আমি সেই মুহূর্তে বলবো আমি তার সাথে…
পার্টি শেষ হতে হতে রাত ৯টা বেজে গেল। আমি ফ্রেস হয়ে ফ্রিজ থেকে বেশ বড় সাইজের একটা কমলা হাতে নিয়ে কিচেনের দিকে পা বাড়ালাম। কিচেনে আলেয়া খালা ছাড়া আর কেউ নেই। আমার মনে পড়ল আলেয়া খালা পার্টিতে ছিলেন না। উনি তেমন কিছু খেতেও পারেননি। আর দেরি না করে খালার থেকে একটা প্লেট চেয়ে নিলাম। ফ্রিজ থেকে কয়েক রকমের মিষ্টি, সন্দেশ রেখে যেই না রসমালাই দিতে যাব। মা এসে আমাকে থামিয়ে দিলেন। বললেন,-এগুলো কী তুই খাবি?: ইয়ে, আসলে…..আমি এগুলো আলেয়া খালাকে দিতে চেয়েছিলাম। উনি তো পার্টিতে ছিলেন না। শুধু কাজই করে গেছে। আমরা তো কত কিছু খেলাম। খালা তো খেতে পারেনি,…
একরাশ অভিমান আর কিছুটা সংশয়েআরক্তিম সূর্যটা তলিয়ে যায়সায়াহ্নের আবছা আঁধারে।আমিও হারিয়ে যাবো আমারজীবনে সন্ধ্যা নামার আগে। আমি হারিয়ে গেলেও আরফিরে আসব না এই পথে।ধূলোর রাজ্যে সোনা দিয়েমোড়ানো ঐ গালিচায়থাকবে না আমার পদচিহ্ন। বেদনার বহ্নিশিখায় সুখ পুড়িয়েচোখের ঝরণার নোনাজল ছুঁয়েপ্রকৃতির সৌন্দর্য সুধা পিয়েআমি নেশার আলস্যে ডুব দিয়েছি। অযাচিত স্মৃতিরা ভীড় জমালেওআমি তাদের আমন্ত্রিত অতিথিরমতোই বরণ করে নিবো,সয়ে নিব তাদের নিরব অত্যাচার। টিনের চালে ঝমঝমিয়ে পড়াশিলাবৃষ্টির শব্দের মতোনকিছু ব্যথা আঘাত হানেআমার ছোট্ট হৃদের চাঁদোয়ায়।তবুও আমি হাসতেই থাকবোযতক্ষণ না এই প্রাণ চলে যায়। আকাশের বুকে একজোড়াপাহাড়ের ফাঁকে সলজ্জে উঁকি দেয়কাস্তের মতো শুভ্র শশী,সুধায় আমায় নরম সুরে,কিসের এত দুঃখ তোমার?ওগো বিরহিণী! Writer: Mahazabin Sharmin…
আপনার স্ত্রী হয়তো খাবার নিয়ে বসে আছে, আর আপনার দেরী হচ্ছে। অফিসের জরুরী মিটিং এ ফোন সাইলেন্ট রাখতে হয়েছিল। এদিকে আপনার প্রিয়তমা স্ত্রী আপনাকে ফোন দিয়েই যাচ্ছে! ফোনে পাচ্ছে না তাই মেসেজ করছে। কিন্তু আপনার পক্ষ থেকে কোনো রেসপন্স পাচ্ছে না। এদিকে আপনিও ফোন চেক করার মতো সময় বা সুযোগ কোনোটাই পাচ্ছেন না। মিটিং শেষ করে ফোনের পাওয়ার বাটন অন করে যেই না ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েছেন। দেখলেন যে, প্রায় ৫০+ মিসডকল আর অসংখ্য মেসেজ। বুঝতেই পারছেন বাসায় গেলে দেখতে হবে প্রেয়সীর গোমড়া মুখ। ঝাড়ি তো অবশ্যই খাবেন, তার পর আছে মহারাণীর রাগ ভাঙ্গানোর আয়োজন। ঘাম ঝরে যাচ্ছে কীভাবে তাকে…