গ্লুকোজ আমার শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় উপাদান।এর নির্দিষ্ট মাত্রা আমাদের জন্য খুব দরকারী।কিন্তু মাঝে মাঝে এই পরিমাণ বেড়ে বা কমে যেতে পারে। গ্লুকোজের পরিমাণ কমে গেলে তাকে বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া।এর কারণগুলো হলো-*অপুষ্টি*যকৃতের রোগ*মদ্যপান*অতিরিক্ত ইনসুলিন গ্রহণ*এডিসন’স ডিজিজ রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে গেলে তাকে বলে হাইপারগ্লাইসেমিয়া।এর কারণগুলো হলো-*ডায়াবেটিস মেলাইটাস*গ্লুকোজ হজম করতে না পারা*গর্ভাবস্থা*অগ্ন্যাশয় এর রোগ*থাইরোটক্সিকোসিস*এক্রোমেগালি*কুশিং সিনড্রোম ©দীপা সিকদার জ্যোতি
Author: Dipa Sikder Jyoti
থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে যে হরমোন বের হয় সেগুলো অতিরিক্ত বের হলে তাকে বলে হাইপারথাইরইডিজম।এর বৈশিষ্ট্য নিয়ে আজ আমরা জানব। *ভয়াতুর থাকা*অতিরিক্ত কম্পন*অতিরিক্ত ঘামা*বিএমআর বেড়ে যাওয়া*স্থাবিত্ত*ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া*পেশি দূর্বল হওয়া*গরম সহ্য করতে না পারা*হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া*পালস প্রেশার বেড়ে যাওয়া*নরম ত্বক*ঘুম না হওয়া*ডায়রিয়া*চোখ বাইরে বেরিয়ে যাওয়া এসব থেকে দূরে থাকতে আমাদের আয়োডিন সম্পন্ন খাবার খেতে হবে নিয়মিত। ©দীপা সিকদার জ্যোতি
এমিনো এসিড অনেকধরনের আছে।তার মধ্যে আটটি এমিনো এসিড দেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয়।তার মধ্যে একটি হলো গ্লাইসিন। আমাদের শারীরবৃত্তীয় কাজে গুরুত্বপূর্ণ একটি এমিনো এসিড হচ্ছে গ্লাইসিন।এটির কাজ সম্পর্কে আজ জানব। *গ্লাইসিন নানারকম টিস্যু প্রোটিন তৈরি করে।যেমন-কোলাজেন।*পরফাইরিন এবং হিম এর সংশ্লেষণ করে।*ক্রিয়েটিনিন সংশ্লেষণ করে।*গ্লুটাথিয়োন সংম্লেষণ করে।*পিউরিন সংশ্লেষণ করে।*বাইল এসিডের সাথে যুক্ত হয়।*পিত্ত এসিড কে পিত্ত লবণ হিসেবে বের করতে সাহায্য করে।*যকৃতে বিষ অপসারণে সাহায্য করে।*গ্লুকোনিওজেনেসিস এ অংশগ্রহণ করে। অর্থাৎ,আমাদের শরীরের জন্য গ্লুকোজ উৎপাদনে,শরীরের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দিতে,বিভিন্ন প্রোটিন তৈরিতে গ্লাইসিন কাজ করে থাকে।এটি আমাদের শরীরের জন্য খুব প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। ©দীপা সিকদার জ্যোতি
আমাদের পিটুইটারি গ্রন্থির পশ্চাৎ অংশ থেকে নিঃসৃত একটি হরমোন হলো এন্টি ডাই ইউরেটিক হরমোন।একে ভ্যাসোপ্রেসিন নামেও ডাকা হয়।আজ আমরা এই হরমোনের কাজ সম্পর্কে জানব। এন্টি ডাই ইউরেটিক হরমোন পশ্চাৎ পিটুইটারি থেকে নিঃসৃত হলেও এটি তৈরি হয় হাইপোথ্যালামাসে।এটি মূলত একটি পলিপেপটাইড হরমোন যা নয়টি এমিনো এসিড দিয়ে তৈরি।হরমোনটির কাজগুলো হলোঃ*এটি বৃক্ককোষে পানির পুনঃশোষণ করে।এতে করে মূত্র ঘন হয়।এবং এর মাধ্যমে আমাদের দেহে পানি এবং ইলেক্ট্রোলাইটের সাম্য রক্ষা হয়।*এটি বৃক্ক কোষের সংগ্রাহী নালিকায় ইউরিয়ার ভেদ্যতা বাড়ায়।*এটি ভেসোকন্সট্রিকশন করে।ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।*যকৃতে গ্লাইকোজেন ভাঙ্গনে এটি সহায়তা করে।*অগ্র পিটুইটারি থেকে এড্রেনোকর্টিকোট্রপিক হরমোন নিঃসরণ বাড়ায়।*অন্ত্র,মূত্রথলি,মূত্রনালির পেশির সংকোচনে এই হরমোন কাজ করে। ©দীপা সিকদার জ্যোতি
আমরা নানারকম খাদ্য গ্রহণ করি।তারপর সেই খাদ্যের বিপাক ঘটে।এর ফলে সেই খাদ্যগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন কাজে লাগে।পরিপাক বিপাক আছে বলেই খাদ্য আমাদের কাজে লাগে। খাদ্য গ্রহণ করার পরই তার বিপাক ঘটে।কিন্তু এই বিপাক কেন ঘটে?এর উদ্দেশ্য কী?বিপাকের একটি উদ্দেশ্য হলো গ্রহণ করা খাদ্য থেকে শক্তির নিঃসরণ।এই শক্তি কোষের বিভিন্ন কাজে দরকার পড়ে।যেমন-*মেকানিকাল কাজ (পেশি সংকোচন)*কেমিকাল কাজ (প্রোটিন সংশ্লেষণ)*ইলেক্ট্রিক কাজ (স্নায়ুর চলন)*অসমোটিক কাজ*মেমব্রেন ট্রান্সপোর্টএছাড়াও দেহের তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য শক্তি উৎপাদনের প্রয়োজন পড়ে। বিপাকের আরেকটি উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন ম্যাক্রোমলিকিউলসের সংশ্লেষণ।বিপাকের ফলে এদের সংশ্লেষণ ঘটে যা আমাদের শরীরের কাজে লাগে।তাই বলা যায়,আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি প্রক্রিয়া হলো বিপাক। ©দীপা সিকদার…
উত্তরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে দেখা যাওয়া খুব সাধারণ একটি রোগ হলো গয়টার।এই রোগে গলা ফোলা দেখা যায়।আজ আমরা এই গয়টার সম্পর্কে জানব। থাইরয়েড গ্লান্ড এর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত অবস্থাকে বলে গয়টার।এটি দুই ধরনের হয়ে থাকে-১.সাধারণ গয়টার২.মাল্টিনডুলার গয়টারসাধারণত সাধারণ গয়টার পরবর্তীতে মাল্টিনডুলার গয়টারে পরিণত হয়।এখন আমরা জেনে নেব সাধারণ গয়টার কিভাবে সৃষ্টি হচ্ছে-আমাদের শরীরে যখন আয়োডিনের অভাব দেখা দেয় তখন থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে প্রযোজনীয় পরিমাণে থাইরক্সিন এবং ট্রাইআয়োডোথাইরনিন উৎপন্ন হয়না।এতে করে থাইরয়েড উদ্দীপক হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়।বিশাল পরিমাণে এই হরমোন ক্ষরিত হতে থাকে।এতে করে থাইরয়েড ফলিকুলার কোষের সংখ্যা বেড়ে যায়।এবং একপর্যায়ে গয়টার এর উপস্থিতি ঘটে। এই অবস্থার সম্মুখীন যাতে না হতে হয় সেজন্য আমাদেরকে…
শরীরে প্লাজমা সোডিয়ামের ঘনত্ব যখন ১৩৫ মিলিমোল/লিটার এর চেয়ে কমে যায় তখন যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে বলে হাইপোন্যাট্রেমিয়া।এর কারণ হিসেবে সোডিয়াম এর অসামঞ্জস্য অবস্থার চেয়ে পানির অসামঞ্জস্য অবস্থাই দায়ী।কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ অবস্থাটি হাইপোঅসমোলারিটি এর সাথে সংশ্লিষ্ট। হাইপোন্যাট্রেমিয়ার সাধারণ কিছু কারণ হলো-*সোডিয়ামের রিটেনশনের সাথে কিছুটা পানির রিটেনশন,যেমন–কার্ডিয়াক ফেইলার-লিভার সিরোসিস-ক্রোনিক রেনাল ফেইলার-নেফ্রোটিক সিনড্রোম*শুধু পানির রিটেনশন*সোডিয়াম লস এবং সাথে কিছু পানির লস এই অবস্থাটির ফলে শারীরিক নানারকম ক্ষতি হতে পারে।যেমন-*তন্দ্রাভাব*দ্বিধা*খিঁচুনি*অসাড়তা*কোমা*এমনকি মৃত্যু ©দীপা সিকদার জ্যোতি
এড্রেনাল হরমোন আমাদের শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় হরমোন।এদের ক্ষরণ আমাদের শারীরিক বিভিন্ন কাজের জন্য দরকারী।কিন্তু এই হরমোনগুলোর অতিরিক্ত ক্ষরণ আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়।এটি রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।যে রোগটি হয় তার নাম কুশিং সিনড্রোম। এড্রেনাল কর্টেক্স থেকে নিঃসৃত হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে গেলে যে রোগটি হয় সে রোগের নাম কুশিং সিনড্রোম।রোগটি হলে শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তন আসে।যেমনঃ*মুখ চাঁদের মত গোলাকার হয়ে যায়*পেট বড় হয়ে যায়*পেট পেন্ডুলাসের মত হয়*থুতনি লাল হয়ে যায়*অস্টিওপরোসিস*ক্ষত দেরিতে শুকানো*চামড়া পাতলা হয়*মুখে চুল বেড়ে যায়*স্থুলতা*ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া*রাতে ঘুম না আসা*হাইপারটেনশন*হাইপারগ্লাইসেমিয়া*ডায়াবেটিস মেলাইটাস*পুরুষে পুরুষত্বহীনতা,নারীতে মাসিক নিয়মিত না হওয়া। ©দীপা সিকদার জ্যোতি
আমাদের দেহের বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস হলো হরমোন।বিভিন্ন হরমোন আমাদের শরীরের বিভিন্নরকম কাজ করে থাকে।তাদের নিয়মতান্ত্রিক কাজের জন্য আমাদের শরীর সুস্থ থাকে,ভালো থাকে।নানাবিধ হরমোনের মধ্যে অন্যতম একটি হলো থাইরয়েড হরমোন। থাইরয়েড হরমোনের ফলিকুলার কোষ থেকে আসে থাইরক্সিন ও ট্রাইআয়োডোথাইরনিন।আর প্যারাফলিকুলার কোষ থেকে আসে ক্যালসিটোনিন। থাইরয়েড হরমোনের সংশ্লেষণের কাঁচামাল হলো-*আয়োডাইড*এমিনো এসিড*পারঅক্সিডেজ এনজাইম আয়োডিনের উৎস সম্পর্কে জানা যাক-*সামুদ্রিক মাছ*সামুদ্রিক খাবার*সমুদ্র তীরবর্তী শাকসবজি*পানি আয়োডিনের দৈনিক প্রয়োজনীয়তাঃপ্রাপ্তবয়স্কের জন্য ১৫০ মাইক্রোগ্রামশিশুদের জন্য ৫০ মাইক্রোগ্রামবাচ্চাদের জন্য ১২০ মাইক্রোগ্রাম আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই আয়োডিন থাকা উচিত।এতে করে থাইরয়েড হরমোনের অভাব পূরণ হয়। ©দীপা সিকদার জ্যোতি
অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ থেকে ক্ষরিত একটি পদার্থ হলো ইনসুলিন।এই ইনসুলিন আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে।প্রকৃতপক্ষে এটি রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কে কমায়।আর এই ইনসুলিনের ক্ষরণকে নিয়ন্ত্রণ করে যারা আজকে আমরা তাদের সম্পর্কে জানব। ইনসুলিন ক্ষরণকে বাড়ায় যারাঃ*গ্লুকোজ*ম্যানোজ*এমিনো এসিড*গ্যাসট্রিন হরমোন*সিক্রেটিন হরমোন*কোলেসিস্টোকাইনিন*বিটা কিটো এসিড*এসিটাইলকোলিন*গ্লুকাগন*বিভিন্ন ড্রাগ ইনসুলিন ক্ষরণকে কমায় যারাঃ*সোমাটোস্ট্যাটিন*বিটা এড্রেনার্জিক ব্লকার*পটাশিয়াম ডিপ্লেশন*বিভিন্ন ড্রাগ এই ইনসুলিন এর ক্ষরণ কমবেশি হওয়া অনেক কিছুকেই নিয়ন্ত্রণ করে।ইনসুলিন এর ক্ষরণ কমে যাওয়া বা একেবারেই না হওয়া ডায়াবেটিস এর সৃষ্টি করে। ©দীপা সিকদার জ্যোতি
আমাদের মস্তিষ্কে গহ্বর থাকে।মোট চারটি গহ্বর।দুইটি পার্শ্বীয় গহ্বর,একটি তৃতীয় গহ্বর ও একটি চতুর্থ গহ্বর।এর গহ্বর গুলো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। দুইটি পার্শ্বীয় গহ্বর এর সাথে তৃতীয় গহ্বর ফোরামেন অফ মনরোর মাধ্যমে যুক্ত থাকে।তৃতীয় গহ্বর এর সাথে চতুর্থ গহ্বর সেরেব্রাল একুইডাক্ট এর মাধ্যমে যুক্ত থাকে।চতুর্থ গহ্বর এর সাথে স্পাইনাল কর্ড সেন্ট্রাল ক্যানেল এর মাধ্যমে যুক্ত থাকে।চতুর্থ গহ্বর ফোরামেন অফ লুসকা এবং ফোরামেন অফ ম্যাজেন্ডি এর মাধ্যমে সাবএরাকনয়েড স্পেস এর সাথে যুক্ত থাকে। চারটি গহ্বর এর মধ্যে যে যোগাযোগ রক্ষিত থাকে তা আমারা জানলাম।কিন্তু এই যোগাযোগ রক্ষা করার প্রয়োজন কেন?এখন সেই সম্পর্কে জানব।এই গহ্বর গুলোর মধ্যে সংযোগ থাকে বলেই সেরেব্রোস্পাইনাল…
গ্রোথ ফ্যাক্টর আমাদের দেহে নানারকম কাজ করে থাকে।আমাদের বিভিন্ন টিস্যু,অঙ্গের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এর ভূমিকা অনেক।আজকে এই বিষয়েই জানব আমরা। গ্রোথ ফ্যাক্টর তিন ধরনের-১.প্রথম গ্রুপ যারা বিভিন্ন কোষের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করে।একটি কোষ থেকে একাধিক কোষ তৈরি হতে এই ফ্যাক্টর সাহায্য করে। ২.দ্বিতীয় গ্রুপের ফ্যাক্টরগুলো ম্যাক্রোফেজ এবং লিম্ফোসাইট থেকে তৈরি হয়।এই ফ্যাক্টরগুলো আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে। ৩.তৃতীয় গ্রুপের ফ্যাক্টরগুলো আমাদের লোহিত রক্তকণিকা ও শ্বেতরক্তকণিকা এর তৈরি ও বিকাশে সাহায্য করে। এই গ্রোথ ফ্যাক্টরগুলোর ধরণ মূলত প্রোটিন ও পলিপেপটাইড ধরনের।আর এরা বিভিন্ন কোষের বৃদ্ধির সাথে জড়িত।তাই এদেরকে বৃদ্ধি ফ্যাক্টর বলা হয়। ©দীপা সিকদার জ্যোতি