জয়নব বিনতে আল জাহশ (রা.)

আল্লাহ সুবহানআল্লাহ তায়ালা যয়নব বিনতে জাহশ (রা.) এর সাথে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করেছিলেন। যয়নব (রা.) প্রচলিত কোন বৈবাহিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাননি। অভিভাবকের দ্বারস্থ হওয়া, কবুল বলা, চুক্তিবদ্ধ হওয়া এসব কিছুই ছিল না। বিবাহের পুরো প্রক্রিয়াই সম্পন্ন হয়েছিল মহান আল্লাহ কর্তৃক। ব্যাপারটা সহজ কিছু ছিল না। সেই সমাজে নিজের ছেলের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে করাটা অনেকের কল্পনারও বাইরে ছিল। তাই এই বাধাটা অতিক্রম করা কঠিন ছিল। এরপরে আল্লাহ আয়াত নাজিল করেনঃ

আর স্মরণ কর, আল্লাহ যার উপর নিআমত দিয়েছিলেন এবং তুমিও যার প্রতি অনুগ্রহ করেছিলে, তুমি যখন তাকে বলেছিলে ‘তোমার স্ত্রীকে নিজের কাছে রেখে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর’। আর তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী এবং তুমি মানুষকে ভয় করছ অথচ আল্লাহই অধিকতর হকদার যে, তুমি তাকে ভয় করবে; অতঃপর যায়েদ যখন তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম, যাতে পালক পুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে; যখন তারা তাদের স্ত্রীদের সাথে বিবাহসম্পর্ক ছিন্ন করে।* আর আল্লাহর নির্দেশ কার্যকর হয়ে থাকে।  [সূরা আল আহযাব ৩৩:৩৭]

এর অর্থ এই বিয়ের কন্ট্র্যাক্ট আল্লাহ নিজে করেছিলেন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মাধ্যমে যয়নব (রা.) এর স্বামী হয়ে যান। যয়নব (রা.) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অন্য স্ত্রীদের কাছে যেয়ে বলতেন, “তোমাদের বিয়ে হয়েছিল তোমাদের পিতা/তোমাদের অভিভাবকদের মাধ্যমে আর আমার বিয়ের ফায়সালা হয়েছিল আল্লাহর দ্বারা সাত আসমানের উপর থেকে।”

[ইবনে জারির আ’ঈশাহ (রা.) থেকে বর্ণণা করেন, ‘যদি মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর কিতাবের কোন কিছু লুকাতে চাইতেন তাহলে তিনি এই আয়াতটি লুকাতেনঃ

আর তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী এবং তুমি মানুষকে ভয় করছ অথচ আল্লাহই অধিকতর হকদার যে, তুমি তাকে ভয় করবে।]

যয়নব (রা.) জাহশ এর কন্যা ছিলেন এবং তার দাদার নাম ছিল রিয়াব। তার নাম যয়নব বিনতে আল-জাহশ ইবনে আল-রিয়াব। তিনি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ফুফাতো বোন ছিলেন।

যায়েদ ইবনে হারিসা (রা.) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পালকপুত্র ছিলেন। যায়েদ ইবন আল-হারেসার বাবা এবং চাচা (পিতৃসূত্রীয়) জানতে পারেন যে যায়েদ (রা.) মক্কায় দাস হিসেবে বাস করছেন। তারা মক্কায় আসেন যেন তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বলেনঃ “এটা তার উপর নির্ভর করছে। সে যদি তোমাদের কাছে যেতে যায় তাহলে সে যেতে পারবে।” যায়েদ ইবনে হারেসা (রা.) কে ডাকা হল। কিন্তু তিনি ফিরে যাবার ব্যপারে অস্বীকৃতি জানালেন। কেন? তিনি বললেন, ‘আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মধ্যে উত্তম চরিত্র দেখেছি। আমি তার সাহচর্য্য ছাড়তে প্রস্তুত নই।” রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যায়েদ ইবনে হারেসার প্রতিক্রিয়া দেখে মুগ্ধ হন এবং তিনি তাকে কাবার সামনে নিয়ে বলেন, ’এখন থেকে সে আমার পালক পুত্র’।

পালকপুত্র হবার কারণে তাকে যায়েদ ইবন মুহাম্মদও বলা হত। ঠিক আমাদের সমাজের মৎ যেখানে আপন পুত্র এবং পালিত পুত্র উভয়কে সমান মর্যাদাই দেয়া হয় নৈতিকভাবে। ইসলামের শুরুর দিকেও এটা একই ছিল। পালকপুত্র হবার কারণে যায়েদ এর স্ত্রী যয়নব হয়ে যান রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পুত্রবধু। আর পুত্রবধুরা চিরদিনের জন্য মাহরামে পরিণত হয়। যদি তার পুত্রের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তারপরেও চিরদিন শ্বশুরের মাহরামই থাকবে।

হযরত উসামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “আমি এক সময় মসজিদে অবস্থান করছিলাম এমন সময় আমার কাছে হযরত আব্বাস (রাঃ) ও হযরত আলী (রাঃ) আসলেন ও বললেনঃ “যান, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট হতে আমাদের জন্যে অনুমতি নিয়ে আসেন।” আমি গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে এ খবর দিলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “তারা কি জন্যে এসেছে তা তুমি জান কি?” আমি উত্তর দিলামঃ জ্বি না। তখন তিনি বললেনঃ “আমি কিন্তু জানি। যাও, তাদেরকে ডেকে আনো।” তাঁরা এলেন এবং বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! বলুন তো, আপনার পরিবারে আপনার কাছে সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি কে? তিনি জবাবে বললেনঃ “আমার কন্যা ফাতিমা (রাঃ)। তাঁরা বললেনঃ “আমরা হযরত ফাতিমা (রাঃ) সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করিনি।” তখন তিনি বললেনঃ “উসামা ইবনে যায়েদ ইবনে হারেসা (রাঃ), যাকে আল্লাহ তাআলা পুরস্কৃত করেছেন এবং আমিও যার প্রতি স্নেহশীল।”

রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্বীয় ফুফু উমাইমা বিনতে আবদিল মুত্তালিব (রাঃ)-এর কন্যা হযরত যয়নাব বিনতে জাহশ আসাদিয়্যা (রাঃ)-এর সাথে তাঁর (যায়েদ রাঃ -এর) বিয়ে দিয়েছিলেন। মোহর হিসেবে দশ দীনার (স্বর্ণ মুদ্রা) ও সাত দিরহাম (রৌপ্য মুদ্রা) প্রদান করেছিলেন। আর দিয়েছিলেন একখানা শাড়ী, একখানা চাদর এবং একটি জামা। আরো দিয়েছিলেন পঞ্চাশ মুদ্দ (ওযন বিশেষ) শস্য ও দশ মুদ্দ খেজুর। এক বছর অথবা তা থেকে কিছু কম-বেশী সময়ের মধ্যে নিজ সংসার তিনি গুছিয়ে নিয়েছিলেন। পরে তাদের মনোমালিন্য শুরু হয়ে যায়। হযরত যায়েদ (রাঃ) গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট অভিযোগ করেন। তিনি তাকে বুঝিয়ে বললেনঃ “সংসার ভেঙ্গে দিয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর।” এই জায়গায় ইবনে আবি হাতিম (রঃ) এবং ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) সঠিক নয় এরূপ বহু আসার বর্ণনা করেছেন, যেগুলো বর্ণনা করা উচিত নয় মনে করে আমরা ছেড়ে দিলাম। কেননা ওগুলোর মধ্যে একটিও প্রমাণিত ও সঠিক নয়। মুসনাদে আহমাদেও হযরত আনাস (রাঃ) হতে একটি রিওয়াইয়াত রয়েছে। কিন্তু তাতেও বড়ই অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়। এ জন্যে আমরা ওটাও বর্ণনা করলাম না।

সহীহ বুখারীতে রয়েছে যে, এ আয়াতটি হযরত যয়নাব বিনতে জাহশ (রাঃ) ও হযরত যায়েদ ইবনে হারেসা (রাঃ)-এর ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে।

মুসনাদে ইবনে আবি হাতিমে রয়েছে যে, যয়নাব বিনতে জাহশ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সহধর্মিণী হবেন একথা পূর্বে আল্লাহ তাকে অবহিত করেছিলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সঃ) একথাটি প্রকাশ করেননি। তিনি হযরত যায়েদ (রাঃ)-কে বুঝিয়ে বলেছিলেনঃ “তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখো এবং আল্লাহকে ভয় কর।” তাই আল্লাহ তা’আলা স্বীয় রাসূল (সঃ)-কে বলেনঃ “তুমি তোমার অন্তরে যা গোপন করছে আল্লাহ তা প্রকাশ করে দিচ্ছেন।”

হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “যদি হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) তাঁর উপর অহীকৃত কিতাবুল্লাহর কোন আয়াত গোপন করতেন তবে অবশ্যই (আরবি)-এ আয়াতটিই গোপন করতেন।” (এটা ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) বর্ণনা করেছেন)

(আরবি) শব্দের অর্থ হলো প্রয়োজন। ভাবার্থ হচ্ছেঃ যখন হযরত যায়েদ (রাঃ)-এর মন ভেঙ্গে গেল এবং বহু বুঝানোর পরেও তাদের মনোমালিন্য কাটলো না, বরং তালাক হয়ে গেল তখন আল্লাহ তা’আলা হযরত যয়নাব (রাঃ)-কে স্বীয় নবী (সঃ)-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলেন। এজন্যে অলী, প্রস্তাব-সমর্থন, মহর এবং সাক্ষীদের কোন প্রয়োজন থাকলো না।

মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, যখন হযরত যয়নাব (রাঃ)-এর ইদ্দত পূর্ণ হয়ে গেল তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত যায়েদ ইবনে হারেসা (রাঃ)-কে বললেনঃ “তুমি যাও এবং তাকে আমার বিবাহের পয়গাম পৌঁছিয়ে দাও।” হযরত যায়েদ (রাঃ) গেলেন। ঐ সময় হযরত যয়নাব (রাঃ) আটা ঠাসছিলেন। হযরত যায়েদ (রাঃ)-এর উপর তার শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা এমনভাবে ছেয়ে গেল যে, সামনে থেকে তার সাথে কথা বলতে পারলেন না। বরং তিনি মুখ ফিরিয়ে বসে পড়লেন এবং রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)-এর প্রস্তাব শুনিয়ে দিলেন। হযরত যয়নাব (রাঃ) তখন তাকে বললেনঃ “থামুন, আমি আল্লাহ তাআলার নিকট ইসতিখারা (লক্ষণ দ্বারা শুভাশুভ বিচার) করে নিই।” অতঃপর তিনি দাড়িয়ে নামায পড়তে শুরু করলেন। আর এদিকে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর অহী অবতীর্ণ হলো এবং তাকে বলা হলো: “আমি তাকে তোমার সাথে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ করলাম।” সুতরাং নবী (সঃ) কোন খবর না দিয়ে সেখানে চলে গেলেন। [তাফসীর ইবনে কাসীর]

পুরো মদিনাই এই বিয়েতে খুশি হয়। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওয়ালিমার আয়োজন করেন। তিনি মানুষকে গোশত এবং রুটি দ্বারা আপ্যায়ন করেন। বিয়েতে খুবই চমৎকার একটি ঘটনা ঘটে। সেদিন মদিনার সবাই এসেছিল, ফাঁকা জায়গা বলতে কিছু ছিল না। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাসাতেও মানুষ এসেছিল কারণ মসজিদে জায়গা সংকুলান হয়নি। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষকে বাসায় ডেকে সবাইকে আপ্যায়ন করেন। অনেক মানুষ চলে যায়, আবার কেউ কেউ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাসাতেই অবস্থান করে। যয়নব (রা.) সেই সংখ্যালঘু মানুষদের চলে যাওয়ার অপেক্ষা করছেন, অন্যদিকে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আনাস ইবনে আল-মালিকের সাথে থেকে তাদের যাওয়ার অপেক্ষারত। কিন্তু তারা গল্পগুজব করছিল, নিজেরা আনন্দে লিপ্ত ছিল আর তারা কেউ বেরও হচ্ছিল না। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভান করলেন যেন তিনি নিজেও বেরিয়ে যাবেন যেন তারা তার ইঙ্গিত বুঝতে পারেন। এভাবে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিনয়ের সাথে তাদের ইন্ডিরেক্টলি বুঝাতে চাইলেন যে চলে যাবার সময় হয়েছে। কিন্তু তারা এটা বুঝতে পারল না। তাই তিনি উঠে দাঁড়ালেন এবং আনাস (রা.)কে নিয়ে তার অন্যান্য স্ত্রীদের সাথে দেখা করতে গেলেন। এরপরে তিনি যখন ফিরে আসলেন তখনও মানুষেরা সেখানে উপস্থিত। অন্যদিকে উম্মুল মুমিনীন যয়নব (রা.) তখনও ঘরের এক কোণে বসে আছেন, তাদের চলে যাওয়ার অপেক্ষা করছেন। এরপরেও তারা কোন ইঙ্গিতই বুঝতে পারছিল না। পুরো ব্যাপারটি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য কিছুটা বিব্রতকর হয়ে উঠছিল। আবার তিনি আশা নিয়ে হাঁটাহাঁটি শুরু করলেন যে এবার হয়ত তারা বুঝতে পারবেন কিন্তু তারপরেও কিছু হল না। হয়ত তারা ভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন, বেদুইনও হতে পারেন, কারণ তাদের পক্ষে মদিনার সংস্কৃতি বোঝাটা বেশ কঠিন ছিল। তৃতীয়বারের মত রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাঁটতে লাগলেন। এইবার তারা বুঝতে পারল যে তারা সেখানে অযাচিতভাবে বেশ অনেকক্ষণ ধরে অবস্থান করছে, তারা এই ব্যাপারটি ভেবেও দেখেনি যে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাত্র বিয়ে করেছেন এবং তার স্ত্রীও তাদের কারণে জায়গা থেকে নড়তে পারছেন না। এরপরে তারা তার বাড়ি ছেড়ে বের হয়ে গেল এবং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথমবারের মত তার নতুন স্ত্রী যয়নব বিনতে আল-জাহশ এর সাথে একাকী হলেন।

সেসময়ে উমর ইবন আল-খাত্তাব (রা.) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি প্রচন্ড সম্মানের জন্য তিনি সবসময় বলতেনঃ “আমি ইচ্ছেপোষণ করি যে আপনার স্ত্রীগণ অন্যান্য মুসলিমদের থেকে পুরোপুরি আলাদা থাকবেন। যদিও পূণ্যবান মানুষ আপনার বাসায় আপনার সাথে কথা বলতে আসে এবং সেসময় আপনার সাথে আপনার স্ত্রীগণ থাকেন আবৃত অবস্থায় তাদের মুখমন্ডল ব্যতীত, কিন্তু আমি আশা করি যে আপনি আপনার স্ত্রীগণকে পরিপূর্ণরূপে আবৃত করবেন, কারণ পূণ্যবান মানুষের পাশাপাশি বদলোকও (মুনাফিক, অমুসলী) আপনার সাথে দেখা করতে আসে।”

এই ইচ্ছা উমর ইবন আল-খাত্তাব (রা.) সবসময় রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে প্রকাশ করতেন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি ভালোবাসা এবং তার পরিবারের প্রতি সম্মানের জন্য। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন যয়নব (রা.) এর সাথে বিয়ের পরে তিনি বাসা থেকে বাসা থেকে বের হলেন এবং তার কাছে কিছুক্ষণ আগে নাযিল হওয়া আয়াতগুলি তিলাওয়াত করলেন। এটি ছিল হিজাবের আয়াত যেখানে বলা হয়েছে, ‘রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রীগণকে পরিপূর্ণরূপে আবৃত হতে হবে। এবং কোন মানুষ যদি তাদের সাথে কথা বলতে চায় তাহলে তাদের কোন দেয়াল বা দরজার অন্যপাশ থেকে কথা বলতে হবে।’ এই সময়েই পরিপূর্ণ হিজাবকে ফরজ করে দেয়া হয় রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রীদের উপর।

Leave a Comment