উল্টো ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলা করবেন তাহসান

এবার মামলার খবরে শিরোনামে এলেন গায়ক ও অভিনয়শিল্পী তাহসান। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির এক গ্রাহকের করা প্রতারণার মামলায় অভিযোগ প্রমাণ হলে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন তাহসান রহমান খান, রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়া। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান আজ শুক্রবার সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে ইভ্যালি ইস্যুতে কয়েক মাস ধরে তাহসানকে অপমানিত হতে হচ্ছে, যা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত। তাই তিনি ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলা করার কথাও ভাবছেন। প্রথম আলোকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস থেকে এমনটাই জানান তাহসান।


রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় ৪ ডিসেম্বর প্রতারণার মামলা করেন ইভ্যালির গ্রাহক সাদ স্যাম রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়। ইভ্যালির এই গ্রাহকের করা মামলায় নজরদারিতে আছেন তাহসান, মিথিলা ও শবনম ফারিয়া। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁরা যেকোনো মুহূর্তে গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে জানান সাজ্জাদুর রহমান।এ বছরের মার্চে দুই বছরের জন্য ইভ্যালির শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন তাহসান। কিন্তু গ্রাহকের অভিযোগ এতটাই বেশি ছিল যে তিন মাসের মধ্যে নিজে থেকে চুক্তি বাতিল করেন বলে জানান দেশের জনপ্রিয় এই গায়ক ও অভিনেতা।

তাহসান বলেন, ‘যাঁরা ভুক্তভোগী, তাঁরা তো ভুগছেন; আমিও তো ভুগছি, অনেকভাবে নিগৃহীত হচ্ছি এই ইভ্যালির কারণে। কিন্তু আমি তো আমার দায়বদ্ধতার কারণে ঠিক কাজই করেছিলাম, বেরিয়ে এসেছিলাম। তাহলে এখন আমাকে কেন নিগৃহীত হতে হচ্ছে? কেন? গত ২০ বছরে বিনোদন অঙ্গনে সম্মানের সঙ্গে এত কাজ করলাম, এত কোম্পানির সঙ্গে করলাম, আজ এই একটা কোম্পানির জন্য আমাকে যে পরিমাণ ভুগতে হচ্ছে, সেটা তো আসলে অনাকাঙ্ক্ষিত। কী আর করব! অনেক মানুষ সাফার করছেন, আমিও করছি। যাদের কারণে আমি এই জায়গায় পৌঁছলাম এবং আমাকে এভাবে নিগৃহীত হতে হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব। তবে আগে আমার এই লড়াই থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’তাহসান আরও বলেন, ‘আমি শুনেছি ইভ্যালির ৪০ লাখ গ্রাহক, যে কোম্পানিতে আমি যুক্ত হওয়ার আগেই ৪০ লাখ মানুষ যুক্ত, যে কোম্পানির সঙ্গে দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান যুক্ত, দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত, সেখানে আমি শুভেচ্ছাদূত হয়ে মাত্র দুটো ফেসবুক লাইভ করেছি। আমি কিন্তু বিজ্ঞাপনও করিনি। আর আমি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করলে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের করতেই পারি। কারণ তখন তো লিগ্যাল কোম্পানি।’

সংবাদ সম্মেলন করে তাহসানের শুভেচ্ছাদূত হওয়ার ব্যাপারটি জানানো হয়। তাহসান বলেন, ‘আমার প্রেস কনফারেন্স হয় এ বছরের মার্চের শুরুতে, মে মাসের শেষে বের হয়ে আসি। চুক্তি ছিল দুই বছরের, তিন মাসের মধ্যে বের হয়ে এসেছি। কত মানুষ কত প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়, আমিও হয়েছি। সব কোম্পানিরই তো কমবেশি কাস্টমার কমপ্লেইন থাকে। এই কোম্পানির বেশি ছিল বলেই বের হয়ে আসতে হয়েছে। তবে ইভ্যালি যখন সরকারি প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে, তখন আমি কীভাবে না করব! আমিই–বা কীভাবে মনে করব, এটা একটা অসচ্ছ কোম্পানি?


একটা কোম্পানি তখন ভালো চলছে, সবাইকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে, আমি তো সিএ ফার্ম না, একটা কোম্পানির ফিন্যান্সিয়াল বুকস তো আমাকে দেখতে দেবে না। বাহ্যিকভাবে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, আমাদের তাই–ই করতে হয়। এখন যদি জটিলতা হয়, তাহলে তো কোনো তারকাই আর কোনো ব্র্যান্ড এনডোর্স করতে কখনোই রাজি হবে না। সব তারকাকে তো আর কোম্পানির ফিন্যান্সিয়াল বুকস দেখতে দেবেও না। সারা পৃথিবীতে এমন কিছু হলেও তারকাদের হ্যারাস করা হয় না। আমাদের দেশে এমনটা কেন করা হচ্ছে? এটা তো আমার জন্য মানহানিকর। কারণ গত ছয়–সাত মাস আমার ওপর দিয়ে যা যাচ্ছে, এটা খুবই অস্বস্তিকর।’

Leave a Comment