আকাশের বিন্যস্ত মেঘেরা যখনধূসর রঙ অঙ্গে জড়াবে,উদ্ভাসিত পবনে যখনবৃক্ষপত্র নেচে চলবে,অবাক নয়নে আমি তখনঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকবো!নিপুণ হাতে মনের ক্যানভাসে আঁকবো,কল্পনার দৃশ্যপট। হরিৎ পল্লবগুলো যখনচাপা আর্তনাদে নিঃশেষিত হবে,রক্তে রাঙ্গা অস্তিমিত সূর্য যখনদূর-দিগন্তে ম্লান হয়ে আসবে,নিষ্প্রভ দৃষ্টিতে আমি তখনতাকিয়ে থাকব!মেঘশূন্য আকাশপথে নির্বাক প্রশ্ন নিয়ে। ব্যস্ত নগরের কোলাহল যখননিস্তব্ধতার অতল গহ্বরে ডুবে যাবে,উজ্জ্বল রাতের উৎসবমুখর আকাশে যখননির্জনতা ভীড় জমাবে,লোভাতুর দৃষ্টিতে আমি তখনতিমিরাচ্ছন্ন রজনীর সৌন্দর্য ছুঁয়ে দেখবো! মায়াবী নিশিথে ঝিঁঝিঁরা যখনদলবেঁধে গাইবে মুক্তির গান,জ্যোৎস্নারা যখন পরম উচ্ছ্বাস নিয়েপাড়ি জমাবে বাঁশ বাগানের ওপাড়ে,নিশির চাদর জড়িয়ে আমি তখনমাতোয়ারা হবো আলোকহীন রাত্রির ঘ্রাণে। লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
Author: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
সুখগুলোকে বাক্সবন্দি করে,বিষণ্নতাকে কবর দিয়ে,ছিন্ন করে দিব-সমস্ত মায়ার বেড়াজাল। একঝাঁক অভিমান ডানা মেলেউড়ে যাবে মুক্ত বিহঙ্গ বেশে।ভাসমান মেঘের কাছেএক পশলা বৃষ্টির বিনিময়েবিকিয়ে দিব সমুদয় অশ্রুজল। আর সূর্যের রক্তাক্ত অগ্নিশিখায়পোড়াবো নুপুংসক দুঃখগুলোকে।আতশী দুঃখগুলো নীলাভ ধোঁয়ায়কুন্ডলী পাকিয়ে ভেসে যাবেস্তব্ধ বাতাসে! নিয়তির পাঠশালার নিয়মিত ছাত্র হয়েশিখবো জীবনের জটিল সব পাঠ।বিপদেও মুষড়ে যাব না বরংশক্ত হাতে প্রতিহত করবোজীবনের যত ঘাত-প্রতিঘাত। ঠুনকো অনুভূতির খোলস চিঁড়েঅনন্যতায় হয়ে উঠব প্রাণচঞ্চল।গাঢ় কাজলে রাঙ্গাবো দু’নয়নআর লেপ্টে দিবি কিভাবে দুষ্টু নোনাজল? আকাশের বুকে রঙ্গিন ঘুড়ি হয়েউড়বো আমি দিগ্বিদিক।নীলিমার সাথে সখ্যতা বাড়িয়েকিনে নিব এক সমুদ্র নীল জল।বহমান বাতাসে বিষাদের সব রঙছুঁড়ে দিব সেই নীল সিন্ধুটায়,শুদ্ধ হয়ে ফিরবো আমিআমার স্বীয় ঠিকানায়। লেখা:…
ফুটে আছো তুমি ঐগোলাপ গাছের শীর্ষে,আমাকে দেখে মুচকি হেসেছোশিশিরসিক্ত ঠোঁটে। থমকে গিয়েছি আমি,আড়ষ্ট হয়েছে আমার পথমনকাড়া ঐ হাসির অস্ত্রেকরেছিলে আমাকে বধ। বাতাসের সাথে মিলিয়ে সুরগেয়েছিলে গানমনে হলো যেন করছি আমিঅমৃতসুধা পান। তোমার ইশারায় পথভ্রষ্ট হয়েগোলাপ কাঁটার সিঁড়ি দিয়েউঠছি আমি ক্রমান্বয়েএকেক সিঁড়ি বেয়ে। কাঁটার আঘাতে জর্জরিত আমিরঞ্জিত হয়েছি রক্তেথেমে নেই তবু অবিরত চলছিউদ্দেশ্য তোমার লক্ষ্যে। মধ্যিপথে চমকে দেখিবিবর্ণ তোমার মুখকই গেল সেই তরতাজা ভাব?কই গেল সেই সুখ? তবু আমি নেইতো থেমেঅনেক কথা আছে জমেবলতে তোমার কানেকানেছুটছি আমি প্রাণপণে। হঠাৎ এক দমকা হাওয়ায়ঝরে গেলে তুমি,পড়লে গিয়ে ধূলোমাখা মৃত্তিকায়।অব্যক্ত কথার পঙক্তিরা আজভীষণ অসহায়তৃষ্ণার্ত আমি তোমাকে ছোঁয়ারতীব্র আকাঙ্ক্ষায়।রাত জেগে বসে থাকি তোমার অপেক্ষায়। কলমে:মেহেজাবীন…
মা এসে তাকে জোর করে একটি ডিম সিদ্ধ খাইয়ে দিল। টেবিলে রাখা গ্লাস থেকে সামান্য পানিতে গলা ভিজিয়ে দিল দৌঁড়। আজ রিক্সায়ই যেতে হবে। তাই একটি রিক্সা ডেকে আয়াত উঠে পড়লো। রিক্সাওয়ালা মামাকে জোর টান দিতে বললো। আয়াত কোনো ভাবেই আর পরের ক্লাসগুলো মিস করতে চায় না। রিক্সা দ্রুতবেগে চলছে। আয়াত দূর থেকে পাগলীটার অবস্থান টের পেয়ে মামাকে বললো ঐ জায়গাটায় গিয়ে যেন গতি কমিয়ে দেয়। আয়াতের কথা মতো রিক্সা মহিলাটির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। তিনি মাথা নিচু করে ডাল-পরোটা খাচ্ছে। আর পাশেই একটা স্যান্ডউইচ ব্রেড এবং প্রতিদিনের মতো নতুন একটি মিনারেল ওয়াটারের বোতল। তার খাবার ভঙ্গিমা আজ প্রথম আয়াত খুব…
রাস্তার মোড়ে আরো অনেকেই একটি চুলো, বেশ কিছু ছোট ছোট থালা নিয়ে ভাপা পিঠা বানাচ্ছে। সেই ভাপা পিঠার ভিতর নারকেল কুচি আর খেজুর গুড় পুরে দেয়া। লোকজন বাঁ হাতে ছোট প্লেট ধরে ডান হাতে চামুচের সাহায্যে বেশ পরিতৃপ্ততার সাথে পিঠা খাচ্ছে। একটি রোগামতো পঙ্গু লোকও হাসি হাসি মুখ করে ভাপা পিঠা বানিয়ে বিক্রি করছে। ফুটপাত ধরে কিছু মানুষ এখনও জগিং করছে। অনেকেই আবার গাড়ির পুরোনো টায়ার এবং খড়-পাতায় আগুন লাগিয়ে আগুন পোহাচ্ছে। এই সবকিছু লক্ষ করেও, আয়াত পাগল মহিলাটির কথা ভাবছিলো। এই কনকনে শীতে সে কীভাবে যে রাত্রি যাপন করেছে আর এখনও বা কী অবস্থায় আছে। এসব ভেবে ভেবে সে…
একটা কাক পাগলিটির পায়ের উপর বসতেই সে মৃদু পা নাড়ালো। তাতেই আয়াতের ভুল ভেঙ্গে গেল। সে তার খুশির ভাব ঠোঁটের কোণে তুলে ধরলো। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, পথচারীরা এই ফুটপাত দিয়ে হাটলেও পাগলির থেকে দূরত্ব বজায় রাখে। কেউ তাকে মাড়িয়ে বা পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে না। তার সামনে আসতেই ফুটপাত থেকে নেমে ঐটুকুন জায়গা রাস্তা দিয়ে হেঁটে আবার ফুটপাতে উঠে। আয়াতের মনে হলো এরাও বুঝি তার মতো এই পাগলিকে ভয় পায়। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে পাগলিটাকে নিয়ে অভিনিবেশ সহকারে দর্শন করে সে বাসায় ফিরলো। .এরপর থেকে আয়াত প্রতিদিন কলেজ যাওয়া আসার পথে পাগলিটিকে দেখতো। তাকে সে ভয় পাওয়ার দরুন বিপরীত দিকের ফুটপাত দিয়ে…
[২]সেদিন তার চোখ পড়েছিল ফুটপাতের উপর শুয়ে থাকা এক পাগল মহিলার উপর। দ্রুতগতিতে রিক্সা চলার দরুন সেদিন ঐ মহিলাকে ভালোমতো লক্ষ করতে পারেনি। আর দশটা পাগলের মতো ভেবে, বাবার সাথে আবারও সে গল্পে মেতেছিল। কিন্তু ক্লাস শেষ করে কলেজ থেকে বাসায় ফেরার পথে সে যখন একা একা হাঁটছিল। তখন সে লক্ষ করলো, সে যেই ফুটপাত দিয়ে যাচ্ছে সেই ফুটপাতের উপরই পাগল মহিলাটি শুয়ে আছে। কম করে আর পাঁচ পা হাঁটলেই সে পাগল মহিলার কাছে যেতে পারবে। আয়াত আর সামনে এগিয়ে গেল না। কারণ এই দুনিয়ায় সে দু’টি জিনিস খুব ভয় পায়। একটি হলো ‘হিজড়া’ আর দ্বিতীয়টি হলো এই ‘পাগল’ মানুষ।…
মনের আকাশটা আজ বিষন্ন।ধূসর মেঘের আড়ালেমন খারাপের কথাগুলোচুপটি মেরে আছে। উত্তাল সমীরণে কিছু স্মৃতিডানা মেলে পরমানন্দে উড়ছে।আমি দিনের সিঁড়িটায় উঠতে উঠতেগোধূলীলগ্নে এসে থেমে গিয়েছি।গোধূলী যে আমার ভীষণ প্রিয়! সাঁঝবেলার কিছু আলো-ছায়া খেলা,কিছু আবিরের মেলাসৌন্দর্যের পসরা বসায়।আমি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি। কিছু সৌন্দর্য কিনি,কিছু সৌন্দর্য আলতো হাতেছুঁয়ে দেখি আরকিছু সৌন্দর্য মনের কুঠিরে জমা রাখি; ভবিষ্যতে উপভোগ করব বলে। সৌন্দর্য বাসি হয়ে গেলেমানুষের আকর্ষণ স্বভাবতই কমে যায়। আমার কমে না,আমি বাসি সৌন্দর্যউপভোগ করতেও ভালবাসি।পুরোনো পুরোনো গন্ধ পাওয়া যায়। অন্যের চোখে খুব ঠুনকো জিনিসওআমাকে বেশ টানে।ডায়েরীর ভাঁজে অনেকদিন আগে রাখা গোলাপ পাঁপড়িটাই দেখুন!তরতাজা গোলাপটি যখনডায়েরীর চাপে ক্লিষ্ট হয়,আহত পাঁপড়ির কিছু কষ্টডায়েরীর ভাঁজে লেগে…
ভাবনার অনেকটা পথ হেঁটে এসেআমি থমকে গিয়েছি!কলমের অলসতায় আড়ষ্ট হয়ে গিয়েছেআমার লেখার হাত। আকাশের বুকে চাঁদের হাসিটাওকেন যেন মলিন।ভাসা ভাসা মেঘের আড়ালেতার সৌন্দর্যটাও যেন ফিকে হয়ে গেছে। মৌনতা ছড়ানো রাতে আমি ঘুমহীন। ঘুমোবার বাহানায় চোখ বুজে স্মৃতি হাতরাই।কিছু মরীচিকা পাই।ওগুলোই ছুঁয়ে দেখি। গুঁড়ো গুঁড়ো মরীচিকায়বিন্দু বিন্দু ভাললাগা উঁকি দেয়।ভুবন ভোলানো হাসিতে স্বাগত জানায়সাদা-কালোর জগতে।ঐ হাসি আমি উপেক্ষা করতে পারিনা।আবারও আমি ফেঁসে যাই মায়ার জালে। নিয়তির সাইক্লোনে ছিন্ন-ভিন্ন হওয়াসূতোয় আমি আবারও গিঁটু বাঁধি।জোড়া লাগানোর বৃথা চেষ্টা করেইআমি সুখ পান করি।বিষাদের তৃষ্ণা নিমিষেই নিবারিত হয়। রাত জাগানিয়া পাখিটাওআমাকে দেখে মুচকি হাসে।তার ভাবনার নদীতেদোল খায় আমার চিন্তনচিত্র।নিয়মে নিয়ন্ত্রিত ঘড়ির সময়গুলো উবেগিয়েছ মানসের অন্তরালে।টিকটিক…
কেউ কাঁদুক,আমাকে হারানোর ভয়েকারো চোখে জমুককষ্টের শিশির। কেউ কাঁদুক,কারো অনুভবের চাদরেখুব যত্ন করে মিশে থাকুকআমার নাম। কেউ কাঁদুক,আমার দেয়া কষ্ট পুষেআবার সব এক নিমিষেইবিকিয়ে দেয়ার আয়োজনে। কেউ কাঁদুক,আমার প্রতিধ্বনি শোনারউৎকণ্ঠা নিয়ে।অপেক্ষার প্রহর বেড়ে চলাতেঅজানা আশঙ্কায় কেউঢুকরে কেঁদে উঠুক। কেউ কাঁদুক,আমার অনুপস্থিতি সহ্যকরতে না পেরেভিতরে ভিতরে ছটফট করুক। কেউ কাঁদুক,আমাকে অবহেলা করার অপরাধে,অনুশোচনার চিতায় আত্মহুতি দিয়েশান্তি পাক ফিরে। কেউ কাঁদুক,রুষ্ট আমার রাগ ভাঙ্গাতেকারো আঁখি ভেসে যাকনোনতা জলপ্লাবনে। কেউ কাঁদুক,আমাকে পাবার প্রবল আকাঙ্ক্ষায়ভিজে যাক মুনাজাতেতুলে ধরা আকুলিত দু’টি হাত।অথবা সিক্ততায় ভরে উঠুকতার জায়নামাজ। কেউ কাঁদুক,আমার ব্যথায় ব্যথিত হয়েকারো নয়ন জুড়ে নেমে আসুকভালোবাসার উপছে পড়া বান। কেউ কাঁদুক,আমার শোকে।কেঁদে কেঁদে দু’আ করুকআমার কবরের…
হাইপারসোমনিয়া কী? ➤সাধারণত, হাইপারসোমনিয়া এমন একটি অবস্থা, যেখানে আপনি রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমালেন। তবুও দিনের বেলায় অত্যধিক ঘুম অনুভব করেন। অথবা রাতে একদমই হালকা ঘুমিয়ে সারা দিনমান তন্দ্রা অনুভব করেন। অনেকেই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। টেনশন/ডিপ্রেশনে থাকলে অনেকের ঘুমের সমস্যা হয়ে থাকে। কারো সহজে ঘুমই আসে না আবার কেউ কেউ এত ঘুমায় যে ঘুমের জন্য অস্বস্তিতে পড়ে যায়। আমার নিজের ও হাইপারসোমনিয়া হয়।হাইপারসোমনিয়া হয়, আমি যখন টেনশনে থাকি। আমি তখন কিছু নিয়ম মেনে চলি,তাতে আমার এই সমস্যাটা আর থাকে না।পারলে আপনারাও চেষ্টা করতে পারেন। নিয়ম: ১.কম খাই। অর্থাৎ ভরা পেটে খাবার খাই না।কারণ তাতে খাদ্য পরিপাক করতে পাকস্থলীকে এক্সট্রা এনার্জি…
ইচ্ছেগুলো আজ আর উড়তে চায় নারঙ্গিন ডানা মেলে,বিভৎস অন্ধকার কারাগারেনিজেকে বেশ মানিয়ে নিয়েছে। কালিশূন্য কলমটি আর রক্তশূন্য ডায়েরীর পাতায় আঁচড় কাটে না,নিঃস্ব হয়ে পড়ে থাকেপরিত্যক্ত কোনো বর্জ্য ফেলার ঝুড়িতে। তরতাজা গোলাপের পাপড়িগুলোবিবর্ণ হতে হতে কালদক্ষিণা বাতাসে ঝরে পড়েছে।ফুলবিহীন গাছটির দিকে আরকারো দৃষ্টি যায় না।পলকহীন মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকে নাকোনো পথিক।ফুল ছাড়া গোলাপ গাছটি এখনসন্তানহীনা নারীর মতো মূল্যহীন,ডিভোর্সী নারীর মতো উপেক্ষিত আরবিধবা নারীর মতো অবহেলিত। ঐদিকে সদ্যফোটা শিউলী ফুলগুলোমাটিতে ঝরে পড়েও নজর কাড়ছেনবযৌবনা কোনো চঞ্চল কিশোরীর মতো।খানিকবাদে তার অহংকারওচাপা পড়ে যাবে মৃত্তিকার আড়ালে। বারান্দায় ঝুলে থাকা ঐ অপরাজিতারঅঙ্গে জড়ানো নীল শাড়িটাখানিক মলিন হয়েছে।ভ্রমরগুলো তাকে দেখে আর আকৃষ্ট হয় না।তাকে এড়িয়ে ভ্রমর…