খারাপ স্বপ্ন দেখলে কী করবেন?

আপনি স্বপ্ন দেখলেন খুব কাছের কেউ মারা গিয়েছে। অথবা নিজে মারাত্নক এক্সিডেন্ট করেছেন। স্বপ্নটাও দেখলেন ঠিক ফজরের আগে। যেই সময়ের স্বপ্ন মিথ্যা হয় না বলে শুনেছেন আপনি।

এরকম একটি মুহুর্তে এ ধরনের স্বপ্ন আপনাকে অস্থির করে তুললো। আপনি একে-ওকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, আর নানা ব্যাখ্যা শুনে আপনার ভয় আর আশংকা আরও বাড়তে লাগলো স্বাভাবিকভাবেই।

অথচ…

হাদিসে স্পস্ট উল্লেখ আছে, স্বপ্ন যেমন আল্লাহর তরফ থেকে ভবিষ্যতের কোন ঘটনার ব্যপারে অগ্রিম সংবাদ দেয়ার জন্য আসে, তেমনি স্রেফ শাইতানের পক্ষ থেকে ভয় দেখানোর জন্যও হয়ে থাকে। বিভিন্ন সময়ের নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা স্মৃতিতে লম্বা সময় থাকলে, সেসব ঘটনার স্বপ্নও দেখে মানুষ।

স্বপ্ন যদি সেটা সত্যই আল্লাহ তাআলার তরফ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তো সেটা সত্যি হবে। তবে, জরুরী না হুবুহু যা দেখেছেন তাই ঘটবে, বরং এটা কোন ব্যাখ্যা সাপেক্ষ স্বপ্নও হতে পারে। আর যদি নিছক চিন্তা ভাবনার ফসল বা শাইতানের পক্ষ থেকে হয়, তাহলে তো এর কোন ভ্যালু নেই। এখন, এটা কোন ধরনের স্বপ্ন সেটা সুনিশ্চিত হওয়ার কোনই উপায় নেই।

তাছাড়া, স্বপ্নের অপব্যাখ্যা বা ভুল ব্যাখ্যা করা হলে, সেই অনুযায়ী স্বপ্নটি ফলে যেতে পারে। যদিও এ কথাটি যে হাদিস থেকে নেয়া হয়, তার অন্য অর্থও আছে, কিন্তু ভুল ব্যাখ্যাতে আপনার অনর্থক ভয় আর আশংকা বাড়তে পারে, এতে তো কোন সন্দেহ নেই।

করনীয় কি তাহলে?

এ ক্ষেত্রে করনীয় ততটুকুই, যতটুকু আল্লাহর রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের শিখিয়েছেন।

এক. স্বপ্নের অনিষ্ট ও ক্ষতি থেকে মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। তিনবার ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম’ পড়া। তাহলে এ স্বপ্ন কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (মুসলিম, হাদিস : ২২৬২)

এ ক্ষেত্রে হাদিসে একটি দোয়া বর্ণিত হয়েছ। দোয়াটি হলো– ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন শাররি হাজিহির রু’ইয়া।’ অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এই ভয়ংকর স্বপ্নের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

দুই. শরীর বাঁ দিক করে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করবে। (মুসলিম, হাদিস : ২২৬১)

তিন. যে কাত হয়ে ঘুমিয়ে খারাপ স্বপ্ন দেখেছে, সে কাত পরিবর্তন করে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে শোবে। (মুসলিম, হাদিস : ২২৬২) অবস্থা বদলে দেওয়ার ইঙ্গিতস্বরূপ এটা করা হয়ে থাকে।

চার. খারাপ স্বপ্ন কারও কাছে বলবেন না। আর নিজেও এর ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করবেন না। (বুখারি, হাদিস : ৬৫৮৩)

পাঁচ. কিছু টাকা সদাকাহ করুন। কেননা সদাকাহ আল্লাহর আযাব/ ক্রোধকে প্রশমিত করে। বিপদকে হটিয়ে দেয়।

লিখাঃ মুহতারাম রিজওয়ানুল কবির সানিন।

 

Leave a Comment