শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী রেকর্ড সংখ্যক

শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ শাফি আহমেদ এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। আশঙ্কাজনক হারে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও। আজ শুক্রবার রাজধানীর শিশু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৭৬ শিশু। একে এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক রোগী ভর্তি থাকার রেকর্ড বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে ২০১৯ সালে এক দিনে হাসপাতালটিতে সর্বোচ্চ ৬৯ জন রোগী ভর্তি ছিল। আজ সেই রেকর্ড ভেঙে গেল।

চলতি আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে দেখা যায়। দ্বিতীয় সপ্তাহে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমতির দিকে ছিল। কিন্তু তৃতীয় সপ্তাহে এসে আবার ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল ও শ্যামলীর শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ২৫১ জন। তাদের মধ্যে গতকাল ১ হাজার ২৩৮ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তাদের মধ্যে ১ হাজার ১৪৫ জনই ভর্তি ছিল রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে।

চলতি বছর ৩১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এর আগে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, ওই বছর সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখের বেশি মানুষ। সরকারি হিসাবে, ওই বছর ডেঙ্গুতে মারা যায় ১৭৯ জন। বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা ৩০০ জনের বেশি।

ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত একটি ভাইরাস জ্বর। এই ভাইরাস বহন করে এডিস ইজিপ্টি ও এডিস এলবোপিকটাস প্রজাতির মশা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গু বিস্তারে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ভূমিকা রাখে গৃহপালিত ও নগরকেন্দ্রিক এডিস ইজিপ্টি মশা। ডেঙ্গু বিস্তারে ৫ থেকে ১০ শতাংশ ভূমিকা রাখে এডিস এলবোপিকটাস, যাকে ‘এশিয়ান টাইগার’ মশা বলা হয়। বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামেই এ মশা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে গবেষণা দরকার, কোন ওষুধে কোন মশা মরে, তা বের করা দরকার, মশার প্রজাতি ও আচরণভেদে আলাদা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও থাকতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে আজ শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব মশা দিবস।

Leave a Comment