রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে জড়াতে চায় না ন্যাটো: যুক্তরাষ্ট্র

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে জড়াতে চায় না ন্যাটো: যুক্তরাষ্ট্র ,ন্যাটো রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান সংঘাতে জড়াতে চায় না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসি নিউজের সঙ্গে এক আলাপে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের মার্কিন রাষ্ট্রদূত জুলিয়ান স্মিথ এ অবস্থানের কথা জানান।

তিনি বলেন, আমারা বিশ্বাস করি না ন্যাটোর এ সংঘাতে জড়ানোর কোনো প্রয়োজন আছে। আমরা নিরাপত্তা সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি ইউক্রেনে এবং সেটাই দিয়ে যাব।

তিনি বলেন, ন্যাটোর সম্প্রসারণ নীতি অব্যাহত থাকবে। এতে রাশিয়ার কোনো বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা পূর্ব ইউরোপে নিজেদের দীর্ঘমেয়াদী অবস্থান পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছি। রাশিয়া যা চায় আমরা তার বিপরীতটা করব।

তিনি রাশিয়ার পারমাণবিক বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় রাখার সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, আমরা পছন্দ করি না যে রাশিয়া কোন ধরণের পারমাণবিক সম্প্রসারণের কথা বলছে। আমরা রাশিয়াকে ইউক্রেন ছেড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছি।

ইউক্রেনের আকাশকে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা না করায় ন্যাটোর সমালোচনা করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ওলহা স্টেফানিশিনা।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেন্সকি বলেন, ন্যাটো যদি নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করতে না পারে তাহলে তারা আমাদের যুদ্ধবিমান পাঠাক।

অপরদিকে স্টেফানিশিনা বলেন, ইউক্রেনে বেসামরিক মৃত্যুর জন্য ন্যাটোও আংশিকভাবে দায়ী। কারণ ইউক্রেনের আকাশে নো-ফ্লাই জোন কার্যকর করতে রাজি হয়নি ন্যাটো। বেসামরিক জনগণ ও শিশুদের হত্যা করা হবে, তা জেনেও সিদ্ধান্ত না নেয়ার বিষয়টি অমানবিক। গতকাল জন্মগ্রহণ করে আজকে বাবা-মা হারানো শিশু দুটিসহ অন্য বেসামরিক নাগরিকদের রক্তে শুধু রাশিয়ানদের হাতই রঞ্জিত হয়নি।

আকাশসীমার কোনো অঞ্চলকে ‘নো-ফ্লাই জোন’ ঘোষণার অর্থ হলো সেখানে কোনো উড়োজাহাজ উড়তে পারবে না। সংবেদনশীল এলাকা যেমন- রাজপ্রাসাদ রক্ষা করতে কিংবা কোনো খেলার আয়োজনে অথবা বড় সমাবেশের ক্ষেত্রেও স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়ে থাকে।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের আকাশসীমাকে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হলে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার সরাসরি যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হবে।

তারা বলেন, ইউক্রেনকে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণার অর্থ হলো রাশিয়ার কোনো উড়োজাহাজকে গুলি করে নামাতে হবে। যাতে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে পশ্চিমারা।

মার্কিন বিমান বাহিনীর সাবেক জেনারেল ফিলিপ ব্রেডলভ ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ন্যাটোর সর্বোচ্চ মিত্রবাহিনীর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনকে তিনি বলেন, ‘আপনি যখন ঘোষণা দেবেন যে “এটি একটি নো-ফ্লাই জোন”, তখন আপনাকে একটি নো-ফ্লাই জোনের জন্য যা যা কিছু প্রয়োজন হয় সবকিছুই প্রয়োগ করতে হবে।’

তিনি বলেন, নো-ফ্লাই জোন ঘোষণার জন্য ইউক্রেন পশ্চিমা বিশ্বের কাছে যে আহ্বান জানাচ্ছে তাতে আমি সমর্থন জানাই। তবে এটি অত্যন্ত গুরুতর সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, ‘এটি যুদ্ধের সমতুল্য। যদি আমরা একটি নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করি, তাহলে আমাদের শত্রুদের গুলি চালানোর প্রস্তুতি নিয়ে নামাতে হবে এবং আমাদের নো-ফ্লাই জোনকে বাস্তবায়ন করতে হবে।’

Leave a Comment