উচ্ছিষ্টের বিধান

ধরুন, আপনি উযূর পানি এনে রেখেছেন। আকস্মিক ভাবে কোনো প্রাণী তাতে মুখ লাগিয়ে ফেলেছে। কিন্তু আপনি সেই পানি ফেলে উযূর জন্য আর একটু পানি নিবেন- এতটুকু পানি সেই জায়গায় আর পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় আপনি কী করবেন?
সেই পানি দ্বারাই উযূ করবেন নাকি তায়াম্মুম করবেন অথবা শুধু তায়াম্মুম করবেন? এই সম্পর্কে ফিকহ কী বলে?

সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আজকের আর্টিকেল। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক।

প্রথমত আমাদের জানা উচিত উচ্ছিষ্ট কী?

উচ্ছিষ্ট হলো ঐ পানি, যা মানুষ অথবা অন্য কোনো প্রাণী পান করার পর পাত্রে অবশিষ্ট থাকে। পানকারী প্রাণীর বিভিন্নতার কারণে উচ্ছিষ্টের বিধান বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।

১। মানুষের উচ্ছিষ্ট পাক এবং তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হবে। যদি তার মুখে নাপাকির চিহ্ন না থাকে। সে মুসলিম হোক কিংবা অমুসলিম এবং পবিত্র হোক কিংবা অপবিত্র। অনুরূপভাবে ঘোড়ার উচ্ছিষ্ট পাক তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হবে। মাকরূহ হবে না।
তদ্রুপ হালাল প্রাণীর উচ্ছিষ্ট পানি পাক এবং তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হবে, মাকরূহ হবে না। যেমন, উট, গরু, ভেড়া ও ছাগল প্রভৃতি।

২। বিড়ালের উচ্ছিষ্ট পাক, যদি তার মুখে নাপাকির চিহ্ন না থাকে। তাবে সাধারণ পানি থাকা অবস্থায় সেই পানি দ্বারা উযূ করা মাকরূহে তানযীহী।
অনুরূপভাবে, শিকারী পাখি যেমন বাজ ও চিল প্রভৃতির ঝুটা পানি পাক কিন্তু তা দ্বারা উযূ করা মাকরূহ।
তদ্রূপ গৃহে বসবাসকারী প্রাণী। যথা- ইঁদুর, সাপ প্রভৃতির ঝুটা পানি পাক কিন্তু তা দ্বারা উযূ করা মাকরূহ।

৩। খচ্চর ও গাধার ঝুটা সন্দেহাতীত ভাবে পাক। কিন্তু তাদের ঝুটা পানি দ্বারা উযূ করা সহীহ হবে কি-না এ ব্যাপারে সংশয় রয়েছে। অন্য কোনো পানি না পাওয়া গেলে তা দ্বারাই উযূ করবে এবং তায়াম্মুমও করবে। অতঃপর নামাজ পড়বে।

৪। শুকুরের ঝুটা পানি নাপাক। তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হবে না। তদ্রুপ কুকুরের ঝুটা নাপাক, তা দ্বারা পবিত্রতা হাসিল হবে না। অনুরূপ ভাবে সিংহ, চিতা ও নেকড়ে প্রভৃতি হিংস্র প্রাণীর ঝুটা নাপাক, তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হবে না।

উল্লেখ্য- যে প্রাণীর ঝুটা পাক তার ঘাম ও পাক। আর যে প্রাণীর ঝুটা নাপাক তার ঘাম ও নাপাক।

এই সমস্ত ফিকহ প্রদান করেছেন- “হযরত মাওলানা শফীকুর রহমান নাদভী (র:)

লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Leave a Comment