কূপের পানির হুকুম

যদি কূপে সামান্য নাপাকিও পড়ে, যেমন এক ফোঁটা রক্ত বা এক ফোঁটা মদ। তাহলে কূপের পানি নাপাক হবে এবং কূপের সব পানি বের করা আবশ্যক হবে

👉 যদি কূপে এমন কোনো প্রাণী পড়ে যা সত্তাগত ভাবে নাপাক, (যেমন- শূকর)। তাহলে কূপের সমস্ত পানি বের করা আবশ্যক হবে। শূকর কূপে মারা যাক কিংবা সেখান থেকে জীবিত বের হয়ে আসুক। তদ্রূপ তার মুখ পানি স্পর্শ করুক কিংবা না করুক।

👉 যদি কূপে এমন কোন প্রাণী পড়ে যা সত্তগত ভাবে নাপাক নয়, কিন্তু তার ঝুটা নাপাক। তাহলে কূপের সমস্ত পানি বের করা আবশ্যক হবে।

👉 যদি কূপে কোন মানুষ পড়ে জীবন্ত বের হয়ে আসে এবং তার শরীরে কোন নাপাকি না থাকে, তাহলে কূপের পানি নাপাক হবে না।

তদ্রূপ যদি কূপে খচ্চর, গাধা, বাজ বা চিল প্রভৃতি প্রাণী পড়ে জীবন্ত বের হয়ে আসে এবং তাদের শরীরে কোনো নাপাকি না থাকে তাহলে কূপের পানি নাপাক হবে না, যদি প্রাণীর মুখ পানিতে না পৌঁছে।

👉 যদি কূপে পতিত প্রাণীর লালা পানিতে মিশ্রিত হয় তাহলে সেটা পতিত প্রাণীর ঝুটার হুকুম ভুক্ত হবে। মশা, মাছি, বোলতা ও বিচ্ছু প্রভৃতি যেসকল প্রানীর মাঝে প্রবাহমান রক্ত নেই তা কূপে মারা গেলে কূপের পানি নাপাক হবে না। অনুরূপে মাছ, ব্যাঙ ও কাঁকড়া প্রভৃতি যাদের জন্ম ও বাস পানিতে, তারা কূপে মরার কারণে কূপের পানি নাপাক হবে না।

👉 যদি কূপের মধ্যে কুকুর বা ছাগলের আকারের কোনো বড় প্রাণী কিংবা কোন মানুষ মারা যায় আর মৃত দেহ ফুলে যাওয়ার আগেই তৎক্ষণাৎ বের করে ফেলা হয়। তাহলে ঐ পানি নাপাক হয়ে যাবে এবং কূপের সমস্ত পানি বের করা আবশ্যক হবে।

উল্লেখ্য- উপরে যে সকল ক্ষেত্রে কুয়ার সমস্ত পানি তুলে ফেলা আবশ্যক বলা হয়েছে, সেখানে সমস্ত পানি বের করা সম্ভব না হলে মাঝারি আকারের দুই শত বালতি বের করলেই যথেষ্ট হবে।

👉 যদি বিড়াল বা মুরগীর আকৃতির কোন প্রাণী কূপে মারা যায় তাহলে চল্লিশ বালতি পানি তুলে ফেলাই যথেষ্ট হবে। যদি আবশ্যকীয় পরিমাণ পানি বের করা হয়, তাহলে কূপ পাক হয়ে যাবে। সেই সাথে পানি উঠানোর দড়ি, বালতি ও পানি উত্তোলন কারীর হাতও পাক হয়ে যাবে।

👉 ঘোড়া, উট ও গরু সদৃশ প্রাণীর মল কূপে পড়লে কূপ নাপাক হবে না। তবে মল যদি এত অধিক পরিমাণে হয় যে, প্রতি বালতিতেই দুই একটি লেদা উঠে আসে তাহলে কূপ নাপাক হয়ে যাবে।
অনুরূপ ভাবে যদি কূপের মধ্যে যদি চড়ুই বা কবুতর এর বিষ্ঠা পড়ে তাহলে কূপের পানি নাপাক হবে না।

👉 যদি কূপে কোনো প্রাণী মারা গিয়ে ফুলে যায় এবং তা কখন কূপে পড়েছে তা জানা না যায়। তাহলে বিগত তিন দিন এবং তিন রাত পূর্ব থেকে কূপ নাপাক হওয়ার হুকুম দেওয়া হবে।
সুতরাং যদি ঐ কূপের পানি দ্বারা উযূ করে এবং নামাজ পড়ে তাহলে উক্ত দিনগুলোর নামাজের কাজা পড়তে হবে।
আর যদি উক্ত সময়ের মধ্যে সেই কূপের পানি গোসল অথবা কাপড় ধোয়ার কাজে ব্যবহার করে থাকে। তাহলে শরীর ও কাপড় পুনরায় ধৌত করতে হবে।

👉 যদি কূপে মৃত জন্তু পাওয়া যায় এবং তা ফুলে না যায় আর পতিত হওয়ার সময়ও জানা না থাকে। তাহলে শুধু বিগত এক দিন এক রাত থেকে কূপ নাপাক হওয়ার হুকুম দেওয়া হবে। সুতরাং বিগত এক দিন এক রাত এর নামাজের কাযা পড়তে হবে।

এই সমস্ত ফিকহ প্রদান করেছেন- “হযরত মাওলানা শফীকুর রহমান নাদভী (র:)

লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Leave a Comment