ঐ চোখ বুজে গেছে।আর কভু খুলবে না।দেখবে না চেয়ে তোমাকে,করবে না গল্প আর কারো সাথে। ঐ চোখ বুজে গেছে।খুশিতে চিকচিক করবে না আর,জলে টইটুম্বুর হবে নাসহস্র কষ্ট পেয়েও। ঐ চোখ বুজে গেছে,মেলবে না বন্ধ পাতাগুলো।ভুল করেও আর হাসবে না সে,কইবে না কথাও করো সাথে। ঐ চোখ বুজে গেছে,হারিয়ে গেছে তার শোভা।কাজলকালো চোখে ঢেকেছেসকল সৌন্দর্যের আভা। ঐ চোখ বুজে গেছে,মনি কি স্থির হয়ে গেছে?কিছু শক্তি নাই আর অবশিষ্ট?খোয়ালো সব অভিমান,থেমে গেছে অভিযান।নতুন ঠিকানার অভিযাত্রী হয়েচলেছে আপন গন্তব্যের পথে। চিন্তা করো না,আসছি আমিওতুমি দু’দিন আগে গেলেআমি না হয় দু’দিন পরে।যেতেই হবে, অযুহাতের নেই ঠাঁইমৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে সকলকেআর হিসেব দিতে হবে পাই…
Author: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
সে এসেছিল,শিউলী ঝরা সকালে।পা ভিজিয়েছিলশিশিরস্নাত ঘাসে। সে এসেছিল,একগুচ্ছ কবিতা নিয়ে।কলমের ছোঁয়ায়যেগুলো জীবন্ত হয়ে উঠেছিল। সে এসেছিল,খোলা চিঠি নিয়ে।খামে আবদ্ধ করেরাখেনি কোনো কথা। সে এসেছিল,আমাকে জানতে।আমি কেন অপরাহ্ণেচুপচাপ বসে থাকি!কেন বলি না আর কথাআগের মতোন। সে এসেছিল,মুঠোভর্তি কাঠগোলাপ নিয়ে।বিস্ময় আর আনন্দেরএক চিলতি হাসি দেখেসে ফিরে গেছে;ফিরে গেছেপরিতৃপ্ত মন নিয়ে। সায়াহ্নের আবছা আলোয়আমি দেখেছি,দেখেছি তার চলে যাওয়া।ধীর পায়ে এগুচ্ছে সেতার গন্তব্যের পথে। মায়ার টানেও আরপিছু ফেরেনি,ঘাড় ঘুরিয়ে একটুও দেখেনিআমার চোখের অশ্রুজল। তারই বিরহে আমি বিরহিত,সে জেনেও জানলো না।জানবার ভয়ে রাখলো নাচোখে চোখ। কেন এত ভয়?না পাওয়ার সংশয়,কেন হারিয়েও তাকেখুঁজে ফিরি বারবার? কলমে: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
বিদায় বেলা আর তাকিয়ো নাএকটু পিছু ফিরে,মায়াজালে আর জড়িয়ো নাচলে যাও তোমার নীড়ে। গোপন কর অস্বস্তি যতভালো থাকবে খুব,দিও না আর মিছে মায়ায়অকারণে ডুব। খাঁচায় বন্দি স্বপ্নগুলোআর রেখো না ধরে,উড়ুক তারা মুক্তভাবেরঙ্গিন ডানা মেলে। বাতায়নের কাঁধে মাথা রেখেনির্বাক তাকিয়ে কেন রও?নিয়তির লিখন না যায় খণ্ডনজেনেও কেন কষ্ট পাও? শিথানে রাখা মুঠোফোন জ্বালিয়েখোঁজো না তার অস্তিত্ব,কষ্ট তাতে বাড়বে ভীষণকমবে না কিন্তু একটুও। তিলে তিলে বোনা স্বপ্নছিঁড়ে ফেল সব,মিছে ছিল তোমার আবেগমূল্যহীন কলরব। অতীত স্মৃতির দুয়ার রেখমস্ত তালায় রুদ্ধ,কষ্ট হোক, খোলো না তবুনিজেকে রাখ আবদ্ধ। ডায়েরীর বুকে অক্ষরমেলায়প্রাণ ফিরে পাবে অনুভূতি,কলমের নিব বেয়ে ঝড়বে একদিনতোমাকে পাবার আকুলতি। কলমে: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আপনি যখন কোনো কাজে পা বাড়াবেন, আপনাকে থামিয়ে দেবার জন্য বেপরোয়া স্রোতের মতো ধেয়ে আসবে দুনিয়াবি বিপদ। ওখানেই দাঁড়ান। পিছনে ফিরে দেখা আপনার জন্য আবশ্যক নয়। আপনি কি দেখতে পান না, ঝড় যতই প্রবল হোক না কেন একটা সময় ঠিকই শান্ত হয়ে যায়। আপনার জীবনের যাবতীয় বিপদ, সবই কিন্তু আল্লাহ প্রদত্ত। আপনি যখন আল্লাহর দিকে ফিরে আসছেন, তখন আল্লাহ আপনাকে কিছু বিপদাপদের মাধ্যমে যাচাই করে নেন যে আসলেই আপনি ইসলামের পথে শক্ত অবস্থানে থাকতে পারবেন কি-না! যদিও আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা সব কিছুই জানেন, তবুও তিনি চান আপনি যেন নিজের প্রচেষ্টাতেই সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোন। একটি ইমারত…
মস্তিষ্কের নিউরনে কিছু প্রশ্নবাবলা কাঁটার মতোই বিঁধে আছে।শুধু বিঁধেই ক্ষান্ত হয়নি।প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রেছড়িয়ে দিয়েছে তার বিষ। বিষের যাতনায় রক্তেরটকটকে লাল রং ক্রমশবর্ণ পরিবর্তন করেছে।একসময় লালের অস্তিত্ববিলিন করে দিয়েরক্তে রাজত্ব করছে কালো রং। বিদঘুটে সেই বর্ণ নিয়েএকটা জীবন কি বাঁচতে পারে?না, কখনই পারে না।ফুসফুস চুপসে যায়,হৃৎপিণ্ড তার কাজে ইস্তফা দেয়। বিরামহীন রক্ত সঞ্চালন করেবুকের পিঞ্জরে থুকপুক শব্দেজানান দিত, সে নিরলস কর্মী।লাল রক্তের সাথে এতদিনের প্রণয়েসে এতটাই মোহগ্রস্ত ছিল যে,আকস্মিকভাবে কালো রং এর উপস্থিতিসে সহ্য করতে পারেনি। তার অন্তরে বিষাদের ছায়া লেপে দিয়েছিলসেই অন্ধকার রং।সহস্র চেষ্টাও সে এই ছায়া সরাতে পারেনি।ফিরে এসেছে শূন্য হাতে। কলমে: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।
দ্বিধা-দ্বন্দের দোলাচলেবেপরোয়াভাবে দুলছি আমিএকদণ্ড শান্তির খোঁজে;কিন্তু মিলছে না কিছুতেই। ভারাক্রান্ত মনে চলছেকালবৈশাখীর তাণ্ডব।নিজের ধ্বংসলীলা যেনসচক্ষে দেখছি।এলোমেলো হয়ে যাচ্ছেআমার আমিত্ব। খুব সামান্য আশ্রয়পাবার জন্য উৎকণ্ঠা আমি;আশ্রয় মিলছে না কোথাও।আমি যেন পাপের সমুদ্রেরঅতলে তলিয়ে যাচ্ছি। বাঁচার কোনো আশাই নেই।তবুও দু’চোখে খুঁজে ফিরিবাঁচার অবলম্বন।কিন্তু আবারও আমি ব্যর্থ;ব্যর্থ হয়ে নতমুখে ফিরে আসি। এই বিশাল পৃথিবীতে কিস্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার মতো কিঞ্চিৎজায়গাও আর অবশিষ্ট নেই?আজ আমি বড্ড শ্রান্ত, বড্ড ক্লান্ত।জীবন বহিবার মতো আরএতটুকুও জো নেই আমার তনু-মনে। আমার ঠাঁই মিলবে কোথায়?একটু জিরিয়ে নেবার স্থানও কিআমার ললাটে জুটবে না?আমি কি এতটাই অবাঞ্ছিত?এতটাই মূল্যহীন? কেন তবে জন্মালাম মানুষ হয়ে?একটা গাছ কিংবা তারশোভনীয় পাতা হয়ে জন্মাতাম যদি!তবুও তো একটু…
“নীলিমা জানার আগেই তুমি বৃদ্ধাশ্রমে ফিরে যাও। ও যেন কখনোই জানতে না পারে তুমিই আমার মা।”নিজের ছেলের মুখে এমন কথা শুনে আমি চোখের জল আটকাতে পারলাম না। সাদিকের বস নীলিমার চাচা। নীলিমার বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর তার নিঃসন্তান চাচা-চাচী তাকে নিজের মেয়ের মতো মানুষ করেছেন। আর সাদিক আমাকে যে বৃদ্ধাশ্রমে রেখেছিল ঐটাও নীলিমাদের। এসব আমি এখানে এসে জানতে পারি। বৃদ্ধাশ্রমে থাকাবস্থায় নীলিমা আর আমার মাঝে মা-মেয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমাকে ও “মা” বলে ডাকতো। নীলিমার বিয়ে যে আমার সাদিকের সাথে হয়েছে এটা আমি জানতে পারি নীলিমার সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া ছেলেকে দেখতে গিয়ে। ঐ যে দেখতে গেলাম আজ ১বছর পার হচ্ছে নীলিমা…
:এই ছেলেটা, একটু শুনবে?-শোনার জন্যই তো অধির আগ্রহে আমি অপেক্ষিত। বলো না কী বলবে। :আমায় কেন এত ভালোবাসো, সবটা কি বলবে?-উমমমমম! আমায় যে একটু ভাবতে হবে। খানিকটা সময় দেবে? :না, না, না। কোনো ভাবনা-চিন্তা ছাড়াই তোমায় বলতে হবে। আমি কিচ্ছু জানিনে।-এই রে, পড়লাম তো মুশকিলে! :হিহিহিহি। আচ্ছা থাকুক তবে সেই কথা। তাহলে এবার বলো তো, আমি না থাকলে তুমি কী করবে?-আমিও থাকবো না। তোমার পিছু পিছু চলে যাবো তোমার কাছে। :নিয়ম ভাঙ্গতে চাও?-শুধু তোমার জন্যে। :সাড়ে তিন হাত মাটির নীচে কেউ যে কারো সঙ্গী হয় না।-[নিশ্চুপ] :নির্বাক চেয়ে আছো যে? এভাবে কী দেখছো, বলো তো?-তোমাকে দেখি। যতবার দেখি ততবারই নতুন…
একসময় ভদ্রলোক পাগলিটির হাত ধরে গাড়ির দিকে ইশারা করলো। বোঝা যাচ্ছে, তিনি গাড়ি উঠতে বলছেন। এই কথা বলার সাথেই পাগলি এক ঝটকায় হাত সরিয়ে নিল। উঠে দাঁড়িয়ে ঐ ভদ্রলোককে ধাক্কাতে শুরু করলো। আয়াতের ভ্রু কুঁচকে গেল। সে কিছুই বুঝতে পারলো না। তবুও কৌতূহলী দৃষ্টিতে ঘটনার সবটা দেখে যেতে লাগলো। একপর্যায়ের পাগলিটি আইসক্রিমের বাটিটি ভদ্রলোকের দিকে ছুঁড়ে মারল। আইসক্রিম লেগে তার দামি কোর্টের অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে গেল। কিন্তু তিনি কিছুই বললেন না। তবুও তার দিকে ফিরে একটু হাসলেন। তারপর ঐ অবস্থায়ই গাড়িতে উঠতে উদ্যত, এমন সময় আয়াতের ইচ্ছে হলো দৌড়ে তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করবে, আপনি কে? আর পাগল মহিলাকে দেখিয়ে…
সে ক্লাস থেকে বেরিয়ে দেখে দুপুর ১২টা বাজতে এখনো ৫মিনিট বাকী। এরম শরীর নিয়ে হাঁটতে ভাল লাগে না। তাই সে একটি রিক্সা ডেকে নিয়ে উঠে পড়লো বাসার উদ্দ্যেশ্যে। রিক্সায় উঠার কিছুক্ষণ পরে সে চোখ বন্ধ করে থাকলো। হঠাৎ তার মনে হলো, চোখ বন্ধ করে রাখলে আজ আর পাগলিকে দেখা হবে না। তাই দ্রুত চোখ খুললো। চোখ খুলেই দেখে সে পাগলিটার অবস্থানের কাছাকাছি চলে এসেছে। আরও একটি দৃশ্য তার নজরে পড়লো। উচ্ছ্বাসিত মেয়েটির চোখ খুশিতে চকচক করে উঠল। ব্যাকুল কন্ঠে রিক্সাওয়ালাকে বললো তিনি যেন থেমে রিক্সাটা একপাশে সরিয়ে নেন। রিক্সাওয়ালা কিছুই বুঝতে পারলো না। কিন্তু মুখ ফুটে কিছু জিজ্ঞেসও করলো না।…
[৫]গত ৩বছর ধরেই আয়াত পাগলিকে প্রতিনিয়ত দেখছে। তার খুব ইচ্ছে ছিল নিজের হাতে কিছু খাবার বানিয়ে তাকে খেতে দিবে। কিন্তু সেবার তিনি যেভাবে তার দিকে রক্তবর্ণ চক্ষু নিয়ে তাড়িয়ে এসেছিলেন। তাতেই তার এই ইচ্ছে পুরোটাই মরে গেছে। সেই প্রথম দেখা থেকে এখন পর্যন্ত, আয়াত সকাল এবং দুপুরে যতবারই তাকে খেতে দেখেছে। ততবারই সে লক্ষ করেছে, উনি সবসময়ই ভালো খাবার দিয়ে উদরপূর্তি করেন। এই বিষয়টা আয়াতকে খুব ভাবায়। এছাড়াও প্রত্যেক শীতে তার সাথে নতুন নতুন লেপ-কম্বল দেখা যায়। এগুলোর ব্যবস্থা কে করেন? কোনো পথচারী? সেটাও মনে হয় না। কেননা কংক্রিটের এই শহুরে মানুষগুলো নিজেদের নিয়ে খুব বেশি ব্যস্ত। তারা নিশ্চয়ই কোনো…
তুই কি আমার কালো চোখেওয়াটার প্রুফ কাজল হবি?তুই কি আমার শখের শাড়িরবিছিয়ে রাখা আঁচল হবি?তুই কি আমার দু’হাত ভরাডজন খানিক চুড়ি হবি?তুই কি আমার দীঘল চুলেরলম্বা একটা বেণী হবি?তুই কি আমার বাঁকা দাঁতেরমন ভুলানো হাসি হবি?তুই কি আমার বাগানে ফোঁটাকয়েক গুচ্ছ কাঠগোলাপ হবি?তুই কি আমার উপন্যাসেরঐ পাগল ছেলেটা হবি?তুই কি আমার বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে রাখাশুকনো গোলাপ-পাঁপড়ি হবি?তুই কি আমার মনের আকাশেরএক ফালি চাঁদ হবি?তুই কি আমার বোতলে রাখাএকমুঠো জোনাক হবি?তুই কি আমার ঠোঁটের পাশেছোট্ট একটা তিল হবি?তুই কি আমার পুরোটা জুড়েভাললাগার চাদর হবি?তুই কি আমার আকাশ দেখারসঙ্গী হবি?এইরে! অবাক হলি? হিহিহিহি!!আচ্ছা, শোন-উদাস বিকালে কিংবা বিষণ্ন সন্ধ্যায়অথবা মন খারাপের রাতেএকটু সঙ্গ…