“নিঝুম নিস্তব্ধ রাতে ঘুমিয়েছে শহর, প্রণয়ের আলাপনে নিষ্পন্ন রাত্রির শেষ প্রহর।” ঘোর অমাবস্যা কিংবা অঘোর পূর্ণিমা। নিঃসঙ্গতার অমানিশায় ভরাডুবি খেতে খেতে মুদিত চোখে নেমে এসেছিল একরাশ তন্দ্রা। সহস্র অভিযোগ, এন্তার আক্ষেপ আর এক-আকাশ ভালোবাসার কথা হয়নি-কো ব্যক্ত করা। প্রভুর প্রেমে ব্যাকুল এই হৃদয় এক মুহূর্তও আর থাকতে চায় না কোমল বিছানার জঠরে। অবসন্ন শরীরটা আড়মোড়া ভেঙ্গে নেমে গেল মালিকের সামনে দাঁড়াবার প্রস্তুতি নিতে। খানিক বাদে জানালার পর্দা সরিয়ে দিলে, কৌমুদীরা হুড়মুড়িয়ে নেমে এলো। তাদের হাস্যোজ্জ্বল আলোর ঝলকানিতে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে শুরু হয়ে যায় এক গভীর কথোপকথন। রবের ভালোবাসায় রাত জাগানিয়া কিছু গল্প যদি আমাদের করে তোলে আরো উদ্বুদ্ধ, আরো উদ্দীপ্ত; তবে…
Author: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
আসমান বই রিভিউ “ভালোবাসা” শুধু চার শব্দের সমষ্টি নয়। এর সাথে মিশে আছে মানুষের আবেগ, আকাঙ্খা এবং আকুলতা। হাজারো ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে আমরা ভালোবাসার মানুষটাকে ভালো রাখতে চাই, তার মুখে হাসি ফোটাতে চাই। অনেক বেশি ভালোবাসতে গিয়ে আমরা যে ভুলটা করি তা হলো- হৃদয়ের পুরোটা জুড়ে তাকে বসাই। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে আমরা আমাদের জীবনঘুড়ির লাটাইটা নিজের অজান্তেই তার হাতেই তুলে দেই। এরপর ইচ্ছেমত সে আমাদের নাচাতে নাচাতে একসময় খোলা আকাশের বুকে ছেড়ে দিয়ে নিঃসঙ্গ করে চলে যায়। তারপর? বিষাদের ঘূর্ণিপাকে ঘুরতে ঘুরতে শুরু হয় আমাদের বিপর্যয়ের নতুন জীবন। যে জীবনে হৃদয় ক্ষরণের তিক্ত যন্ত্রণা ভিতরটাকে জ্বালিয়ে দেয়। একটু শান্তি লাভের…
কথা ছিল এক তোড়া কাঠগোলাপ আপনার হাতের উষ্ণতা নিয়ে আমার হাত ছোঁয়াবে। কথা ছিল ঐ দূরে, যেখানে পাহাড়ের অনিন্দ্য রূপে জুড়ায় দু’নয়ন, সবুজের কোল ঘেঁসে অবিরাম ঝরে পড়ে ঝর্ণার জল, এঁকেবেঁকে বয়ে চলা শুভ্র নদীর মুগ্ধতা মেশানো দৃশ্য দুজনে উপভোগ করব। কথা ছিল শ্রাবণ সন্ধ্যায় দেরিতে ফেরার অভিমানে বেলকনির এক কোণায় যখন পাশ ফিরে রবো, হঠাৎই নাকে আসবে যখন দোলনচাঁপার ঘ্রাণ, চমকে উঠে খোঁপায় হাত বুলিয়ে পাব একমুঠো ভালোবাসার প্রমাণ। কথা ছিল তারাখচিত আকাশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বসে যাব দুজনে তারা গণনার এক ছেলেমানুষি প্রতিযোগিতায়। কথা ছিল আপনার চোখের কার্নিশে লুকানো জলের একান্ত সঙ্গী হবো। কথা ছিল আপনার বুক পকেটে…
যদি গোধূলির শেষ লগ্নে বিষাদে ছেঁয়ে যায় মন,যদি অপেক্ষায় থেকে থেকে উৎকন্ঠায় বেড়ে যায় হৃৎস্পন্দন, যদি নিয়মের বেড়াজাল অক্টোপাসের মতোন আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রাখে,যদি আমার চোখ শিল্পীর তুলিতে তোকে আঁকে, যদি অভিমানে না ঝরে শিউলি আর বকুল,যদি ডাহুকের কন্ঠস্বরে আরো প্রগাঢ় হয় বিষণ্ণতার সুর, যদি যান্ত্রিক শহরে মৌনতা জমাই শুধু তোরই কারণে,যদি রঙধনুর সাতরঙে স্বপ্ন সাজাই তোর হাজারো বারণে। যদি বর্ষায় ভিজে তোর দিকে বাড়াই একগুচ্ছ কদম ফুল,যদি অজানা আশঙ্কায় করে ফেলি তোকে ছোঁয়ার মত ভুল। তবুও কি রোজ উপেক্ষা বাণে বিদ্ধ হবো আমি?তবুও কি আগুনরঙা চোখে ওমন করে তাকাবি?তবুও কি রাখবি না চোখ আমার আকুলিত দুই চোখে?তবুও কি বাঁধবি না…
🍀সদকায়ে জারিয়ার খাত সমূহ🍀 আমরা সবাই জানি, স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যুর পর একজন মানুষের আমলনামা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু আপনি যদি দুনিয়াতে এমন কিছু কাজ, কথা বা সম্পদ রেখে যেতে পারেন যার সওয়াব আপনার আমলনামায় মৃত্যুর পরও যুক্ত হতে থাকবে। এমন কিছু সদকায়ে জারিয়ার খাত নিচে উল্লেখ করছি- ১। কোনো পিচ্চিকে সুরা ফাতিহা শিখান। কারণ কোনো নামাজই এই সূরা ছাড়া শুদ্ধ হয় না। এই পিচ্চি কাউকে শেখালে তার সমান সওয়াবও পাবেন, আবার যাকে শেখালেন সে যদি রেগুলার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, তবে যতবার ঐ সূরা পড়ছে ততবার আপনার আমল নামায়ও সওয়াব লেখা হবে। সুবহানাল্লাহ! ২। রাস্তায় কিংবা বাড়ির আশেপাশে ফলের গাছ লাগান।…
সুখের খোঁজ চাও?চেয়ে দেখ কত সুখ লেগে আছে-অলকনন্দার পাড়ে,প্রেয়সীর কাজলচোখে,অবারিত সবুজ প্রান্তরেপুরোনো চিঠির ভাঁজে। সুখের খোঁজ চাও?চেয়ে দেখ কত সুখ লেগে আছে-মুক্ত পাখির ডানায়,বাবার মৃদু শাসনে,রিমঝিম বৃষ্টিতে,শৈশবের স্মৃতিতে। সুখের খোঁজ চাও?চেয়ে দেখ কত সুখ লেগে আছে-মাটির সোঁদা গন্ধে,মায়ের ভেজা আঁচলে,প্রভাতের ফেরিতে,শিউলির সাদাতে। সুখের খোঁজ চাও?চেয়ে দেখ কত সুখ লেগে আছে-নিশুতি রাতের মায়ায়,ভরা পূর্ণিমার রাতে,আলমিরার দেরাজে,নৌকার পাটাতনে। সুখের খোঁজ চাও?চেয়ে দেখ কত সুখ লেগে আছে-পুকুরঘাটের সিঁড়িতে,নষ্ট ঘড়ির কাঁটাতে,কবুতরের ঝাঁকে,শুকনো বকুলে। সুখের খোঁজ চাও?চেয়ে দেখ কত সুখ লেগে আছে-মোমবাতির আলোতে,আধোআধো বুলিতে,তেপান্তরের মাঠে,সুন্দরী কাঠে। সুখের খোঁজ চাও?চেয়ে দেখ কত সুখ লেগে আছে-কৃষাণের হাসিতে,পৌষের পুলিতে,ঈদের সালামিতে,বকের সারিতে। সুখের খোঁজ চাও?চেয়ে দেখ কত সুখ লেগে…
কোন মেঘ থেকে বৃষ্টি হবে কিনা, তা কি সেই মেঘের আকৃতি দেখে কিছুটা আন্দাজ করা যায়? আমাদের দেশে সাধারণত বর্ষাকালেই বেশি বৃষ্টি হয়। সারা বছরে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ আমরা পেয়ে থাকি বর্ষাকালেই। এই সময়ে যে বৃষ্টিপাত হয়, তা বিশাল পুঞ্জ- মেঘ, বজ্র-মেঘ, মধ্যস্তর-মেঘ আর নিম্বোস্ট্যাটাস মেঘ থেকেই সাধারণত হয়ে থাকে। সুতরাং যদি আকাশে ঘন কালো মেঘের আধিক্য দেখা যায় বা ঘন কালো মেঘস্তর থাকে, তাহলে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে, বুঝতে হবে। আবার এই সময় যদি পূর্ব দিক থেকে হাওয়া বয়, তবে বাইস-ব্যালট সূত্র প্রয়োগ করে বোঝা যায়, উত্তর বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ক্ষেত্র রয়েছে। এমন অবস্থায় বেশ জোরের সঙ্গে…
সূর্যমুখী সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকার রহস্য সমন্ধে জানুন। সূর্যের নাম নিয়ে ফুলের নাম রাখা হয়েছে সূর্যমুখী। সে যেন সব সময় সূর্যের দিকে মুখ করে রয়েছে। একেবারে ফোটা ফুলে এ ব্যাপারটি লক্ষ্য করা না গেলেও শীর্ষ কুঁড়িতে এটা নজরে আসে। সূর্যমুখী ফুলের কুঁড়ি ভোর না হতেই পূর্ব দিকে তাকিয়ে থাকে। সূর্য ওঠার পরে সে সূর্যের আকাশ পথের দিকে মুখ করে মুখটাকে ওপর দিকে তোলে, মাঝ দুপুরে কুঁড়ি উর্ধ্ব পানে চেয়ে থাকে। বিকেলে কুঁড়ির মুখ আবার পশ্চিম দিকে। এ ভাবেই সারাদিন সূর্যের দিকে মুখ রেখে সূর্যমুখীর কুঁড়ি পূর্ব থেকে পশ্চিমে আপনাআপনি মুখ ঘুরিয়ে নেয়। সূর্যমুখী ফুলের কুঁড়ি কেন এভাবে সারাদিন সূর্যের দিকে…
কাঙ্গো উপত্যকার পিগমিরা খর্ব হয় কেন? কঙ্গো উপত্যকা ক্রান্তীয় বৃষ্টি বহুল অঞ্চলে অবস্থিত। এখানে মধ্যাহ্নে সূর্য রশ্মি প্রায় সারা বছর লম্বভাবে কিরণ দেয়। আর দিন ও রাত্রির পরিমাণও সারা বছর সমান থাকে। উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের কাছে মিলিত হয়েছে। ফলে ইন্টার ট্রপিক্যাল কনভার্জেন্সে এর সৃষ্টি হয়েছে। এখানে প্রচন্ড উত্তাপ। উত্তাপের আধিক্য এবং প্রচুর বাতাসে জলীয় বাষ্প এখানকার অধিবাসীদের জীবন দূর্বিষহ করে তোলে। অত্যাধিক উষ্ণতা এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় তা উদ্ভিদের পক্ষে অনুকূল। তাই এখানে গভীর অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এই অঞ্চলে মাটি খুবই অনুর্বর। বলে রাখা ভাল, বনভূমি দিয়ে মাটির উর্বরতা শক্তি বিচার করা যায় না।…
আলসেমি কিংবা সময় অপ্রতুলতায় সাধারণত রোজনামচা লেখা হয় না আমার। আজ খানিকটা শখ জাগলো, বিদায়লগ্নে দিবসটিকে কলমের ছোঁয়ায় সযত্নে তুলে রাখি স্মৃতির দেয়ালে। তারই প্রয়াসে আজ লিখতে বসা। সন্ধ্যা পেরিয়ে এখন মধ্যরাত। কি নিস্তব্ধ চারিপাশ! কোনো কোলাহল নেই, নেই যান্ত্রিকতার নাদ। আছে শুধু ঝিঁঝিঁদের কলতান। কোনো অবকাশ নেই, তারস্বরে ডেকে যাচ্ছে অবিরাম। আমি বেশ মনোযোগী শ্রোতা হয়ে শুনছি তাদের। একটা ছন্দ আছে! তাল, লয় সব ঠিক রেখে তারা ডেকে যাচ্ছে। কোথায় যেন খানিকটা অন্ত্যমিল খুঁজে পাচ্ছি আমি।কপাল কুঁচকে ভাবতে লাগলাম, এ কোন অপার্থিব সূরে তারা আবিষ্ট করে রেখেছে তামাম দুনিয়া?!ভাবনার অনেকটা সময় পলপল করে অতিবাহিত হলো। আমি কেবল ভেবেই চললাম….উঁহু!…
আমার অজান্তেই কথা দেওয়া-নেওয়া হবার পর প্রচলিত রীতি অনুসারে- আপনি যখন প্রথম দেখতে এসেছিলেন আমাকে, একনজর আপনাকে দেখেই বুঝেছি আমার এবার অঙ্গার হবার পালা। যখন দেখেছি টাখনু ঢাকা আপনার প্যান্টের কাপড়ে, তখনই বুঝেছিআপনি লুন্ঠন করতে এসেছেন আমার সুপ্ত ইচ্ছের সমূদয় সুখ। যখন মাথা তুলে দেখেছি আমার রাসূলের সুন্নাত নেই আপনার মুখে,তখনই বুঝেছি আঁধার রাতে এবার আমার একলা পথ চলা। আপনার বেপরোয়া জীবনে যখন আমাকে জোর করে ঠেলে দেয়া হলো,আমি তখন নিরবে জায়নাম ভিজিয়েছি।কষ্টের আতিশয্যে ঠোঁটে ফুটতো না কথা,চোখে নামত শুধু শ্রাবণের ধারা। সংসার জীবনে আপনাকে কখনই জোর করে নামাজে পাঠাতে পারিনি,শুক্রবার বাদে সপ্তাহের আর কোনো দিন আপনি আল্লাহকে সিজদা করেছিলেন…
আপনার আকাশ ভালোলাগে বলে, আকাশের পানে চেয়ে কেটে যায় আপনার অখণ্ড অবসর।কিন্তু আমার তো আকাশ নেই, প্রিয়ম।আমার আছেন শুধুই আপনি।তাই আপনি যখন আকাশের প্রেমে মাতোয়ারা,আমি তখন প্রকৃতির সকল সৌন্দর্য উপেক্ষা করে শুধু আপনাতেই চেয়ে থাকি।আমার মুগ্ধতা মেশানো অপলক নয়ন সুখ খুঁজে পায় আপনার তনুশ্রীতে।এত মায়া! এত মায়া কেন আপনার আঁখি জোড়াতে?মুখে ছেড়ে রাখা দাঁড়ি, ঠোঁটের বাঁ দিকের তিলটা আপনাকে করে তুলেছে আরও চিত্তাকর্ষক, আরও অনুপম। আমি বারবার হেরে যাই আপনার মুচকি হাসিতে,আপনি যখন বাধ্য করেন আপনার চোখে চোখ রাখতে,বিশ্বাস করুন প্রিয়ম, আমি খুন হয়ে যাই। আমার হৃদপিণ্ড বের হয়ে ফেটে যেতে চায়,আমার মস্তিষ্কের নিউরনগুলো থমকে যায়,আমার শ্বাস বন্ধ হবার উপক্রম…