রূপকথার চাঁদের বুড়ির ব্যাপারটা আসলে কী?
চাঁদের গায়ে যে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়, তাকেই আমরা চাঁদের কলঙ্ক নামে অভিহিত করে থাকি। ছেলেবেলায় ঠাকুমা- দিদিমার মুখে চাঁদ ও চাঁদের গায়ের ঐ কালো ছোপগুলি নিয়ে কত গল্পই না শুনেছি।
চাঁদের গায়ে কালো ছোপের যে দাগ, সেগুলো নাকি সুবিশাল ঝাঁকড়া গাছ। তার তলায় এক বুড়ি বসে চরকায় সুতা কাটছে। আবার কখনো কখনো মাকড়সার সাদা জাল বাতাসে উড়ে যাওয়া দেখে আমরা বলতাম, ঐ যে দেখ চড়কা কাটা বুড়ির সুতা উড়ে যাচ্ছে!
এ গেল তো বাংলাদেশের কথা। এরকম কত ছেলে ভুলানো গল্পই না পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচলিত আছে তার ইয়ত্তা নেই।
কিন্তু বর্তমান শতকের শিশুদের এত সহজে ভুলানো সম্ভব নয়। কারণ জ্যোতির্বিদরা দীর্ঘ গবেষণার মাধ্যমে চাঁদ সমন্ধে যেসব অত্যাশ্চর্য তথ্য সংগ্রহ করেছেন, সে সঙ্গে এডুইন অলড্রিন এবং নীল আর্মস্ট্রং চাঁদ থেকে ঘুরে এসে যে সব তথ্য দান করেছেন, তাতে আমাদের বহু দিনের ধ্যান ধারণা ভেঙ্গে একদম তছনছ হয়ে গেছে।
চাঁদের বুড়ি বা মানুষের অস্তিত্ব দূরের কথা, একটি কীট বা পতঙ্গেরও দেখা মেলে না চাঁদে। আবার বুড়ির ঝাঁকড়া গাছ বা গাছপালা খুঁজতে গেলে একটি লতা কিংবা গুল্ম প্রভৃতি কোনো কিছুই পাওয়া যাবে না।
চাঁদে পানি নেই, নদী নেই, সমুদ্র নেই। তবে কী আছে চাঁদে?
চাঁদের বুকে আছে শুধু খানাখন্দ। ছোট- বড় বিভিন্ন গর্ত আর মৃত আগ্নেয়গিরির বিচিত্র সমাবেশ। আগ্নেয়গিরির অতিকায় সব জ্বালা মুখ ও সুবিশাল সব গর্তকেই পৃথিবীর একমাত্র উজ্জ্বল উপগ্রহ চাঁদের গায়ে দেখা যায়। এগুলোকেই দূর থেকে কালো ছোপের মত দেখা যায়। এইগুলি চাঁদের কলঙ্ক বলে চিহ্নিত হয়েছে।
সুতরাং বলা যায় চাঁদের বুড়ি নিয়ে যেসব কথা প্রচলিত ছিল বা এখনো আছে, তা পুরোটাই ভ্রান্ত বিশ্বাস ছাড়া আর কিছুই নয়।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।