সূর্যের উত্তাপ গাছের পাতাকে কেন উত্তপ্ত করতে পারে না?
গ্রীষ্মের প্রচন্ড উত্তাপে লোহা, ইট ও পাথর প্রভৃতি থেকে শুরু করে ধূলিকণা পর্যন্ত সবকিছু উত্তপ্ত হয়। এমন কি রাস্তার পিচ পর্যন্ত গলতে দেখা যায়। কিন্তু গাছের পাতায় হাত দিলে তাদের উত্তপ্ত মনে হয় না। বরং স্বাভাবিক উষ্ণতাই উপলব্ধি হয়। কেন এমন হয়?
গাছের প্রতিটি কান্ড এবং পাতা অসংখ্য কোষস্তরের সমষ্টি। গাছের পাতার দুইটি ত্বক দ্বারা উভয় দিক আবৃত করে রাখে। আর গাছের পাতার গায়ে অসংখ্য ছিদ্র বা রন্ধ্র থাকে। ইংরেজিতে তাদের বলে স্টোমাটা। সূর্যের কিরণ পেলে ঐসব রন্ধ্রের মুখ খুলে যায়। তখন ঐ রন্ধ্র পথে বায়ু থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড ভেতরে প্রবেশ করে।
আর একইভাবে অক্সিজেন নির্গত করে দেয়। সূর্যালোকের অভাবে, অর্থাৎ রাত্রির অন্ধকারে পাতার রন্ধ্রগুলি বন্ধ হয়ে যায়। তখন আর কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ বা অক্সিজেন বর্জন কোনটিই পাতার পক্ষে করা সম্ভব হয় না। দিনের বেলায় সূর্যালোকে যখন পত্র রন্ধ্রের মুখ খোলা থাকে, তখন সেগুলি দিয়ে জলীয় বাষ্প নির্গত হয়ে গাছের জলীয় পদার্থের ভারসাম্য বজায় রাখে।
আবার প্রধান মূল ও শাখামূল মাটি থেকে রস শোষণ করে গাছের কান্ডে সরবরাহ করে। পরে তা চলে যায় পাতায়। আবার পাতার সাহায্যে অতিরিক্ত পানিটুকু বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। এই প্রক্রিয়া টেন স্পাইরেশন বা স্বেদন নামে পরিচিত।
পাতার এ স্বেদন প্রক্রিয়াই তাকে প্রচন্ড গরমের দিনেও উত্তপ্ত হতে দেয় না। অর্থাৎ পাতা স্বাভাবিক উষ্ণতা অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়। আবার স্বেদন ক্রিয়ার মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্ন মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্ন বাষ্পীভবন ঘটে। এর ফলেই পাতা কখনই উষ্ণ হতে পারে না।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া