শিউলী কথন

আমি কার্তিকের এক শুভ্র শিউলিফুল।
পরিস্ফুটনের আগে বৃন্তের যত্নেই বেড়ে উঠেছি;
প্রতিকূলতার বিক্ষোভে ঢাল হয়ে
আমাকে আগলিয়ে রেখেছিল বৃন্ত।
সেই বৃন্তে ভর দিয়েই আমি
শীতের নিশিথে আত্মপ্রকাশ করেছি।

আমার নবরূপে আকৃষ্ট মৃত্তিকা
হাগছানি দিয়ে আমায় ডেকেছে।
মৃত্তিকার মিষ্টি কথায় বোনা মায়াজাল
আমি চিনতে পারিনি।
আমার বুঝেও আসেনি আমি ফেঁসে যাচ্ছি।
যেকোনো কিছুর বিনিময়ে আমি চেয়েছি
ঐ ডাকে সাড়া দিতে।

আমাকে আগলিয়ে রাখা ঐ বৃন্তের কথা
আমার স্মরণেই ছিল না
মৃত্তিকার মায়ার টানেই যেন আমি
বৃন্তের মায়া ত্যাগ করেছি।

কুয়াশা বিছানো ভোরে
ধূলোয় লুটিয়ে পড়ে
বাড়িয়েছি মৃত্তিকার শোভা।
কিন্তু মৃত্তিকার জগতে আমি যেন অবাঞ্ছিত,
সেও আর আমাকে চিনতে পারছে না।

হাজারো ধূলোকণায় মলিন হয়েছি আমি,
পিষ্ট হয়েছি পদপৃষ্ঠে।
মৃত্তিকাতেই বিলীন হয়েছে আমার নবরূপ।

হে জগৎবাসী!
আমার এই অধঃপতনে তোমরা কি শিক্ষা নাও না?
কেন চিন্তিত হও না প্রকৃতির এই ক্ষয়ে যাওয়াতে?
আর শিক্ষা নাও না বলেই তোমরা
মিছে মায়ার অন্তর্জালে আটকে পড়ো আর
ছটফট করে ঘটাও মনের মৃত্যু।

দুঃশ্চিন্তা কিনে ঘর সাজাও,
সারা নিখিলে সুখ খুঁজে আবার
অসুখের ঘরে এসে নিদ্রা যাও!

কলমে: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Leave a Comment