কী এমন জিনিস যা মৃত্যুর ন্যায় আপনাকে খুঁজছে!

একটা ছোট প্রশ্ন দিয়ে আমার মূল লেখাটি শুরু করি।

আচ্ছা, বলুন তো, মৃত্যু যেভাবে মানুষকে খুঁজে, ঠিক সেভাবেই আর কোন জিনিসটা মানুষকে খুঁজে?

হয়তো অনেকেই জানেন কিংবা অনেকেই জানেন না। যারা জানেন না তাদের বলছি, সেই জিনিসটা হচ্ছে “রিযিক্ব”।

জি, আপনি ঠিকই দেখেছেন। মৃত্যু যেভাবে মানুষকে খুঁজে, মানুষের রিযিক্ব সেভাবেই মানুষকে খুঁজে।

কী? অবাক হলেন?
আসুন, আপনাকে আরো একটু অবাক করে দেই।

আরেকটা অবাক করা তথ্য হলো, “মানুষ তার নির্ধারিত রিযক্ব ভোগ না করে মারা যাবে না।” এটা আমার কথা না। এটি হাদিসেই উল্লেখ আছে।

আপনি সেই হাদিসটা কি শুনেছেন? যা আব্দুল্লাহ ইবনে মাসাঊদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত।
তিনি বর্ণনা করেছেন, “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “কোনো ব্যক্তির জন্য নির্ধারিত রিযক্ব যতদিন না সে পাবে, ততদিন তার মৃত্যু হবে না”। [ইবনু মাজাহ:২১৪৪]

এবার আপনি বিজ্ঞ চোখে তাকিয়ে আমায় জিজ্ঞেস করতে পারেন, কারো যদি রিযক্ব বাকি থাকতেই তার মৃত্যু নিকটবর্তী হয়, তাহলে?

আমি হাসিমুখে আপনাকে জানাচ্ছি, তাহলে মৃত্যু পূর্বে সেই ব্যক্তি তুলনামূলক বেশি খেয়ে তার জন্য নির্ধারিত রিযক্ব শেষ করে ফেলবে।

এবার আপনি কুঞ্জিত কপালে আমায় আবার জিজ্ঞেস করতে পারেন, আর যদি কারো হায়াত থাকতেই সে তার বরাদ্দকৃত রিযক্ব শেষ করে ফেলে, তবে?

তবে আর কী? মৃত্যুর পূর্বে তার খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ হয়তো কোনো কারণে সে কিছুই মুখে তুলতে পারবে না।

বুঝেছেন ক্যালকুলেশনটা?

এবার আপনি আপনার ভাবনাকে ছড়িয়ে দিয়ে ভাবতে থাকুন। আপনার মৃত স্বজন, যাদের মৃত্যু আপনি খুব কাছে থেকে দেখেছেন; চিন্তা করতে থাকুন তাদের রিযক্ব সম্পর্কে।
তারা কি মৃত্যুর পূর্বে বেশি খেয়েছে নাকি কম খেয়েছে কিংবা নিয়মমাফিক যেভাবে খাবার খেত সেভাবেই খেয়েছে।

তাহলে এই বিষয়টা সহজেই আপনার বোধগম্য হবে, ইন শা আল্লহ।

কখনো ভেবেছেন? একজীবনের প্রতিটা সেকেন্ডও যদি আমরা কাজে লাগাই তবুও মহান আল্লাহর মহিমা এবং তাঁর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে শেষ করতে পারবো না। কিন্তু যতটুকু পারি, ততটুকুও কি আমরা আদায় করি?

প্রতিবার তিনবেলা পেট ভরে ভাত খেয়ে আমরা ভাবি, এটা তো আমার প্রাপ্য। কিন্তু কখনো কি চিন্তা করেছি, এই রোজগারটুকু করার এবং ভাত হয়ে আমার সামনে আসার অবদান কার? কে চেয়েছিল জন্য আমার গলা দিয়ে ভাত নামলো? কীভাবে সেটা আমার ক্ষুধা নিবারণ করে আমাকে পরিতৃপ্ত করে তুললো?

আমরা খুব কম মানুষই এসব নিয়ে ভাবি। কিন্তু আমাদের প্রত্যেকের উচিত এসব নিয়ে ভাবা এবং প্রতিনিয়ত বলা “আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আ’লামিন” অথবা শুধু “আলহামদুলিল্লাহ” বলা।

লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া

Leave a Comment