যেভাবে গ্রাহক টাকা দিয়েছেন, সেই পদ্ধতিতে ফেরত পাবেন

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৩০ জুনের পরে গ্রাহকদের টাকা আটকে পড়েছে ২১৪ কোটি টাকা। আগে থেকে আটকে ছিল ২৯৮ কোটি টাকা। দুটি মিলিয়ে এখন আটকে আছে ৫১২ কোটি টাকা। গ্রাহকদের আটকে থাকা এই টাকা ফেরতের ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় আছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত কমিটির তৃতীয় ও শেষ বৈঠক শেষে মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এ তথ্য জানান। সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে গঠিত ১৫ সদস্যদের এ কমিটিকে গত ১২ অক্টোবর এক মাস সময় দিয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে তদারকি ও পরিবীক্ষণের আওতায় আনার কৌশল নির্ধারণ করতে বলা হয়েছিল। কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনা; অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক লেনদেনের তথ্য, সম্পদের বিবরণ, ব্যাংক হিসাবের স্থিতি এবং অর্থ ও সম্পদ উদ্ধারের পদ্ধতি নির্ধারণ; ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ ইত্যাদি।

সফিকুজ্জামান বলেন, নির্ধারিত সময় কাল বুধবারই (আজ) তিনি প্রতিবেদন পাঠাবেন। সে জন্য কার্যপরিধি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে সফিকুজ্জামান বলেন, ‘যে পদ্ধতিতে গ্রাহক টাকাটা দিয়েছেন, সে পদ্ধতিতে, অর্থাৎ অনলাইনেই তাঁরা টাকা ফেরত পাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেবে। এখানে আইনি কিছু বিষয় আছে, তাই আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের জন্য অপেক্ষা করছি।’ টাকা ফেরতের বিষয়টি চার মন্ত্রীর বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানান সফিকুজ্জামান। বলেন, ‘এ ব্যাপারে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। নাম বলতে চাই না, একটি কোম্পানির বড় ধরনের টাকা আটকে আছে।’ কতটি ই-কমার্সের বিরুদ্ধে কতটি মামলা রয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে সফিকুজ্জামান বলেন, নিয়মিত মামলা চারটি। এ ছাড়া ১১টি মামলা হয়েছে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে। সব মিলিয়ে ১৫টি মামলা। যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই, তাদের গ্রাহকদের টাকা শিগগির দেওয়া যাবে।


গ্রাহকদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, টাকাগুলো পেমেন্ট গেটওয়েতে আছে। আইনি বাধা না থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানো হবে। ইভ্যালি বিষয়ে সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে হাইকোর্টের গঠন করা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, হাইকোর্ট কমিটি করে দিয়েছে। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। গত ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর ই-কমার্স খাতের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল প্রতিটি ১৬ সদস্যের করে আরও দুটি আলাদা কমিটি করেছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে কারিগরি কমিটি। ডিজিটাল কমার্স-সংক্রান্ত সব কার্যক্রম, ডিজিটাল কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসা, লেনদেনজনিত ভোক্তা বা বিক্রেতার অসন্তোষ ও প্রযুক্তিগত সমস্যা নিরসন করাই এ কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য। ই-কমার্স আইন ও ই-কমার্স কর্তৃপক্ষ গঠনের বাস্তবতা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে অন্য কমিটি।

Leave a Comment