যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা চায় রাশিয়া: পুতিন

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেন সীমান্তে সামরিক শক্তি (সৈন্য ও যুদ্ধসরঞ্জাম) অনেক গুণ বাড়িয়েছে রাশিয়া। অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকের আশঙ্কা ছিল, ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়বেন পুতিন। কিন্তু নানা জল্পনা-কল্পনার পর এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।

আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে চায় রাশিয়া। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এটা (যুদ্ধ) পছন্দ করি না, আর আমরা এটা চাইও না।’

এ সময় পুতিন বলেন, ইতিমধ্যে রাশিয়া নিরাপত্তা প্রস্তাব নিয়ে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে, যেটি এই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করছে। আগামী বছরের শুরুর দিকেই বিষয়টি নিয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় একটি সমঝোতা বৈঠক শুরু হতে পারে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি আশা করি পরিস্থিতি উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে একটা ভালো লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে।’

সম্প্রতি ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তে হাজার হাজার সেনার সমাবেশ ঘটায় রাশিয়া। তবে ইউক্রেনে হামলা করতেই রাশিয়া এটা করছে—যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া।

রাশিয়া বলছে, এ জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি চায় তারা। আর সেটি হলো পশ্চিম ইউরোপে যেন ন্যাটো সামরিক বাহিনী কোনো তৎপরতা না চালায়। পশ্চিমা সহযোগীদের সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্ক জোরদার হওয়ায় রাশিয়া নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে বলে দাবি দেশটির। রাশিয়া আশঙ্কা করছে, ইউক্রেনের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ন্যাটো তাদের ভূখণ্ডে মিসাইল নিক্ষেপ করতে পারে।

এর আগে গত বুধবার রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে মস্কো। ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায় এই বৈঠক হবে বলে জানান তিনি।

ইউরোপিয়ান ও ইউরেশিয়ান অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কারেন ডনফ্রাইডের বক্তব্যের পর সের্গেই লাভরভ এমন কথা বললেন। গত মঙ্গলবার কারেন ডনফ্রাইডও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানুয়ারির বৈঠক নিয়ে কথা বলেন। তবে এ সময় তিনি রাশিয়ার প্রস্তাবকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে সতর্ক করে দেন।

গত সপ্তাহে নিরাপত্তা নিয়ে দুটি খসড়া প্রস্তাব পশ্চিমা বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করেছে রাশিয়া। একটিতে ন্যাটোকে উদ্দেশ করে এবং অপরটিতে যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করা হয়েছে। এদিকে ইউরোপের স্বার্থ রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কাছে গত বুধবার আবেদন জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, বর্তমানে ইউরোপের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

Leave a Comment