মোক একনা ঘর দেন

লালমনিরহাট প্রতিবেদকঃ অনাহারে অদ্ধাকারে দিন কাটে হামার “মোর তিন শতক ভুই (জমি) আছে তা খাস। ভালো একনা ঘর নাই। একনা ভাঙ্গা ঘর। কোন রকম পলি দিয়ে তো ও গাত (গায়ে পানি পড়ে) ও কনা ঘরতে চার কোনা ছেলে (মেয়ে) নিয়া থাকোং (থাকি)” কত মানুষ ঘর পায় মুই না পাং এভাবেই কথাগুলো বলেন সোনাবি বেগম। আইতে (রাতে) ঘুমির পাং না, ঝড়িতে (বৃষ্টিতে) দিনোত (দিনে) তো ভাল থাকোং (থাকি) আর আইতে (রাতে) ঘর দিয়ে পানি পড়ে। ফাকা জাগা (ফাঁকা-জায়গা) বাতাস ঢোকে ঘরের ভেতরোত। বেটা কোনা ১২বছর হয় প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডও পাং নাই কাও করি ও দেয় না। মুই তো মোর কষ্টের কতা (কথা) চেয়ারম্যান-মেম্বারের কতবার কছুং। কাও মোর বেটা টার (ছেলেটার) ভাতা করে দেয় নাই৷ সরকার থেকে যদি একনা ঘর পানুং হয় তাইলে বাকি জীবনটা ভালো করে কাটনুং (কাটিল) হয়।

এভাবেই নিজের কষ্টের কথাগুলো বলছিলেন লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ৩নং তুষভান্ডার ইউনিয়নের ১নং কাশীরাম মুন্সীর বাজার এলাকার আব্দুল জলিলের স্ত্রী সোনাবি বেগম (৫০)।

জানা গেছে, প্রায় ১০বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। ৩বছর ধরে স্বামী অচল এখন পর্যন্ত ভাগ্যে জোটেনি তার ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি কার্ড কিংবা মাথা গোঁজার মতো একটা সরকারি ঘর। এমন কি সরকারি কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচিতে নাই তার নাম।

দেখা যায়, কয়েকটি টিন দিয়ে তৈরি একটি টিনের ঘরে বৃষ্টিতে ৩ছেলে-মেয়েকে নিয়ে কোনোমতে কষ্টে বসবাস করছেন সোনাবি বেগম। অভাবের তাড়নায় ২মেয়েকে অন্য বাড়িতে রেখে ঝিয়ের কাজ করতে হচ্ছে। আর ১ছেলে চায়ের দোকানে কাজ করে বউ নিয়ে চলছে তার সংসার আর ১ছেলে প্রতিবন্ধী। আর তার স্বামী একজন চানাচুর বিক্রেতা কিন্তু আজ ১বছর ধরে করোনার কারণে তার ও ব্যবসা চলে না আর। সারাদিন পরিশ্রম করে রাতে একটু ভালোভাবে ঘুমাতেও পারেন না তারা। আর কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ভিজে যায় বিছানাপত্র। তবুও বেঁচে থাকার তাগিদে জরাজীর্ণ ভাঙ্গা টিনের চালায় রাতভর ছটফট করে অচল স্বামী-সন্তানকে নিয়ে থাকতে হয় হচ্ছে সোনাবি বেগমকে। মুজিববর্ষে সরকারি একটি ঘর পাওয়ার আকুতি জানান সোনাবি বেগম।

তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এ অসহায় মহিলা সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য বলেই মনে করি।

সূত্র/লালমনি.

Leave a Comment