প্রথম মহাকাশ যাওয়ার তালিকার শীর্ষে মানুষ না

এটা এখন শৌখিনতার তালিকায় যুক্ত হয়ে গেছে , মহাকাশে মানবজাতির ঘুরতে যাওয়া এখন এতটাই সহজলভ্য হয়ে গিয়েছে যে । তবে মহাকাশ অভিযানের শুরুর দিকের গল্পটা ছিলো একদমই ভিন্ন । তবে কারণে অভিযানের শুরুর দিকে পরীক্ষা চালানো হয় মাছি, কুকুর, বানরের সাথে । তবে প্রথম সফল মহাকাশ অভিযানের কৃতিত্ব কোন মানুষের নয়, বানরের । এটিই সত্যি যে মানবসভ্যতার ইতিহাসে প্রথম মহাকাশ জয় করে পৃথিবীতে ফিরে আসা স্তন্যপায়ী প্রানী মানুষেরই পূর্বসূরি বানর শুনতে একটু অবাক লাগলে ! তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক, অভিযানের শুরুর দিকের গল্প এমন ছিল ।

১৯৪৮ সালটি ছিলো । প্রথম অভিযান জুন মাসে পৃথিবীর প্রথম স্পেস রকেট ভি-২ তে ভর করে শুরু স্তন্যপায়ী প্রানী নিয়ে । তবে ভন ব্রাউন নামে এক জার্মান ইঞ্জিনিয়ারের আবিষ্কার করা এই ভি-২ রকেটটি বায়ুমণ্ডল আর মহাকাশের সীমানার খুব কাছাকাছি যেতে পারতো তারা । আর যে কারণ, ভি-২’ই ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিলোমিটার বা ৫০ মাইল উপরে উঠে যেতে পারত । রেসাস প্রজাতির একটি পুরুষ বানরকে, যার নাম ছিলো আলবালর্ট তবে এই ভি-২ রকেটে করে মহাকাশ দিকে তাক করিয়ে তাতে বসিয়ে দেওয়া হয় । সমর্থ হয়েছিলো ভি-২ বানরটিকে নিয়ে ভুপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬২ কিলোমিটার উপরে উঠতে। কারণ উৎক্ষেপণের সময়েই সম্ভবত অক্সিজেনের অভাবে মারা যায় আলবার্ট তবে এই অভিযান সফল ছিলো না।

মার্কিন বিজ্ঞানীরা এতে দমে যাননি অবশ্য । তবে পরের বছর (১৯৪৯ সাল) তারা একই প্রজাতির আরেকটি বানরকে নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন তারা । দ্বিতীয় আলবার্ট তার নাম দেওয়া হলো । তবে আবারো ভি-২ রকেটে চড়িয়ে মহাকাশে ছোড়া হলো দ্বিতীয় অ্যালবার্টকে। প্রায় ১৩৪ কিলোমিটার উপরে গিয়ে মহাশূন্য পরিভ্রমণ করলেও বাধ সাধে ফেরার পথে। তার বাহনের প্যারাসুট কাজ না করায় তীব্র বেগে আলবার্ট আছড়ে পড়ে পৃথিবীর বুকে জীবিত অবস্থায় সে ভূপৃষ্ঠ থেকে । তবে তাই এটিও সফল মহাকাশ যাত্রা হিসেবে গণ্য হয়নি । তবে বলে রাখা ভালো, নিরাপদ উৎক্ষেপণ, কক্ষপথে ঢোকা এবং পাইলটের জীবিত ফিরে আসাকে সফল যাত্রা হিসেবে গণ্য করে ফেডারেশন অব অ্যারোনটিকস ইন্টারন্যাশনালের (এফএআই) ।

এই চলমান অভিযানে প্রাণ হারায় এরমাঝে ১৯৪৯ সালেই ৩য় অ্যালবার্ট এবং চতুর্থ অ্যালবার্টও । তবে এরপর ১৯৫১ সালে ব্যার্থতার শিকার হন অ্যালবার্ট ফাইভ মতে । তবে প্যারাসুটের ইস্যুতে প্রাণ হারায় অ্যালবার্ট নামের শেষ বানর । তবে এ কারণ অ্যালবার্ট সিক্সকে দেওয়া আরেক নাম ছিলো ইয়োরিক ছিল । তবে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭২ কিলোমিটার বা ৪৫ মাইল উপরে গিয়েছিলো ইয়োরিক এবং সফলভাবে পৃথিবীতে ফেরতও এসেছিলো । তবে ল্যান্ড করার কয়েক ঘন্টা পরেই সম্ভবত হিট স্ট্রোকে মারা যায় ইয়োরিক। তবে এ কারণ, সংক্রীর্ণ ক্যাপসুলটির ভেতরে নিউ মেক্সিকোর সুর্য্য’র গরমের মধ্যে উদ্ধারকারী দলের অপেক্ষায় ছিলো ইয়োরিক।

Leave a Comment