পরকীয়া প্রেমের জেরে স্বামীকে হত্যা, গ্রেফতার স্ত্রী

লালমনিরহাটের সদরে পরকীয়া প্রেমের জেরেই স্বামী আব্দুল জলিলকে (৩৫) হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনদিন পর স্বীকার করেছেন স্ত্রী মমিনা বেগম ও পরকীয়া প্রেমিক গোলাম রব্বানী।


বুধবার (২৮ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মারুফা জামাল হত্যার সাথে জড়িত স্ত্রী মমিনা বেগম ও পরকীয়া প্রেমিক পল্লী চিকিৎসক গোলাম রব্বানীকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণের কথা নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতারকৃত স্ত্রী মমিনা বেগম (২৮) লালমনিরহাট পৌরসভার সাপটানা মাজাপাড়া এলাকার মোল্লা মিয়ার মেয়ে।আদালতে প্রেরণের আগে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত আলামত সংগ্রহ করে পুলিশের বিশেষ টিম।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মৃত জলিলের কুলখানির অনুষ্ঠান শেষে জলিলের বড় ভাই আব্দুর রশিদ জলিলের স্ত্রী মমিনা বেগমকে তাদের সাথে গ্রামের বাড়িতে যেতে বলে। এ কথা শোনে মমিনা বেগম রেগে গিয়ে বলেন, আমি আপনাদের বাড়িতে আর কোন দিনই যাব না। আমি আবার বিয়ে করে এখানেই থাকবো। মমিনা বেগমের মুখে এ কথা শোনার পর আব্দুর রশিদের সন্দেহ হয়। সন্দেহের ফলে পরের দিন (২৫ জুলাই) তার ছোট ভাই জলিলকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে পুলিশ সুপার বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মারুফা জামালের নেতৃত্বে সদর থানা পুলিশ বিভিন্ন ভাবে তদন্ত শুরু করেন।

তদন্ত শুরুর পরে তাদের ফোন কল যাচাই করে (২৭ জুলাই) মঙ্গলবার সকালে তাদের ৪ জনকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে এসে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে জলিলকে হত্যার কথা প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করেন মমিনা বেগম ও পরকীয়া প্রেমিক পল্লী চিকিৎসক গোলাম রব্বানী। হত্যার সাথে সম্পৃক্ততা না থাকায় অপর দুজনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

পরবর্তীতে আজ বুধবার সকালে স্ত্রী মমিনা বেগম ও পরকীয়া প্রেমিক গোলাম রব্বানীকে ১৬৪ দারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, কুরবানী ঈদের দ্বিতীয় দিন একসঙ্গেই ছিলেন পরকীয়া প্রেমিক গোলাম রব্বানী ও আব্দুল জলিল। ওইদিন গভীর রাতে গোলাম রব্বানী কৌশলে জলিলকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

বাড়িতে ফিরে স্বামী জলিল ঘুমিয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে বালিশ চাপায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্ত্রী মমিনা বেগম। এসময় যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে জলিলের মৃত্যু হয়। এরপরে স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত হলে ভোরের দিকে মমিনা বেগম চিৎকার শুরু করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে জলিলের নাকে ও মুখে রক্ত বের হতে দেখেন এবং পরকীয়া প্রেমিক পল্লী চিকিৎসক গোলাম রব্বানী মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং তারা তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করেন।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার (ওসি) শাহা আলম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জলিলকে হত্যা করা হয়েছে বলেই পুলিশ নিশ্চিত হতে পেরেছে। নিহতের স্ত্রী মমিনা বেগম ও পরকীয়া প্রেমিক গোলাম রব্বানী সরাসরি হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় কথা স্বীকার করায় আজ সকালে তাদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Comment