ট্রেনের ডিজিটাল টিকিটে অ্যানালগ ভোগান্তি

এখন সাধারণ দিনেও সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ঘণ্টাখানেক ট্রেনের টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইট ও অ্যাপে প্রবেশ করা কঠিন। কখনও ঢুকতে পারলেও ট্রেন বাছাই করা ও টাকা পরিশোধে সমস্যা হচ্ছে। টাকা পরিশোধে বিড়ম্বনায় টিকিট পাওয়া যায় না। লিঙ্ক ডাউন হয়ে যায়। ১৪ বছর ধরে রেলের টিকিট ব্যবস্থাপনা ও বিক্রির দায়িত্বে থাকা অপারেটর কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমের (সিএনএস) দাবি, একসঙ্গে ৪০ লাখ ‘হিট’ গ্রহণের সক্ষমতা রয়েছে তাদের সার্ভারের। বাস্তবে সামান্য চাপ পড়লেই অ্যাপ ও ওয়েবে প্রবেশ করতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।

গ্রাহক ভোগান্তি ছাড়াও রেলের টিকিট বিক্রিতে দরপত্রেও জটিলতা রয়েছে। মামলা চলায় অপারেটর নিয়োগ করতে না পারায়, চুক্তি ছাড়াই টিকিট বিক্রি চলছে।

মঙ্গলবার ঠিক সকাল ৮টায় এই প্রতিবেদক ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করেন ৪১ মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড গতির ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে। ১৭ মিনিট লাগে শুধু প্রবেশ করতে। এরপর ট্রেন ও যাত্রার তারিখ সিলেক্ট করতে গেলে ‘লোডিং’ দেখায়। ৯ মিনিট অপেক্ষায় ট্রেন ও যাত্রার তারিখ সিলেক্ট হয়। এরপর টিকিট আছে কিনা তা দেখাতে ফের লোডিং দেখায়। এভাবে ২০ মিনিট প্রচেষ্টার পর হঠাৎ সাইটটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বার্তা আসে ‘দিস সাইট ক্যান নট বি রিচড (এই সাইটটি পাওয়া যাচ্ছে না)’।

নতুন করে চেষ্টায় ছয় মিনিটে ট্রেন, যাত্রার তারিখ, টিকিট সব সিলেক্ট করার পর টাকা পরিশোধের অপশন পর্যন্ত পৌঁছা গেল ৮টা ৫৪ মিনিটে। সেখানে ক্লিক করার পর বারবার বার্তা আসে ‘সামথিং ওয়েন্ট রং (কিছু একটা ভুল হয়েছে)’। টাকা পরিশোধ করা যাচ্ছিল না। টাকা পরিশোধ করতে না পারায় টিকিটও পাওয়া যায়নি। এই প্রায় এক ঘণ্টা সময়ে অনেক দূরের এলাকা থেকে স্টেশনে গিয়েই টিকিট কাটা সম্ভব।
এ বিষয়ে সিএনএসের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক মেজর (অব.) জিয়াউল হাসান সারোয়ারের ভাষ্য, ‘এমনটি হওয়ার কারণ নেই। আমাদের সার্ভার একসঙ্গে ৪০ লাখ ডিভাইস থেকে যুক্ত হতে সক্ষম। মিনিটে ১৫ হাজার পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করা সম্ভব।’

পুরো প্রক্রিয়াটির স্ট্ক্রিনশট থাকার কথা ও তাদের ফেসবুক পেজে আসা যাত্রীদের অভিযোগের তথ্য তুলে ধরলে জিয়াউল হাসান বলেন, ‘কারিগরি কারণে এমনটি হতে পারে’। তিনি জানান, ঢাকা থেকে এখন প্রতিদিন কাউন্টার, অনলাইন ও অ্যাপে ১৭ হাজার টিকিট বিক্রি হয়। এর মধ্যে অনলাইন ও অ্যাপে সাড়ে আট হাজারের মতো টিকিট বিক্রি হয়। সাধারণ প্রবণতা হলো, শুরুতেই এসব টিকিট সিলেক্ট করেন ক্রেতারা। ফলে পরে যারা সাইটে প্রবেশ করেন তারা কাজ করতে পারেন না। টাকা পরিশোধের বিষয়টি শুধু সিএনএসের হাতে নেই, বিকাশ, রকেট ছাড়াও যেসব ব্যাংক এ সেবা দেন তাদের সক্ষমতারও বিষয় রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশলের শিক্ষার্থী দাইয়ান ইবনে মুবিন বলেন, টিকিটের সংখ্যা বিষয় নয়। একটি ওয়েবসাইট কোনোদিনই সকাল ৮টা থেকে ঘণ্টাখানেক স্বাভাবিক কাজ করে না। সত্যিই যদি সকালে একসঙ্গে লাখ লাখ মানুষ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতেন, তাহলে তো রেলের টিকিট বিক্রির সাইট দেশের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা সাইটের একটি হতো। কিন্তু অ্যালেক্সা র‌্যাঙ্কিংয়ে সাইটটি সেরা পঞ্চাশে নেই। তাই লাখ লাখ মানুষ সাইট ভিজিট করেন- এ দাবি ঠিক নয়। আসলেই যদি একসঙ্গে ৪০ লাখ হিট নেওয়ার সক্ষমতা থাকে, তাহলে সাইটে প্রবেশে সমস্যা হওয়ার কারণ নেই।

অনলাইনে প্রতিটি টিকিটের ক্রেতাকে ২০ টাকা চার্জ দিতে হয়। এর মধ্যে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা পায় বিকাশ, রকেটসহ যেসব ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি সাড়ে ছয় টাকা পায় অপারেটর সিএনএস। কাউন্টার থেকে বিক্রি হওয়া প্রতিটি টিকিটের দুই টাকা ৯৯ পয়সা পায় অপারেটর।

২০০৭ সালে পাঁচ বছরের জন্য ৯ কোটি ৯১ লাখ টাকায় সিএনএসকে অপারেটর নিয়োগ করে রেল। ট্রেনের সংখ্যা ও স্টপেজ বাড়ায় পরিশোধ করে ১৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। দরপত্র ছাড়াই ২০১২ সালে চুক্তির মেয়াদ দুই বছর বাড়ে। ২০১৪ সালে আবার পাঁচ বছরের জন্য ৩১ কোটি ৩২ লাখ টাকায় নিয়োগ পায় সিএনএস। তবে ট্রেন ও আসন বাড়ায় ৪১ কোটি ৯০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে চুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে চুক্তি ছাড়াই টিকিট বিক্রি করছে সিএনএস।

কর্মকর্তারা জানান, পাঁচ বছরে ২০ কোটি টিকিট বিক্রি করতে দরপত্রে ৯টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ৮ কোটি টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে। প্রতিটি টিকিট বিক্রির জন্য অপারেটরকে চার টাকা ৩৫ পয়সা চার্জ দিতে প্রাক্কলন করে রেল। সহজ লিমিটেড বাংলাদেশ ও সিনেসি আইটির যৌথ উদ্যোগ (জেভি) ২০ কোটি টিকিট বিক্রি করে দিতে ৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং সিএনএস ২৪ কোটি টাকা প্রস্তাব করে। তবে সহজের প্রস্তাব ছিল তারা ওয়েবসাইট ও অ্যাপ থেকে ২৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা বিজ্ঞাপন বাবদ আয় করে। রেলের কাছ থেকে নেবে বাকি পাঁচ কোটি টাকা। এ হিসেবে টিকিটপ্রতি তারা মাত্র ২৫ পয়সা নেবে।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি এ যুক্তিতে সহজকে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত করে। সিএনএস এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটে (সিপিটিউ) অভিযোগ করে। তার রায়ে বলা হয়, টিকিটপ্রতি চার টাকা ৩৫ পয়সা প্রাক্কলন ছিল অতিমূল্যায়িত। এতে প্রতীয়মান হয় দুর্নীতির জন্য এমন প্রাক্কলন করা হয়েছে। সহজ বিজ্ঞাপন বাবদ যে ২৫ কোটি নেওয়ার প্রস্তাব করেছে, তা রেলেরই টাকা। এ টাকা নেওয়ার এখতিয়ার অপারেটরের নেই।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রধান রেলের যুগ্ম মহাপরিচালক রাশিদা গণি সুলতানা সমকালকে বলেন, সরকারের অর্থ সাশ্রয়ে সর্বনিম্ন দরদাতাকে তারা মনোনীত করেছিলেন। এ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই।

দরপত্রের কারিগরি প্রস্তাবে বর্তমান অপারেটর দাবি করেছিল, একসঙ্গে ৪০ লাখ হিট গ্রহণে সক্ষম তাদের সার্ভার। কারিগরি মূল্যায়নে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তাহলে কেন বিড়ম্বনা হচ্ছে- এ প্রশ্নে রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী সমকালকে বলেন, সিএনএস বলেছে তাদের ৪০ লাখ হিট নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। তা যদি না হয়, তাহলে কাগজপত্রসহ জানতে চাওয়া হবে আসলেই এ সক্ষমতা আছে কিনা।
দরপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। করোনার কারণে মামলা শেষ করা যাচ্ছে না। রেল চেষ্টা করছে মামলা নিষ্পত্তি করে নতুন দরপত্র আহ্বান করতে। কিন্তু মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত রেলের কিছুই করার নেই।

এখন সাধারণ দিনেও সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ঘণ্টাখানেক ট্রেনের টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইট ও অ্যাপে প্রবেশ করা কঠিন। কখনও ঢুকতে পারলেও ট্রেন বাছাই করা ও টাকা পরিশোধে সমস্যা হচ্ছে। টাকা পরিশোধে বিড়ম্বনায় টিকিট পাওয়া যায় না। লিঙ্ক ডাউন হয়ে যায়। ১৪ বছর ধরে রেলের টিকিট ব্যবস্থাপনা ও বিক্রির দায়িত্বে থাকা অপারেটর কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমের (সিএনএস) দাবি, একসঙ্গে ৪০ লাখ ‘হিট’ গ্রহণের সক্ষমতা রয়েছে তাদের সার্ভারের। বাস্তবে সামান্য চাপ পড়লেই অ্যাপ ও ওয়েবে প্রবেশ করতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।গ্রাহক ভোগান্তি ছাড়াও রেলের টিকিট বিক্রিতে দরপত্রেও জটিলতা রয়েছে। মামলা চলায় অপারেটর নিয়োগ করতে না পারায়, চুক্তি ছাড়াই টিকিট বিক্রি চলছে।মঙ্গলবার ঠিক সকাল ৮টায় এই প্রতিবেদক ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করেন ৪১ মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড গতির ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে। ১৭ মিনিট লাগে শুধু প্রবেশ করতে। এরপর ট্রেন ও যাত্রার তারিখ সিলেক্ট করতে গেলে ‘লোডিং’ দেখায়। ৯ মিনিট অপেক্ষায় ট্রেন ও যাত্রার তারিখ সিলেক্ট হয়। এরপর টিকিট আছে কিনা তা দেখাতে ফের লোডিং দেখায়। এভাবে ২০ মিনিট প্রচেষ্টার পর হঠাৎ সাইটটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বার্তা আসে ‘দিস সাইট ক্যান নট বি রিচড (এই সাইটটি পাওয়া যাচ্ছে না)’।নতুন করে চেষ্টায় ছয় মিনিটে ট্রেন, যাত্রার তারিখ, টিকিট সব সিলেক্ট করার পর টাকা পরিশোধের অপশন পর্যন্ত পৌঁছা গেল ৮টা ৫৪ মিনিটে। সেখানে ক্লিক করার পর বারবার বার্তা আসে ‘সামথিং ওয়েন্ট রং (কিছু একটা ভুল হয়েছে)’। টাকা পরিশোধ করা যাচ্ছিল না। টাকা পরিশোধ করতে না পারায় টিকিটও পাওয়া যায়নি। এই প্রায় এক ঘণ্টা সময়ে অনেক দূরের এলাকা থেকে স্টেশনে গিয়েই টিকিট কাটা সম্ভব।এ বিষয়ে সিএনএসের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক মেজর (অব.) জিয়াউল হাসান সারোয়ারের ভাষ্য, ‘এমনটি হওয়ার কারণ নেই। আমাদের সার্ভার একসঙ্গে ৪০ লাখ ডিভাইস থেকে যুক্ত হতে সক্ষম। মিনিটে ১৫ হাজার পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করা সম্ভব।’পুরো প্রক্রিয়াটির স্ট্ক্রিনশট থাকার কথা ও তাদের ফেসবুক পেজে আসা যাত্রীদের অভিযোগের তথ্য তুলে ধরলে জিয়াউল হাসান বলেন, ‘কারিগরি কারণে এমনটি হতে পারে’। তিনি জানান, ঢাকা থেকে এখন প্রতিদিন কাউন্টার, অনলাইন ও অ্যাপে ১৭ হাজার টিকিট বিক্রি হয়। এর মধ্যে অনলাইন ও অ্যাপে সাড়ে আট হাজারের মতো টিকিট বিক্রি হয়। সাধারণ প্রবণতা হলো, শুরুতেই এসব টিকিট সিলেক্ট করেন ক্রেতারা। ফলে পরে যারা সাইটে প্রবেশ করেন তারা কাজ করতে পারেন না। টাকা পরিশোধের বিষয়টি শুধু সিএনএসের হাতে নেই, বিকাশ, রকেট ছাড়াও যেসব ব্যাংক এ সেবা দেন তাদের সক্ষমতারও বিষয় রয়েছে।বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশলের শিক্ষার্থী দাইয়ান ইবনে মুবিন বলেন, টিকিটের সংখ্যা বিষয় নয়। একটি ওয়েবসাইট কোনোদিনই সকাল ৮টা থেকে ঘণ্টাখানেক স্বাভাবিক কাজ করে না। সত্যিই যদি সকালে একসঙ্গে লাখ লাখ মানুষ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতেন, তাহলে তো রেলের টিকিট বিক্রির সাইট দেশের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা সাইটের একটি হতো। কিন্তু অ্যালেক্সা র‌্যাঙ্কিংয়ে সাইটটি সেরা পঞ্চাশে নেই। তাই লাখ লাখ মানুষ সাইট ভিজিট করেন- এ দাবি ঠিক নয়। আসলেই যদি একসঙ্গে ৪০ লাখ হিট নেওয়ার সক্ষমতা থাকে, তাহলে সাইটে প্রবেশে সমস্যা হওয়ার কারণ নেই।অনলাইনে প্রতিটি টিকিটের ক্রেতাকে ২০ টাকা চার্জ দিতে হয়। এর মধ্যে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা পায় বিকাশ, রকেটসহ যেসব ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি সাড়ে ছয় টাকা পায় অপারেটর সিএনএস। কাউন্টার থেকে বিক্রি হওয়া প্রতিটি টিকিটের দুই টাকা ৯৯ পয়সা পায় অপারেটর।২০০৭ সালে পাঁচ বছরের জন্য ৯ কোটি ৯১ লাখ টাকায় সিএনএসকে অপারেটর নিয়োগ করে রেল। ট্রেনের সংখ্যা ও স্টপেজ বাড়ায় পরিশোধ করে ১৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। দরপত্র ছাড়াই ২০১২ সালে চুক্তির মেয়াদ দুই বছর বাড়ে। ২০১৪ সালে আবার পাঁচ বছরের জন্য ৩১ কোটি ৩২ লাখ টাকায় নিয়োগ পায় সিএনএস। তবে ট্রেন ও আসন বাড়ায় ৪১ কোটি ৯০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে চুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে চুক্তি ছাড়াই টিকিট বিক্রি করছে সিএনএস।কর্মকর্তারা জানান, পাঁচ বছরে ২০ কোটি টিকিট বিক্রি করতে দরপত্রে ৯টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ৮ কোটি টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে। প্রতিটি টিকিট বিক্রির জন্য অপারেটরকে চার টাকা ৩৫ পয়সা চার্জ দিতে প্রাক্কলন করে রেল। সহজ লিমিটেড বাংলাদেশ ও সিনেসি আইটির যৌথ উদ্যোগ (জেভি) ২০ কোটি টিকিট বিক্রি করে দিতে ৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং সিএনএস ২৪ কোটি টাকা প্রস্তাব করে। তবে সহজের প্রস্তাব ছিল তারা ওয়েবসাইট ও অ্যাপ থেকে ২৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা বিজ্ঞাপন বাবদ আয় করে। রেলের কাছ থেকে নেবে বাকি পাঁচ কোটি টাকা। এ হিসেবে টিকিটপ্রতি তারা মাত্র ২৫ পয়সা নেবে।দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি এ যুক্তিতে সহজকে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত করে। সিএনএস এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটে (সিপিটিউ) অভিযোগ করে। তার রায়ে বলা হয়, টিকিটপ্রতি চার টাকা ৩৫ পয়সা প্রাক্কলন ছিল অতিমূল্যায়িত। এতে প্রতীয়মান হয় দুর্নীতির জন্য এমন প্রাক্কলন করা হয়েছে। সহজ বিজ্ঞাপন বাবদ যে ২৫ কোটি নেওয়ার প্রস্তাব করেছে, তা রেলেরই টাকা। এ টাকা নেওয়ার এখতিয়ার অপারেটরের নেই।দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রধান রেলের যুগ্ম মহাপরিচালক রাশিদা গণি সুলতানা সমকালকে বলেন, সরকারের অর্থ সাশ্রয়ে সর্বনিম্ন দরদাতাকে তারা মনোনীত করেছিলেন। এ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই।দরপত্রের কারিগরি প্রস্তাবে বর্তমান অপারেটর দাবি করেছিল, একসঙ্গে ৪০ লাখ হিট গ্রহণে সক্ষম তাদের সার্ভার। কারিগরি মূল্যায়নে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তাহলে কেন বিড়ম্বনা হচ্ছে- এ প্রশ্নে রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী সমকালকে বলেন, সিএনএস বলেছে তাদের ৪০ লাখ হিট নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। তা যদি না হয়, তাহলে কাগজপত্রসহ জানতে চাওয়া হবে আসলেই এ সক্ষমতা আছে কিনা।দরপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। করোনার কারণে মামলা শেষ করা যাচ্ছে না। রেল চেষ্টা করছে মামলা নিষ্পত্তি করে নতুন দরপত্র আহ্বান করতে। কিন্তু মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত রেলের কিছুই করার নেই।

Leave a Comment