ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের শিক্ষাঙ্গনে ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাস, দখলদারি, নির্যাতন ও চাঁদাবাজির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
জোটের নেতারা অভিযোগ করেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে। একদিকে সিলেবাস-পাঠ্যক্রমে সাম্প্রদায়িক কূপমণ্ডূক ধ্যানধারণা ঢুকিয়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে নির্বাসনে পাঠানো হচ্ছে, অন্যদিকে ছাত্রলীগকে দিয়ে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, দখলদারি কায়েম করে শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস করছে।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করে দেশের বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর এই মোর্চা। বিবৃতিতে অবিলম্বে ছাত্রলীগের বেপরোয়া সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজসহ প্রায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের সীমাহীন সন্ত্রাস, দখলদারি, সিট ও ভর্তি–বাণিজ্য, প্রশ্নপত্র ফাঁস, ছাত্র-শিক্ষকদের নির্যাতন, গণরুম-গেস্টরুমে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল হক এ বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই দেশবাসী দেখতে পায় কোনো না কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের খবর। ছাত্রসমাজ ও ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে জনমনে বিরূপ মনোভাব তৈরি করে শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করতেই শাসকশ্রেণি পরিকল্পিতভাবে এ ন্যক্কারজনক পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। এর প্রমাণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে। অথচ প্রশাসন, পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে থাকছে কিংবা পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সব প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ছাত্রসংগঠনকে ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্র গণ–আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান বাম জোটের নেতারা। একই সঙ্গে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, শিক্ষক, শিক্ষাবিদসহ সর্বস্তরের মানুষকে তাঁরা সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।