চবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, আহত ৩

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই উপপক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিনজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।সোমবার বেলা দুইটার দিকে শহীদ আবদুর রব হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির হস্তক্ষেপে বিকেল পাঁচটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো নিয়ে রোববার ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেনের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয় আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামানের। মোবারক বিজয় উপপক্ষের ও মনিরুজ্জামান চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার সিএফসির অনুসারী। এর জেরে রোববার বিকেল পাঁচটায় ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেট এলাকায় মনিরুজ্জামানকে পিটিয়ে জখম করেন বিজয় উপপক্ষের মোবারক হোসেনসহ ১০–১৫ জন নেতা-কর্মী।

 

এ ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে রোববার দিবাগত রাত একটায় হাটহাজারী থানায় মামলা করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়। মামলার বাদী ছিলেন সিএফসির অনুসারী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আইন সম্পাদক খালেদ মাসুদ। এর পর থেকে দুই উপপক্ষের নেতা–কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

রবিবারের ঘটনার জেরে গতকাল বেলা একটায় আইন অনুষদের সামনে সিএফসির কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী বিক্রম রায়কে মারধর করেন বিজয় উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা। এতে সিএফসির ক্ষুব্ধ কর্মীরা বিজয় উপপক্ষের সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের সুরঞ্জিত অধিকারী ও একই বর্ষের সমাজতত্ত্ব বিভাগের মাহমুদুল হাসানকে মারধর করলে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এরপর বিজয় উপপক্ষের নেতা-কর্মীরা আলাওল, এ এফ রহমান ও সোহরাওয়ার্দী হল থেকে লাঠিসোঁটা, রামদা, ইটপাটকেল নিয়ে বের হয়ে শহীদ আবদুর রব হলের দিকে যান। একপর্যায়ে তাঁদের ধাওয়া দেন সিএফসির নেতা–কর্মীরা। পরে তাঁরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে এসে জড়ো হন। সিএফসির নেতা-কর্মীরা জড়ো হন শাহ আমানত হলের সামনে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম বলেন, মারামারির পর দুই উপপক্ষের নেতা–কর্মীদের ডেকে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। এর সঙ্গে কারা জড়িত ছিলেন, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সিএফসি উপপক্ষের নেতৃত্বে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক। সংষর্ষের বিষয়ে জানতে চেয়ে রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে সিএফসির নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মির্জা খবির সাদাফ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দুই কর্মীকে অতর্কিতভাবে বিজয় উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা মারধর করেছেন। বিজয় উপপক্ষকে প্রতিহত করেছেন তাঁরা। পরে দুই পক্ষের জ্যেষ্ঠরা বসে বিষয়টি সমাধান করেছেন। তবে এ বিষয়ে বিজয় উপপক্ষের কোনো নেতা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দুটি পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী, আরেকটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এ দুটি পক্ষের মধ্যে আবার ১১টি উপপক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে বিজয় ও সিএফসি মহিবুলের আর বাকি নয়টি উপপক্ষ নাছিরের অনুসারী।

Leave a Comment