কেন আবু বকর (রা:) বমি করে খাবার ফেলে দিয়েছিলেন?

আজ আমরা দুইটি আয়াত নাযিলের ঘটনা সম্পর্কে জানবো।
যে আয়াত দু’টির শানে নুযূল দুইটি। তার মধ্যে একটি শানে নুযূল ইতিপূর্বেই বর্ণনা করেছি।

২য় শানে নুযূল বোঝার সুবিধার্থে সূরা নাযি’আতের ৪০ নং ও ৪১ নং আয়াত দু’টি আবারও উল্লেখ করা হলো।

وَ اَمَّا مَنۡ خَافَ مَقَامَ رَبِّہٖ وَ نَہَی النَّفۡسَ عَنِ الۡہَوٰی ﴿ۙ۴۰﴾

পক্ষান্তরে যে স্বীয় রবের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং কুপ্রবৃত্তি হতে নিজেকে বিরত রাখে,

فَاِنَّ الۡجَنَّۃَ ہِیَ الۡمَاۡوٰی ﴿ؕ۴۱﴾

জান্নাতই হবে তার অবস্থিতি স্থান।

শানে নুযূল-২:

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে অপর এক বর্ণনা রয়েছে যে, আলোচ্য আয়াতদ্বয় আবূ জাহল বিন হিশাম ও মুসআব বিন উমায়ের (রা.) সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।

সুদ্দী বলেন, আলোচ্য আয়াতদ্বয় হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।

ঘটনা প্রবাহ হচ্ছে, হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এর একটি গোলাম ছিল। সে তাঁর খাবারের আয়োজন করত। তাঁর নিকট খানা নিয়ে আসলেই জিজ্ঞেস করতেন, “কোথা থেকে তা সংগ্রহ করেছ?” প্রশ্নের উত্তর শুনে, অতঃপর তিনি আহার করতেন।

একদিন যখন তার গোলাম তাঁর নিকট খাবার নিয়ে আসলো, কোনো কিছু জিজ্ঞেস না করেই তিনি খানা খেয়ে ফেলেন। যা তার নিয়মের বহির্ভূত কাজ।

ফলে গোলাম তাঁকে জিজ্ঞেস করল, অন্যান্য দিনের ন্যায় আজ আমাকে খাদ্যের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেননি কেন? তিনি বলেন, আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম।

যা হোক বলো, কোথা থেকে তা সংগ্রহ করলে? গোলামটি বলল, জাহেলিয়্যা যুগে আমি এক সম্প্রদায়ের জন্যে জ্যোতিষী করেছিলাম। তারা তা আমাকে দিয়েছে।

কথাটি শুনেই, তৎক্ষণাৎ আবু বকর সিদ্দিক (রা.) বমি করে খাবার ফেলে দিলেন। আর বললেন, হে আমার রব! আমার রক্তে তার অংশ যা রয়েছে তা আপনার ইচ্ছাধীন।

তখন সেই পরিপ্রেক্ষিতে আলোচ্য আয়াত নাযিল হয়েছে। [কুরতুবী: ১৮১/১৯]

অথচ আমরা? আমরা কী করি? খাবার পেলে আগে গলাধঃকরণ করলেই বাঁচি। হালাল উপার্জনের টাকায় খেলাম নাকি হারাম উপার্জনের টাকায় খেলাম- এত্তকিছু ভাবার সময় কই?! তাই না?

আবার আপনি-আমিই দিনশেষে, জান্নাতের যাওয়ার স্বপ্ন দেখি। জান্নাত কি এত সহজ?

হ্যাঁ, সহজ। তবে আমাদের চলতে হবে সঠিক পন্থায়। কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালনা করতে হবে। তবেই আশা করা যায়, আল্লহ আমাদের রেহাই দিবেন জাহান্নামের মতো নিকৃষ্ট স্থান থেকে।

তাহলে চলুন, আজ থেকেই সেই প্রচেষ্টা শুরু করি।

কী করছি? কী খাচ্ছি? কোন পথে চলছি? কাকে খুশি করার জন্য কাজ করছি?
এসব প্রশ্ন নিজের মধ্যে জাগ্রত করুন। ইন শা আল্লহ, আপনি বিপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না।

আল্লহ আমাদের সকলকে সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুন, আমিন।

লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Leave a Comment