সারাদেশে একযোগে বিভিন্ন সরকারি অফিসের সামনে সক্রিয় দালাল চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে আটক দালাল চক্রের প্রায় পাঁচশ সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে র্যাব সদরদপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান রংপুর ডেইলীকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি আর বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাত, পরিবহনখাত, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএসহ বিভিন্ন সেক্টরে দালাল চক্রের সক্রিয়তা ও আধিপত্য নিয়ে বেশকিছু সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে এসব দালাল চক্রের অত্যাচারে জনগণ প্রত্যাশিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেক সময় প্রত্যাশিত সেবা পেতে নির্ধারিত মূল্যের থেকে অনেক বেশি অর্থ খরচ করতে হয়। আবার অনেকেই অধিক অর্থ ব্যয় করেও প্রত্যাশিত সেবা পান না। তবে এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব সারাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়।
তিনি আর বলেন , এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং অন্যান্য সংস্থার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে দেশব্যাপী দালাল চক্রের বিরুদ্ধে র্যাবের ১৫টি ব্যাটালিয়ন একযোগে অভিযান চালায়। অভিযানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ অফিস এলাকাসহ পরিচালিত ৬৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ২৪৮ জন দালালকে ৯ লাখ টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া ২৪৯ দালালকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দালাল চক্রের সদস্যরা তাদের কৃতকর্মের কথা স্বীকার করে। দালাল চক্রের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও র্যাবের নজরদারি ও জোরালো অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।এ বিষয়ে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ্য করেছি, বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে দালালদের দৌরাত্ম্য অনেকাংশে বেড়েছে। এক্ষেত্রে অনেক ভুক্তভোগী বিভিন্নভাবে প্রতারিত হয়ে র্যাবের কাছে অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি র্যাব সাইবার মনিটরিং সেলের মাধ্যমেও বিভিন্ন সাইবার ওয়ার্ল্ডে আমরা দেখেছি, এ সংক্রান্ত ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণা রয়েছে। এছাড়া র্যাব সদরদপ্তর পরিচালিত ফেসবুক পেজ ‘র্যাব অনলাইন মিডিয়া সেলে’ অনেক ভুক্তভোগী প্রতারিত হয়ে অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাবের সব ব্যাটালিয়ন একযোগে দেশব্যাপী দালালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে। এ অভিযানে আমাদের সঙ্গে ছিল র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাসহ সিভিল প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা। আমরা দেশব্যাপী ৫০টির বেশি সরকারি সংস্থার সামনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে পাঁচ শতাধিক দালালকে আটক করতে সক্ষম হই। পরে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।