কোনো সরকারি চাকরিজীবী ও তাদের উপর নির্ভর থাকা পরিবারের কোনো সদস্য কোনো ধরণের ব্যবসা করতে পারবে না বলে সরকার নির্দেশ দিয়েছে। একই সাথে এ বিষয়ে কার্কর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
দুর্নঈতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠির প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব তথ্য জানা গেছে মন্ত্রি পরিষদের একটি সূত্র থেকে।
দুদকের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন সিকদার স্বাক্ষরিত মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশন পরিচালিত বিভিন্ন অনুসন্ধানে দেখা দেখা গেছে‑ কিছু কিছু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের উপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যগণ সরকারি অনুমোদন ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যা সরকারি কর্মচারী চাকুরি বিধিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংগত কারণে চাকুরি বিধিমালার নির্দেশনাসমূহ অনুসরণের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে কমিশন মনে করে।
এই চিঠিতে উপরিউক্ত অবস্থা নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করার জন্য অনুরোধ করা হয়। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই চিঠিটি গ্রহণ করে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মাজেদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত চলতি বছরের ৪ মার্চ লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশন কিছু কিছু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের উপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যগণ সরকারি অনুমোদন ছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন যা সরকারি কর্মচারী চাকুরী বিধিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বিধায় বিষয়টি নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করার জন্য এ বিভাগকে (মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ) অনুরোধ জানিয়েছে। এমতাবস্থায় বর্ণিত বিষয়টি নিরসনকল্পে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক তার আওতাধীন সংস্থা বা দফতরসমূহকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
উল্লেখ্য, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা-১৯৭৯ এর ১৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “ ব্যক্তিগত ব্যবসা অথবা চাকরি। (১) এই বিধির অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, কোন সরকারি কর্মচারী সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে সরকারি কার্য ব্যতীত অন্য কোন ব্যবসায়ে জড়িত হইতে অথবা অন্য কোন চাকরি বা কার্য গ্রহণ করিতে পারিবেন না। তবে একজন ননগেজেটেড সরকারি কর্মচারী উক্তরূপ অনুমোদন ব্যতিরেকে তাঁহার পরিবারের সদস্যদের শ্রম কাজে লাগাইয়া ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাইতে পারিবেন এবং এইক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে সম্পত্তির ঘোষণাপত্রের সহিত ব্যবসার বিস্তারিত বিবরণ দাখিল করিতে হইবে”।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদের জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি নীতি অধিশাখার অতিরিক্ত সচিব শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা দুদক থেকে চিঠি পেয়েছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সকল মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছেও চিঠি দিয়েছি। যদিও চাকরি বিধিমালায় এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে। তার পরেও যেহেতু দুদক অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে তাই সেই চিঠির বরাতে আমরাও আরেকটি নোটিশ করেছি।