এক সাহসী স্কুলছাত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রশাসনের সহায়তায় নিজের বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় । তবে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ওই ছাত্রীর বাবা ও মাকে ডেকে নিয়ে এসে মুচলেকা নিয়েছেন—তাঁরা মেয়েকে ১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ে দেবেন না । আর সাতক্ষীরা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির প্রশাসনিক প্রধান সাকিবুর রহমান জানান, উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের দশম শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্রীর বিয়ে ঠিক করেন তাঁর বাবা ও ভগ্নিপতি । তবে পড়াশোনা শেষ না করে বিয়ে করবে না বলে স্কুলছাত্রীকে জানিয়ে দিলেও পরিবার তার কথায় কর্ণপাত না করে বিয়ে দেওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করে ।
তবে মেয়ে সম্মত না হওয়ায় তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করে । আর একপর্যায়ে মেয়েটি সোমবার রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয় । তবে সেখান থেকে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা অর্ণা চক্রবর্তী ও কালীগঞ্জের বেসরকারি সংস্থা প্রেরণার নির্বাহী পরিচালক শম্পা গোস্বামীকে বিষয়টি জানায় । আর সাকিবুর রহমান আরও জানায়, বুধবার বেলা ১১টার দিকে ওই ছাত্রীকে নিয়ে শম্পা গোস্বামী উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে আসেন । তবে সেখানে মেয়ের মা-বাবাকে ডাকা হয় । আর তাঁরা আসার পর জন্মসনদে দেখা যায় মেয়ের বয়স ১৫ বছর ২ মাস।
তবে সবার উপস্থিতিতে মা ও বাবা তাঁদের মেয়েকে ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা দেন । তবে পাশাপাশি অঙ্গীকার করেন, তাঁদের মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে স্বাবলম্বী করার বিষয়ে শতভাগ দায়িত্ব পালন করবেন । আর দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী জানায়, বর্তমানে তার ক্লাস রোল ২ । তবে সে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল । তবে তার বাবা-ভগ্নিপতি ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন ।। আর সম্মত না হওয়ায় তাকে মারপিটসহ নির্যাতন করা হয় । তবে তার বই-খাতা ফেলে দেওয়া হয় । আর কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা কর্মকর্তা অর্ণা চক্রবর্তী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, যাতে মেয়েটি ওপর কোনো ধরনের নির্যাতন না চালায়, এ জন্য তদারকির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ।