বাংলাদেশের পতাকাবাহী নতুন একটি জাহাজের ২৭টি ত্রুটি শনাক্ত করেছে জার্মানির পোর্ট স্টেট কন্ট্রোল বা পিএসসি। ২৩ আগস্ট জার্মানির ব্রেমেন বন্দরে জাহাজটি আটক করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ইউরোপিয়ান মেরিটাইম সেফটি এজেন্সির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আটক জাহাজটির নাম এমটি বাংলার অগ্রদূত। তেল পরিবহনকারী এই জাহাজ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন বা বিএসসির। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্মিত এই জাহাজ বাংলাদেশে নিবন্ধিত হয় ২০১৯ সালে। প্রায় ৩৯ হাজার টন তেল পরিবহনক্ষমতার জাহাজটি কেনা হয়েছে চীন থেকে।
অসংখ্য ত্রুটি নিয়ে জাহাজটি আটকের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ নৌ বাণিজ্য কার্যালয় থেকে এক আদেশ জারি করা হয়েছে। ওই আদেশে বলা হয়, অসংখ্য ত্রুটি নিয়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ আটকের ঘটনা উদ্বেগের বিষয়। জাহাজের নাম উল্লেখ না করে সেখানে আরও বলা হয়, বেশির ভাগ ত্রুটিই জাহাজ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনাসম্পর্কিত। এটি দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার প্রতিফলন। বারবার এ ধরনের ঘটনার কারণে যাতে ওই সব অঞ্চলে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ কালো তালিকাভুক্ত না হয়, সে জন্য কঠোরভাবে নিয়মকানুন অনুসরণ করার কথা বলা হয়েছে আদেশে।
জানতে চাইলে নৌ বাণিজ্য কার্যালয়ের মুখ্য কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে নিবন্ধিত সমুদ্রগামী জাহাজগুলো যাতে আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন প্রতিপালন করে, সে জন্য এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মূলত বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সম্মান যেন ক্ষুণ্ন না হয়, সে জন্যই এই পরামর্শ। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) নতুন এই জাহাজ সময় ভিত্তিতে সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানির কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ জাহাজটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বিএসসি। জাহাজে কর্মরত রয়েছেন বাংলাদেশি নাবিকেরা।
বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর সুমন মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজের নির্মাণ সংক্রান্ত কোনো ত্রুটি নেই। তবে করোনার কারণে কাগজপত্র হালনাগাদ না করায় এই সমস্যা হয়েছে। এখন সবকিছু হালনাগাদ করা হয়েছে। শিগগিরই জাহাজটি বন্দর ত্যাগের অনুমতি পাবে। নিয়মানুযায়ী, জাহাজটির মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার তত্ত্বাবধানে প্রথমে ত্রুটি সারাতে হবে। এরপরই জার্মান কর্তৃপক্ষ জাহাজটি পরিদর্শন করবে। পরিদর্শনে সন্তুষ্ট হলেই বন্দর ত্যাগের অনুমতি দেওয়া হবে জাহাজটিকে।