অনেকের চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যা শুরু হয়ই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই । তবে কিশোর বয়সেও হতে পারে এ সমস্যা । গবেষণা আর বলে, দিনে ৫০ থেকে ১০০টি চুল ঝরলে চিন্তার কিছু নেই । তবে বয়ঃসন্ধিতে এর থেকে বেশি পরিমাণ চুল পড়লে তা বিপদের কারণ হতে পারে । আর যদিও কিশোর বয়সে চুল পড়া কোনো শারীরিক সমস্যার মধ্যে পড়ে না । তবে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ের জন্যই এ সময়ে চুল ঝরে যাওয়া শুরু হয় ।
আর যথাযথ যত্নে আবার একটা সময়ের পর বন্ধও হয় । তবে বয়ঃসন্ধিতে কিশোরদের চুল পড়ার কারণ কী, তা যেমন জানতে হবে, ঠিক তেমনি সমাধানও জানা জরুরি। চলুন জানা যাক কারণ গুলো কী কী ?
১ .হরমোন পরিবর্তন :
শরীরে হরমোন পরিবর্তনের কারণেই সব থেকে বেশি চুল ঝরে কিশোরদের মূলত । আর হরমোন পরিবর্তনের কারণে শারীরিক ও মানসিক অনেক ধরনের পার্থক্য দেখা যায় । তবে হরমোনের কারণে মাথায় চুল কমে যাওয়া অনেকটা প্রাকৃতিকও বটে।
২ .স্ট্রেস :
কিশোরদের মধ্যে স্ট্রেস নেওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি দেখা যায় বয়ঃসন্ধিতে । তবে ছোট ছোট বিষয়ে হঠাৎ করেই চিন্তা মাথায় ভর করে, যা চুল ঝরার অন্যতম কারণ । তবে বেশি স্ট্রেসে মাথার স্ক্যাল্পে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবারহ হয় না। এতে চুল পড়তে শুরু করে ।আর প্রয়োজনীয় অক্সিজেন না পেলে মাথার ত্বকের কোষগুলো দুর্বল হয়ে যায়, কমে যায় রক্তসঞ্চালনও, যা চুল ঝরার কারণ হয়ে দাঁড়ায় ।
৩. ওষুধ :
তবে এ বয়সে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেক সময় চুল পড়তে পারে । বিশেষজ্ঞরা আর বলেন, ব্রণ কমানো বা হতাশার জন্য যে ওষুধ খাওয়া হয়, তা অনেক সময় চুলের জন্য ক্ষতির কারণ হয় । তবে এমন হলে সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার ।
৪. পুষ্টির অভাবে :
তবে এ বয়সে পুষ্টিচাহিদা থাকে সব থেকে বেশি । কোনো কারণে পুষ্টির ঘাটতি হলে তার প্রভাব পড়ে চুলে । আর ১০ থেকে ২০ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২ ও ম্যাগনেশিয়ামের কমতি দেখা যায়। আর ফলে চুল প্রয়োজনীয় শক্তি পায় না ও গোড়া নরম হয়ে চুল ঝরতে শুরু করে।
৫. বেশি স্টাইলিং :
চুলে নতুন নতুন স্টাইল ও ফ্যাশন করার প্রবণতা বেশি কিশোরদের মধ্যে । আর হেয়ার জেল, চুলে বিভিন্ন রকম তেল, স্প্রে স্টাইলিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হয় । তবে এ ছাড়া চুলে গরম তাপ দেওয়া, রং করা ও চুল কাটার নানা রকম পদ্ধতি ব্যবহার করায় চুল বেশি বেশি ঝরে ।
৬ .হরমোন সমস্যার চিকিৎসা :
তবে শরীরে হরমোনের অসামঞ্জস্যতা দেখা দিলে চুল পড়ার প্রবণতা বাড়ে । আর তাই প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শের প্রয়োজন হতে পারে । অনেক সময় খাবার গ্রহণের জন্যও হরমোনে অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয় । আর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে ধীরে ধীরে চুল পড়ার সমস্যা কমে ।
৭ .খাদ্যতালিকার পরিবর্তন :
তবে খাদ্যতালিকায় এমন ধরনের খাবার রাখতে হবে, যা পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত । আর শরীরে কোনোভাবেই যেন ভিটামিনের ঘাটতি দেখা না দেয়, তা বুঝে খাবার নির্বাচন করা উচিত ।
৮ .চুলে স্টাইলিং কমানো :
তবে চুলে অতিরিক্ত স্টাইলিং স্থায়ী ক্ষতিও করতে পারে । আর চুল সোজা, কোঁকড়া বা তাপ দিয়ে চুল কাটার পদ্ধতি সব থেকে বেশি ক্ষতিকর। তবে স্টাইলিং এমন হওয়া উচিত, যা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো ।