শতকের পর শতক ধরেই ধর্মীয় গ্রন্থ, কবিতার পাশাপাশি ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে চিকিৎসক ও দার্শনিকরা হৃৎপিণ্ডকে আমাদের ব্যক্তিত্বের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার ব্যাপারে বিতর্ক করেছেন। তারা একে প্রজ্ঞা ও অনুভূতির উৎস হিসেবে বিবেচনা করেছেন। পৃথিবীর প্রতিটি ভাষা ও সংস্কৃতিতে মানুষ এমন শব্দ ব্যবহার করে, যার সঙ্গে হৃদয় (হৃৎপিণ্ড) সম্পর্কযুক্ত। যেমন : মানুষ ভালোবাসা উপভোগের সময় নিজেদের অনুভূতি প্রকাশের জন্য বলে, ‘মেয়েটি আমার হৃদয় ছিনিয়ে নিয়েছে’ অথবা ‘তুমি রয়েছ আমার হৃদয়ের গহিনে’। কেউ পূর্ণ উদ্যমে কাজ করলে আমরা বলি, ‘সে পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে কাজ করছে’। কারও ব্যাপারে নিরাশা প্রকাশের জন্য বলি, ‘সে হৃদয়হীন হয়ে গেছে’। কারো প্রতি অসন্তোষ প্রকাশে বলি লোকটি ‘কঠোর-হৃদয়’-এর ব্যক্তি। নির্বিকার আচরণকারী…
Author: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
মানুষের তার রবের ইবাদতে তৃপ্তি খুঁজে পাওয়া, তার দাসত্বে আনন্দ খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বান্দা যদি সত্যিকার অর্থে এই তৃপ্তির স্বাদ পায়, সে বাকি সব ভোগ বিলাস ভুলে যাবে। আল্লাহ যদি তার বান্দাকে পূর্ণাঙ্গ দাসত্বের পথ প্রদর্শন করেন, পরিপূর্ণ নম্রতা ও ভক্তি সহকারে নিজেকে সঁপে দেওয়ার পথ দেখিয়ে দেন, তবে সেটা সকল নেয়ামতের চেয়ে উত্তম নেয়ামত। একজন দাসের জন্য এর চেয়ে মূল্যবান উপহার আর হতে পারে না। মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছেন, يَا مُعَاذ، واللهِ، إِنِّي لَأُحِبُّكَ، ثُمَّ أُوصِيكَ يَا مُعَاذُ، لاَ تَدَعَنَّ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَة تَقُول: اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ “হে মুআয! আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে ভালবাসি। অতঃপর হে মুআয আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, তুমি প্রত্যেক সালাতের শেষে: (অর্থ) “হে আল্লাহ! তুমি…
পর্দার আড়ালে থাকা নারীর চোখ নয়; বরং চোখে কালি পড়ে যাওয়া, প্রবৃত্তির বন্দিত্ব ও উদ্বিগ্নতায় ভোগা নারীকে পশ্চিমের অদৃশ্য সাংস্কৃতিক বলয় থেকে স্বাধীন করতে হবে। বোরকা আর বিকিনির সম্পর্ক উত্তর-দক্ষিণ মেরুর মতো সম্পূর্ণ উলটো। আমাদের দেখতে হবে, এর কোনটি নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক অবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। —আবিদ উল্লাহ জান (কানাডিয়ান সাংবাদিক) ইসলামি শিক্ষার সঠিক প্রয়োগ কখনো নারীর জুলুমের কারণ হতে পারে না। কেননা, পৃথিবীর সবচেয়ে নারীবান্ধব ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। এখানে ইসলাম নারীকে যে স্বাধীনতা দিয়েছে, তা পশ্চিমা নারীস্বাধীনতার মতো নয়। ইসলাম নারীর জন্য সম্মান, মর্যাদা ও সমতার সঙ্গে বেঁচে থাকার বন্দোবস্ত করেছে। প্রকৃত স্বাধীন নারী সর্বদা শালীনতাপূর্ণ…
আল্লাহ ওয়াদা করেছেন ইসলাম বিজয়ী হবে, আর আল্লাহর ওয়াদা তো মিথ্যে নয়। আপনি যদি এ ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেন তাহলে আপনি আমার উপরে নয়, বরং আল্লাহকেই সন্দেহ করছেন। যদি ইসলাম আপনাকে সাথে নিয়ে বিজয়ী হয় তবে আপনি সফল। যদি ইসলাম বিজয়ী হয় আর আপনি দাওয়াহ দেন তাহলেও এটা আপনারই বিজয়। কিন্তু ইসলাম যদি আপনাকে বাদ দিয়েই বিজয়ী হয়, তাহলে আপনি হেরে গেলেন। আপনাকে সহ বা আপনাকে ছাড়া, উভয়ক্ষেত্রেই ফলাফল একই হবে, ইসলামই বিজয়ী হবে। যদি আমি আর আপনি এ দলে না যোগ দেই, তাহলে ওয়াল্লাহিল ‘আজিম এই বিজয়ী দলের সদস্যরা হবে সিরিয়ান সেই শিশুরা যারা কুরআন আর আল-উসুল আস-সালাসাহ মুখস্থ…
কবরের আজাব, কবরের ফিতনা বড়ই কঠিন এক বিষয়। সত্যিই অনেক কঠিন এক বিষয়। মানুষ নানা কারণে কবরে মারাত্মক আজাবের সম্মুখীন হবে। এমনকি মানবিক দৃষ্টিতে ছোট কারণেও কঠোর আজাবের সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে। আবু বাকারহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, مَرَّ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِقَبْرَيْنِ فَقَالَ “ إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ أَمَّا أَحَدُهُمَا فَيُعَذَّبُ فِي الْبَوْلِ وَأَمَّا الآخَرُ فَيُعَذَّبُ فِي الْغِيبَةِ ” নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কবর অতিক্রম করার সময় বলেনঃ নিশ্চয় এই দুই কবরবাসীকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে এবং তাদেরকে কোন কঠিন অপরাধের জন্য শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। এদের একজনকে পেশাবের (অসতর্কতার)…
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনার এমন একটি ক্ষেত্র যা ব্যক্তিগত এবং ক্যারিয়ারের সমৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ প্রদান করে। এটি এমন এক ডিসিপ্লিন যা বিজ্ঞান, গণিত এবং সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে বাস্তব-বিশ্বের সমস্যার সমাধান ডিজাইন, নির্মাণ এবং উদ্ভাবন করে। প্রযুক্তির প্রতি আপনার ভালোবাসা, কীভাবে বিভিন্ন জিনিস কাজ করে তা জানার কৌতূহল বা সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলার ইচ্ছা – কারণ যা-ই হোক না কেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করা দারুণ একটি সিদ্ধান্ত। এই লেখায় আমরা দশটি কারণ নিয়ে আলোচনা করব যা আপনাকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে অনুপ্রাণিত করবে। সমস্যা সমাধানের দক্ষতা: ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা শিক্ষার্থীদের জটিল জটিল সমস্যা সমাধানের দক্ষতা দিয়ে সজ্জিত করে। ইঞ্জিনিয়াররা জটিল পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে শেখে, বড় সমস্যাকে ছোট…
সহশিক্ষার ধারণা ইসলামি সমাজ ও সংস্কৃতি-বহির্ভূত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর শিক্ষাপন্থায় সহশিক্ষা ছিল না। তিনি নারী সাহাবিদের শিক্ষার জন্য একটি নির্দিষ্ট দিন স্থির করেছিলেন। এ ছাড়া উম্মুল মুমিনিন আয়েশা রা. পর্দার আড়াল থেকে পুরুষ শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন। ইসলামি ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, ইসলামি শিক্ষাকেন্দ্রগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত নারী-পুরুষের পৃথকীকরণ ছিল। পশ্চিমা চিন্তাদর্শন ও শিক্ষাব্যবস্থার উপজাত এই সহশিক্ষা। এ শিক্ষাব্যবস্থার উৎপত্তি হয় বিংশ শতাব্দীর শুরুতে স্কটল্যান্ডে; আর তা বাস্তবায়ন করে কিছু প্রাইভেট ও সরকারি স্কুল। পরবর্তীকালে এ পদ্ধতি গ্রহণ করে আমেরিকার কয়েকটি স্কুল-কলেজ। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে নারীবাদী আন্দোলনের অনুসারীরা সহশিক্ষার একটি ধারা প্রচলনে জোর প্রচারণা চালাতে শুরু করে, যেখানে নারীরা কেবল পুরুষের…
আয-যুহরী বলেন, “যদি আয়িশা (রা.) এর জ্ঞানকে একত্রিত করা হয় এবং তাকে অন্যান্য সব নারীর জ্ঞানের সাথে তুলনা করা হয় তাহলে তাঁর জ্ঞানই অন্য সকলকে ছাড়িয়ে যাবে।” (উইমেন অ্যারাউন্ড দি ম্যাসেঞ্জার, পৃষ্ঠা ৬৫) স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার ভালোবাসা, আচরণ, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিভিন্ন অভ্যাস এবং ঘরের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কাজকর্ম সম্পর্কিত হাদিসগুলোর কথা আয়িশা (রা.) ছাড়া চিন্তাই করা যায় না। যদিও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্য স্ত্রীরাও বর্ণণা করেছেন, কিন্তু তিনিই ছিলেন তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। উরওয়াহ (রহ.) হতে বর্ণিত,’…রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, হে উম্মু সালামাহ! আয়িশা (রা.) এর ব্যাপারে তোমরা আমাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহর কসম, তোমাদের…
আপনার কি কখনো কখনো নিজেকে মানসিকভাবে অনেক বিক্ষিপ্ত লাগে? মন এদিক-ওদিক উদ্দেশ্যহীনভাবে ছুটে বেড়ায়? এ সময়টায় নিশ্চয়ই আপনার মনে হয় যে যদি আপনার মনটা আরো শান্ত থাকত, যত যা-ই ঘটুক যদি আপনি মানসিকভাবে স্থির থাকতে পারতেন? আবেগ অনুভূত হওয়াটা খারাপ কিছু না। আমাদের আবেগের উত্থানপতন হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ অন্যদের চেয়ে তাদের আবেগিক প্রতিক্রিয়া আরো ভালোভাবে কন্ট্রোল করতে পারে। এর পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে। যেমন জেনেটিক থেকে শুরু করে আপনার প্রতিপালন এমনকি গত রাতে আপনি কতখানি ঘুমিয়েছেন তার ওপরও মানসিক অবস্থা নির্ভর করে। তবে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছেঃ আপনার অভ্যাস কিরকম তার ওপর নির্ভর করবে আপনি…
আমরা সবাই প্রোডাক্টিভ হতে চাই। অলসতার জগত থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। নিজের জীবনে কিছু অর্জন করতে চাই। প্রোডাক্টিভ হওয়ার অর্থ কি? কম সময়ে অনেক বেশী অর্জন করাই প্রোডাক্টিভিটি। যেন অল্প সময়ে বেশী কাজ শেষ করে প্রিয় কাজগুলোতে সময় ব্যয় করতে পারেন। যদি অফিসের কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করতে পারেন তাহলে প্রিয়তমা স্ত্রীকে বেশী সময় দিতে পারবেন, বা বাবা-মার খেদমত করতে পারবেন, বাসাবাড়ির কাজ করতে পারবেন। তাহলে কীভাবে হবেন প্রোডাক্টিভ? আসুন জেনে নিই কিছু প্রোডাক্টিভিটি টিপস। #১ লক্ষ্যের বদলে সিস্টেমে ফোকাস করুন ছোটবেলা থেকেই আমাদের বিভিন্ন লক্ষ্য অর্জনের কথা বলা হয়, লক্ষ্য অর্জন করতে সেখানো হয়। যেমন, পরীক্ষায় ভালো করতে হবে, স্কুলের…
বর্তমানে মানুষের অন্যতম পছন্দে পরিণত হয়েছে ফাস্ট ফুড। সব জায়গায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে ফাস্ট ফুডের দোকান ও ফাস্ট ফুড চেইন। ফাস্ট ফুড সহজেই পাওয়া যায়, অনেক সময় হোম ডেলিভারিও দেওয়া হয়, খেতেও বেশ ভালোই লাগে। কিন্তু সুস্বাদু বার্গার, ফ্রাই আর ঠান্ডা পানীয়ের পেছনে লুকিয়ে আছে বিপদের আবছায়া। আমরা এই লেখায় দেখব যে ফাস্ট ফুড আমাদের দেহ এবং মানসিক সুস্বাস্থ্যের ওপর কেমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এসব নেতিবাচক প্রভাব বুঝতে পারার দ্বারা আমরা নিজেদের খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে আরো সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হব। বলা হয়ে থাকে, ফাস্ট ফুড খেলে মানুষ মোটা, স্টুপিড আর কুৎসিত বানায়। কিন্তু কেন? আসুন, ফাস্ট ফুড ও…
মায়ের চেয়ে বাবার গুরুত্ব কম নয়। ‘বাবা’ এমন একটি শব্দ, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক আবেগ, অনুভূতি ও ভালোবাসা। সন্তানের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পর বাবার অবদানই সবচেয়ে বেশি। হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ ইবনে মাজাহতে বাবার মর্যাদা সম্পর্কে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- `তুমি এবং তোমার সম্পদ, উভয়টিই তোমার বাবার।’ ইসলামের দৃষ্টিতে, বাবা হল পরিবারের প্রধান। যিনি তার স্ত্রী এবং সন্তান উভয়ের প্রতিই দায়বদ্ধ। পরিবার ব্যবস্থায় পিতার উপস্থিতি অত্যাবশ্যক, বিশেষ করে উপার্জনকারী হিসাবে। নিম্নে ইসলামে একজন পিতার ১০টি ভূমিকা উল্লেখ করা হল। পরিবারের কর্তা হয়ে ওঠা পরিবারের কর্তা হিসেবে বাবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। একজন নেতা হিসাবে পিতাকে অবশ্যই…