বাস্তবতার অংক কষতে বসেআমার স্বল্প দীর্ঘায়ুর এক যুগআট মাস পেরিয়ে গেল। তবুওজটিল সমীকরণটির সমাধানেইতি টানা হলো না। কণ্টকাকীর্ণ পথে খালি পায়েহাঁটতে গেলে যেমনখানিক পরপরই রক্ত নামকলাল আলতা নান্দনিক নকশায়রঞ্জিত করে চরণ দু’টিকে,ঠিক তেমনিই কলমের নিবেরআঁচড় কেটে কলঙ্কিত হয়েছে আমারকতশত সরল সমীকরণ; শুধুমাত্রকিছু যোগ-বিয়োগের রদবদলে। পরাবাস্তবতার এসব ভূল যোগ আরবিয়োগের নিমিত্তেই আজবাস্তবতার ক্যালকুলেশন এত জটিল;আর জীবন হয়ে উঠেছে বিতর্কিত। সঠিক অংক জটিল হলেওএর সমাধান থাকবেই।কিন্তু আমি বিভ্রান্তের মতোসমাধানের পিছু ছুঁটেওতার দর্শনলাভ করতে পারিনি।আমি সেই সমাধান কবে খুঁজে পাব?নাকি আমি ভুল অংকের সমীকরণমেলানোর বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছি!দ্বিধান্বিত এই প্রশ্নের জবাব আমিআজও খুঁজে ফিরি,আশার প্রদীপ জ্বেলে। Writer: Mahazabin Sharmin Priya
Author: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
চলো হারিয়ে যাই,ঐ ঝুম পাহাড়ের দেশে।পাতবো ছোট্ট সংসারঐ জীর্ণ কুঁড়েঘরে। চলো হারিয়ে যাই,ঐ ঘন জঙ্গলে।ঘুরবো শুধু ইচ্ছে মতোঅরণ্যচারী হয়ে। চলো হারিয়ে যাই,ঐ শিউলী বনের মাঝে।গাঁথবো মালা দু’জনেপুত্তিকার সুমধুর গুঞ্জনে। চলো হারিয়ে যাই,ঐ দুঃখবিহীন শহরে।আঁখি ভেজা লুকোনো শিশিরমুছে ফেলি দু’জনে। চলো হারিয়ে যাই,ঐ বেনোজলে ভেসে।ঝাঁকে ঝাঁকে জোনাকি যেখানেজোছনায় স্নান সারে। চলো হারিয়ে যাই,ঐ ঘোলাটে কুয়াশার সাথে।মাখবো হিম শীতল পরশহৃদয়ের পুরোনো সেই ক্ষতে। চলো হারিয়ে যাই,ঐ শব্দহীন সঙ্গীতে।ইশারায় বলি কথাদু’জনে আনমনে। চলো হারিয়ে যাই,ঐ শরতের শুভ্র কাশফুলে।নীলাকাশে উড়বে যারাস্বাধীনচেতা হয়ে। চলো হারিয়ে যাই,ঐ মায়াবী নিশিথে।পাশাপাশি হাঁটবো দু’জনেচুপিচুপি ভালোবেসে। Writer: Mahazabin Sharmin Priya
আমার কোনো মন খারাপ নেই,আমি ঐ গগনহৃদে প্রবাহমানহালকা মেঘের মতোই।রৌদ্রজ্জ্বল দিনেও যেমনঝড়ের পূর্বমুহূর্তেও ঠিক তেমনই;আমার কোনো ভাবান্তর নেই। আমার কোনো মন খারাপ নেই,রোদের হাসিতে শুভ্র মেঘ আরবর্ষার আবির্ভাবে ধূসর মেঘ যেমনআকাশের আঙ্গিনা সাজায়,আমার হৃদ গহীনেও তেমনসুখের সাদা বর্ণ আরবেদনার ধূসর বর্ণসুশোভিত অন্তরে আনেনানান বৈচিত্র্যের ভাব। আমার কোনো মন খারাপ নেই,একাকিত্বের জীবনে নিজেকেবেশ মানিয়ে নিয়েছি।মনের প্রবেশদ্বারের শিকলটিআমার মনকে প্রবোধ দেয়।কারো আগমন কিংবা প্রস্থানেরপদধূলো নিয়ে আমি আরছেলেমানুষি করি না;বুঝতে শিখেছি, যে যাবারতাকে বেঁধেও আটকানো যাবে না,আর যে থাকার, তাকে অর্ধচন্দ্র করেওবিতাড়িত করা যাবে না।তাইতো আমার কোনো মন খারাপ নেই। Writer: Mahazabin Sharmin Priya
আমি তোমাকে ছাড়াই ভালো আছি,অখণ্ডিত নিঃসঙ্গতা নিয়েআমি তোমাকে ছাড়াই বেশ ভাল আছি। আমি তোমাকে ছাড়াই ভাল আছি,তোমার স্মৃতির দাবদাহেআমার পোড়া মস্তিষ্ক নিয়েআমি তোমাকে ছাড়াই বেশ ভাল আছি। আমি তোমাকে ছাড়াই ভাল আছি,তোমার অবহেলায় মলিনহয়ে যাওয়া মন নিয়েআমি তোমাকে ছাড়াই বেশ ভাল আছি। আমি তোমাকে ছাড়াই ভাল আছি,বালিশে মুখ চেপে ধরেবাঁধ ভাঙ্গা নিঃশব্দ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েওআমি তোমাকে ছাড়াই বেশ ভাল আছি। আমি তোমাকে ছাড়াই ভাল আছি,তোমার কথার ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া আমার স্বপ্নগুলো নিয়েআমি তোমাকে ছাড়াই বেশ ভাল আছি। আমি তোমাকে ছাড়াই ভালো আছি,তীর্থের কাকের মতোতোমার নাম্বার থেকে আসাকল এবং মেসেজের অপেক্ষায়না থেকেও এখনআমি তোমাকে ছাড়াই বেশ ভাল আছি। আমি তোমাকে…
ওখানে আমার তায়াম্মুমের মাটি রাখা ছিল। কোনো রকমে সেটা নিয়ে তায়াম্মুম করে নামাজে বসে পড়ি। কারণ আল্লাহ্ বলেছেন, “یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۵۳﴾ হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলগণের সাথে আছেন। [২:১৫৩] মুখে কোনো দু’আ করতে পারছিলাম না। মনের মধ্যে আমার যে ঝড় বইছে তা তো আল্লাহ্ই ভাল জানেন। আমি শুধু কেঁদে কেঁদে আমার সিজদাহ্ ভেজাচ্ছিলাম। আব্বু-আম্মুসহ সব রিলেটিভরা চলে এসেছেন। আমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা কারো নেই। আব্বু এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না করলো। তাতেও আমার কথা বের হচ্ছিলো না। ছোটফুপি এসে…
এই, তুমি জেগে উঠে আমার দেখায় বাধা সৃষ্টি করলে কেন, হুম?” বলেই সে আমার নাক টিপে ধরলো। আমি হাসতে লাগলাম। কিসব পাগলের মতো কথা বলে সে! বেলকনির ডিমলাইটের মৃদ্যু আলো সামনের দেয়ালে পড়েছে। তার আলোতেই হঠাৎ দেয়াল ঘড়িতে চোখ পড়তেই দেখলাম তাহাজ্জুদের সময় হয়ে গেছে। দু’জনে দীর্ঘক্ষণ ধরে তাহাজ্জুদ পড়লাম। এরপর ফজরের ওয়াক্তে সে নামাজ পড়তে মসজিদে গেল আর আমি বাসায় নামাজ পড়ে নিলাম। কিছুক্ষণ পর খেয়ে সে সকাল ৬টার দিকে রওনা দিলে আমি আয়েশাকে ফোন দিলাম। আয়েশা জানালো ১০টা নাগাদ চলে আসবে। আমার একটু খারাপ লাগায়, আমি শুয়ে পড়লাম। কলিংবেলের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গলো। ঘড়িতে তখন ৯টা বেজে ১৫মিনিট। দরজা…
আমি তাকে সান্ত্বনা দিতে লাগলাম। এরপর ও চলে যাওয়ার সাথে সাথে নামাজের সিজদায় কাঁদতে লাগলাম। সব কষ্টের কথা মহান রবকে জানালাম। এরই মাঝে আয়েশা চলে এসেছে। দরজা খুলে তাকে ভিতরে নিয়ে আসলাম। আয়ান আসার আগ পর্যন্ত আয়েশা আমার পাশেই ছিল সবসময়। দেখতে দেখতে তিনদিন কেটে গেল। আয়ান চলে এলো অন্য আয়ান হয়ে, যেমনটা আমি চাচ্ছিলাম। এসেই জানালো এখন থেকে সে দাঁড়ি রাখবে। আমার যে কী খুশি লাগছিল! এরপর সে তিনদিন কীভাবে কাটালো সেসব বলতে লাগলো। ঐ জামায়েত ভাইয়েরা নাকি এত বিনয়ী ও আন্তরিক, তার খুব ভাল লেগেছে। আমার আপত্তি না থাকলে সে আরও একবার ওনাদের সাথে তাবলীগে যেতে চায়। আমি…
.একদিন কথায় কথায় আয়েশাকে বলেই ফেললাম আয়ানের কথা। ইসলামের নিয়ম কানুন মেনে চলতে তার যে খুবই গাফলতি এগুলো আমি আয়োশার সাথে শেয়ার করলাম। তখন সে আমাকে একটি দারুণ বু্দ্ধি দিল। বললো, “আপু, আপনি ভাইয়াকে ম্যানেজ করে একবার তাবলীগে পাঠালে বেশ ভাল হতো। এই কিছুদিন পর, আমার হলের এক আপুর হাজবেন্ড তাঁর দ্বীনি ভাইদের সাথে তাবলীগে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন। আপনি চাইলে আমি আপুকে বলে সবকিছু ঠিকঠাক করে দিতে পারি।” প্রথমে আমি বুঝিনি তাবলীগে গিয়ে কী হয়! মানুষ কেন যায়! আবার আমার এই অসুস্থ অবস্থায় আয়ানকে পাঠাতেও ভরশা পাচ্ছিলাম না। আমাকে এরম অবস্থায় ফেলে সে নিজেও যেতে চাইবে না। আয়েশা নিজে এর…
গত পর্বে আমরা জেনেছি, হতাশা কী এবং এর কুফল। আজ আমরা জানবো, মানুষ কেন হতাশাগ্রস্থ হয় এবং এর প্রতিকার সমন্ধে। চলুন শুরু করি। হতাশাগ্রস্থ হওয়ার কারণঃ সাধারণত হতাশার সংজ্ঞা থেকেই হতাশাগ্রস্থ হওয়ার কারণ সম্পর্কে আমরা কিছুটা আঁচ করতে পারি। বিষয়টি ক্লিয়ার করে জানার জন্য কিছু পয়েন্ট তুলে ধরছিঃ ১.ব্যাসিক্যালি নেতিবাচকতা হতাশাগ্রস্থ হওয়ার অন্যতম কারণ। কেউ দীর্ঘদিন ধরে নেতিবাচক অবস্থার মধ্য দিয়ে গেলে খুব সহজেই তার হতাশ হওয়ার পসিবিলিটি বেড়ে যায়।এছাড়াও কিছু মানুষের ব্যক্তিত্বই নেতিবাচক হয়ে থাকে। এ ধরণের মানুষ হার হামেশাই হতাশাগ্রস্থদের শীর্ষ তালিকায় স্থান করে নেয়। ২.সমস্যা দেখলেই যারা ভয় পায়, সমস্যার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এর সমাধান করায় সাহস না…
কোনো ওয়াক্তের আযান দেওয়ার সাথে সাথেই আমি তাকে মিনতি করি নামাজ আদায় করতে। কখনো শোনে তো কখনো শোনে না। এই পড়ছি, একটু পর, এই যাচ্ছি ওজু করতে- এভাবেই কাটিয়ে দিত। আমি হতাশ হলাম না। আমি অনুরোধের পর অনুরোধ করতে লাগলাম। মাঝে মাঝে কান্না করে ফেলতাম। তবুও যেন সে নামাজে যায়, মসজিদের সাথে তার সম্পর্কটা ভাল হয়। এদিকে আয়েশার থেকে কিছু ইসলামিক স্কলারের নাম শুনলাম। মুফতি মেন্ক, তারিক জামিল, নোমান আলী খান, ড. জাকির নায়েক, রাহে বেলায়েত বইটির লেখক ড. আব্দুল্লাহ্ জাহাঙ্গীর (রহি.) সহ আরও অনেকে লেকচার শুনি। এনাদের লেকচার শুনে অনেক কিছু জানতে পারি। কখনো কেঁদে ফেলি, কখনও বা খুশিতে…
খালাকে জিজ্ঞেস করতেই খালা জানালেন এটা তার ছেলের রিক্সা। দুপুরে খেতে এসে একটু ঘুমিয়ে আবার বেরিয়ে গেছেন। অনেক কথার সাথে এটাও জানলাম, আয়েশা ঢাকায় যে ভার্সিটিতে পড়ে, সেখান থেকে আমাদের বাসা খুবই কাছে। ওর ফোন নাম্বারটা নিয়ে ওকে আমার বাসার ঠিকানা দিলাম। জানালাম, যেকোনো দিন সে চলে আসতে পারে। আমি বাসায় একা থাকি। আয়ান অফিস শেষে সন্ধ্যার দিকে বাসায় ফেরে। সুতরাং আয়েশার পর্দা নিয়ে কোনো ভয় নেই।এরপর অন্য এক আয়রা হয়ে আমি খালার সাথে বাসায় ফিরলাম। .তারপর থেকে সবকিছু যেন দ্রুত ঘটে গেল। আমরা গ্রামের বাসা থেকে পরেরদিনই ঢাকায় চলে এলাম। আয়েশার থেকে আমি যতটুকু জেনেছি তার কিছু কিছু আয়ানের…
সে আমাকে সাথে করে ওজু করতে নিয়ে গেল ওদের কলপাড়ে। আমাকে ওজু করতে বলায় আমি ওকে আগে ওজু করতে বললাম। আমি মনোমুগ্ধ হয়ে ওর ওজু করা দেখছি। কী সুন্দর করে মেয়েটা ওজু করছে! হাতের কনুই পর্যন্ত ধোয়ার সময়, ও যখন হাতের কাপড় গোটাতে লাগলো। একটি দৃশ্য দেখে আমার খুব খারাপ লাগলো। আয়েশার কনুই এর কাছের কাপড় অনেক খানি ছিঁড়ে গেছে। আমি দেখেছি, এটা ওকে বুঝতে দিলাম না। ওর ওজু শেষ হলে আমি ওজু শুরু করলাম। অনেকদিন পর ওজু করায় কিছু কিছু ভুল হচ্ছিলো। সে বিনয়ের সাথে আমার ভুলগুলো শুধরে দিল। আয়েশা পায়ের পাতা পর্যন্ত বড় একটি হিজাব পড়ে নিয়ে জায়নামাজ…