পদ্মা সেতু মোটরসাইকেল নিয়ে পেরিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস, দীর্ঘ অপেক্ষার পর বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হয়। এরপর থেকে পদ্মা সেতু পার হয়ে ঈদ উদযাপন করতে গ্রামে স্বজনদের কাছে ফিরছেন হাজার হাজার মানুষ। সেতু দিয়ে ১০-১২ মিনিটে পদ্মা পাড়ি দিতে পেরে তারা উত্তেজিত।
পদ্মা সেতু মোটরসাইকেল নিয়ে পেরিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস
ঈদে বাড়িগামী মানুষের দুর্ভোগ কমাতে গত মঙ্গলবার একনেকের বৈঠকে পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গণভবনে মোটরসাইকেল চালুর বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
শরীয়তপুরের সখীপুরের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু পার হতে সাহরীর সময় ঢাকার মিরপুর থেকে বের হন। মাওয়া প্রান্তে তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর পদ্মা সেতুতে ওঠার সুযোগ পান তিনি। পদ্মা সেতু মোটরসাইকেল নিয়ে পেরিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস,দেলোয়ার বলেন, “আমরা ট্রলারে পদ্মা নদী পার হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করতাম । স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চড়তে পারব না, ভাবতেও কষ্ট হচ্ছিল। আজ ব্রিজ পার হয়ে বাড়ি যাচ্ছি মোটরসাইকেলে।আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে।অনেক আনন্দ অনুভব করছি।
প্রথমবারের মতো স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু পার হন ফারুক হোসেন।পদ্মা সেতু মোটরসাইকেল নিয়ে পেরিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস, তিনি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের বাসিন্দা। ঢাকার মোহাম্মদপুরে ব্যবসা করেন। ফারুক হোসেন কে বলেন, আমি আমার জীবনের প্রথম মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পার হয়েছি। আমি ১২মিনিটের মধ্যে ব্রিজ পার হলাম। আমি খুব খুশি অনুভব করছি. ঈদযাত্রাকে ঝামেলামুক্ত করতে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
বরিশাল শহরের বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেন মিরপুরে ওষুধের ব্যবসা করেন।পদ্মা সেতু মোটরসাইকেল নিয়ে পেরিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মোটরসাইকেলে করে প্রিয়জনের কাছে যাচ্ছেন তিনি। সাখাওয়াত বলেন, উদ্বোধনের ১০ মাস পর আবারও সেতুতে মোটরসাইকেল চালাতে পেরে তারা উচ্ছ্বসিত। মোটরসাইকেল চালকদের সর্বদা সেতুতে চড়ার অনুমতি দিতে কর্তৃপক্ষের দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণ করুন।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের ২৬ জুন পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। প্রথম দিনে ঢল নামে মোটরসাইকেল ছিল। ওই রাতে দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হলে ২৭ জুন ভোর থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করে সেতু বিভাগ।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ শিমুলিয়া-শিবচরের বাংলাবাজার এবং মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথ ব্যবহার করে ঢাকায় যাতায়াত করত। এই অঞ্চলের অনেক মানুষ সহজেই ঢাকায় যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। মোটরসাইকেল চালকরা পদ্মা নদী পার হতেন।পদ্মা সেতু মোটরসাইকেল নিয়ে পেরিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় বিআইডব্লিউটিসি। তখন বিপাকে পড়েন মোটরসাইকেলে চলাচলকারী লোকজন।
তারা পারাপারের বিকল্প পথ খুঁজতে থাকে। ট্রাক ও পিকআপে করে মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পার হচ্ছেন অনেকে। অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার ও মোটরসাইকেল নিয়ে পারাপার করছেন। 400 টাকা থেকে 1 হাজার 400 টাকা খরচ করতে হয়েছে। আর পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের টোল ১০০ টাকা।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ভিখারুদ্দৌলা চৌধুরী বলেন, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে হাজার হাজার মোটরসাইকেল জড়ো হয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে সুশৃঙ্খলভাবে সেতু পার হচ্ছেন তারা। তাদের যাত্রা নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল রাখতে সেতু কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে। চাপ সামলাতে দুটি টোল বুথ খোলা হয়েছে। ওই বুথে টোল দ্বারা নির্ধারিত লেন ধরে মোটরসাইকেল চলছে।