বঙ্গবাজারের অস্থায়ী মার্কেট, দোকানিরা কাল বসবেন , বঙ্গবাজারে পোড়া বাজারের জায়গায় ব্যবসায়ীদের সাময়িকভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নবনির্মিত অস্থায়ী বাজার এখন ইট বিছানো ও মেরামত করে দৃশ্যমান। বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী নেতারা জানান, আগামীকাল থেকে দোকানিরা এখানে বসে বেচাকেনা শুরু করতে পারবেন।
মঙ্গলবার সকালে পুড়ে যাওয়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে। ইতিমধ্যেই অর্ধেক এলাকা নতুন ইট-বালু দিয়ে সংস্কার করে পোস্ট বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা অপেক্ষায় আছেন কবে আবার ব্যবসা শুরু করবেন।
টাঙ্গাইল ফ্যাশন নামের ১০৬৭ নম্বর দোকানের মালিক মো. মিনজু আলম ভূঁইয়া জানান, আগামীকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি, বসতে পারলে মিরপুর, সাভার বা গাজীপুর থেকে পোশাকের স্টক লট এনে নতুন ব্যবসা শুরু করব।
এদিকে দুপুর একটার দিকে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতি সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে ক্ষতিগ্রস্ত দুই হাজার ৯৬১ ব্যবসায়ীর তালিকা দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল দুপুর ১২টা থেকে এসব ব্যবসায়ীদের মার্কেট প্লেসে সাময়িকভাবে বসানো হবে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র এসে ব্যবসায়ীদের বসানোর ব্যবস্থা করবেন।
বঙ্গবাজারের অস্থায়ী মার্কেট, দোকানিরা কাল বসবেন
বঙ্গবাজারের অস্থায়ী মার্কেট, দোকানিরা কাল বসবেন, সোমবার পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তহবিলে ২ কোটি ১২ লাখ টাকা জমা হয়েছে জানিয়ে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই তহবিলের পুরো টাকাই সরকারের কাছে যাবে। আশা করছি, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বড় অনুদান আসবে। সব মিলিয়ে সরকারি উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই অর্থ বিতরণ করা হবে।
এদিকে বঙ্গবাজারে ফুটপাতের দোকানের পাশাপাশি আশপাশের মার্কেটের দোকানগুলোও খুলেছে। বঙ্গবাজারের অস্থায়ী মার্কেট, দোকানিরা কাল বসবেন, আংশিক পুড়ে যাওয়া এনেক্সকো টাওয়ার, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেট ও বঙ্গ হোমিও মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ক্রেতাদের বঙ্গবাজারে ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে। তা না হলে এখানকার ব্যবসায়ীরা লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন না।
বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের হাতকড়া বিক্রেতা আবদুর রব বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, সাধারণত ২০ দিন রোজার পর জেলা পর্যায়ের কোনো পাইকার আসে না। বঙ্গবাজারের অস্থায়ী মার্কেট, দোকানিরা কাল বসবেন, সে হিসেবে এবার বড় ব্যবসা করার সুযোগ নেই। তবে রাস্তা খুলে দিয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান বসাতে পারলে ঢাকার আশপাশে কিছু ক্রেতা পাওয়া যাবে। আর এখন নির্ভর করছে খুচরা বিক্রির ওপর, ব্যবসা কতটা ফিরবে।
আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দোকানপাট ও ব্যবসা করার সুযোগ দিতে বঙ্গবাজারের ফায়ার এলাকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহমেদের তত্ত্বাবধানে এবং কর্পোরেশনের গঠিত তদন্ত কমিটির সার্বিক সহযোগিতায় জোন-১ আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে দোকানের জায়গা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এ কাজের অংশ হিসেবে বঙ্গবাজারের ১ দশমিক ৭৯ একর জায়গাজুড়ে বালু ও ইটভাটা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ৪০ গাড়ি বালু ফেলা এবং প্রায় ৯০ হাজার ইট বিছানো হয়েছে। জানা গেছে, পুরো এলাকায় প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ইট বিছানো হবে এবং প্রায় দেড় শতাধিক গাড়ি বালু ফেলা হবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আজকের মধ্যে পুরো এলাকায় বালু ও ইট বিছানোর কাজ করছেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনও জানিয়েছে, পোড়া এলাকা থেকে বর্জ্য অপসারণের প্রক্রিয়া চলছে। কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. হায়দার আলীর নেতৃত্বে এ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের স্থান থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬০ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।