জীব থেকে জীবের উদ্ভব কে আবিষ্কার করেন

জীব থেকে জীবের উদ্ভব কে আবিষ্কার করেন?

জীব থেকে জীবের উদ্ভব সত্যটির আবিষ্কর্তা হলেন ‘লুই পাস্তুর’। একে ইংরেজিতে ‘বায়োজেনেসিস’ বলা হয়। ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রান্সের এক অখ্যাত অবজ্ঞাত গ্রামে পাস্তুর এর জন্ম হয়। বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করে তিনি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। তবে জীবন বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণাই তাঁর গবেষণায় প্রাধান্য পায়।

ফ্রেন্সের লিল্লে শহর তাঁর প্রধান কর্মস্থল হয়ে দাঁড়ায়। এখানে তিনি জীবাণু নিয়ে নিরলস গবেষণায় লিপ্ত হন।

১৮৬৫ খ্রীস্টাব্দে ফ্রান্সে গুটি পোকার ভয়ঙ্কর মড়ক দেখা দেয়। গুটি পোকার চাষীদের তো মাথায় বজ্রপাত হবার যোগাড়। ফলে দেশের রেশম শিল্প ধ্বংস হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।

বিজ্ঞানী পাস্তুুর গুটি পোকার মড়কের কারণ আবিষ্কার করার কাজে আত্মনিয়োগ করলেন। শুরু হলো গবেষণা। গবেষণার এক পর্যায়ে তিনি আবিষ্কার করলেন, এক প্রকার সূক্ষ্ম জীবাণুই গুটি পোকার মড়কের কারণ রূপে কাজ করছে।

তাঁর পরামর্শে গুটি পোকা চাষীরা পোকার দ্বারা আক্রান্ত গুটি গুলোকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলে মড়কের হাত থেকে বাকী গুটিগুলোকে রক্ষা করে। তাঁর আবিষ্কার শুধু চাষীদেরই নয়, জাতীয় সম্পদ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে।

আর একবার শিল্প শহরের মদ ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়ল। মদ অতি অল্প সময়ের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। টকে গিয়ে গেঁজিয়ে উঠছে। এ নিয়ে বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর আবারও গবেষণায় মনোনিবেশ করলেন এবং গবেষণার মাধ্যমে আবিষ্কার করলেন, বিশেষ এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া মদকে গেঁজিয়ে তুলছে।

পাস্তুর মদ ব্যবসায়ীদের জানালেন, ১২০ ফারেনহাইটের উষ্ণতায় উত্তপ্ত করলে মদ টকে যাওয়া বন্ধ হবে।

তারপর নির্দিষ্ট উষ্ণতায় দুধ ফুটিয়ে দুধ টকে যাওয়া বন্ধ করার উপায়ও তিনি উদ্ভাবন করলেন। যাকে পাস্তুর নামানুসারে “পাস্তুরাইজেশন” পদ্ধতি আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

তারপর মুরগির কলেরার প্রতিকার করতে গিয়ে তিনি রোগাক্রান্ত মুরগির রক্ত থেকে জীবাণু বের করপ টীকা আবিষ্কার করলেন। যা ব্যবহারে মুরগির কলেরা রোধ করা হয়।

গবাদি পশুর ‘অ্যানথ্রাক্স’ রোগের প্রতিষেধক টীকা আবিষ্কার করে তিনি দেশের দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের শ্রদ্ধাভাজন হন। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ আবিষ্কার জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক ঔষধ।

রিপোর্টারঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Leave a Comment