জামাতের সাথে নামাজ আদায়ের ফজিলত ও জামাতের বিধান সমন্ধে জানুন

জামাতের সাথে নামাজ আদায়ের ফজিলত ও জামাতের বিধান সমন্ধে জানুন।

জামাতের সাথে নামাজ আদায়ের ফজিলতঃ

আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন, “তোমরা রুকু কারীদের সাথে রুকু করো।”
রাসূল (صَلَّي الّلٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم) বলেন, ” একাকী নামাজ পড়ার চেয়ে জামাতে নামাজ পড়ার সওয়াব সাতাইশ গুণ বেশি।”

নবী করিম(صَلَّي الّلٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم) সারা জীবন নিয়মিত জামাতে সাথে সালাত আদায় করেছেন। এমনকি অসুস্থ অবস্থায়ও কদাচিৎ ব্যতীত কখনো তিনি জামাত তরক করেননি।

অনুরূপভাবে সাহাবাগণও জামাতের প্রতি যত্নবান ছিলেব। মা’যুর ও প্রকাশ্য মুনাফিক ব্যতীত অন্য কেউ জামাত তরক করতেন না। যেমন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رَضِيَ الّلٰهُ عَنْهُ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, ” আমি লক্ষ্য করেছি, প্রকাশ্য মুনাফিক কিংবা অসুস্থ ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ জামাত থেকে অনুপস্থিত থাকতো না। এমনকি অসুস্থ ব্যক্তি দু’জনের কাঁধে ভর করে জামাতে হাজির হতো।

তিনি আরও বলেন, নবী করিম (صَلَّي الّلٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم) আমাদের হিদায়াতের তরিকা শিক্ষা দিয়েছেন। আর হিদায়াতের অন্যতম একটি তরিকা হলো, যে মসজিদে আজান হয় সেখানে নামাজ পড়া। (মুসলিম শরীফ)

জামাত হলো ইমাম ও মুক্তাদীর নামাজের মাঝে বিদ্যমান বন্ধন। জুমার নামাজ ব্যতীত অন্য সমস্ত নামাজে ইমামের সঙ্গে একজন মুক্তাদী থাকলেও জামাত অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য ইমাম ব্যতীত কমপক্ষে তিনজন মুক্তাদী থাকতে হবে।

জামাতের বিধানঃ

পুরুষের পাঞ্জেগানা নামাজ জামাতের সাথে পড়া সুন্নাতে আইনে মুয়াক্কাদা। শক্তি বিবেচনায় যা ওয়াজিব তুল্য। শরী’আত সম্মত ওজর ছাড়া জামাত পরিত্যাগ জায়েজ হবে না। যে ব্যক্তি কোনো ওজর ব্যতীত জামাত তরকে অভ্যস্ত হবে, সে গুনাহগার হবে।
অতএব জুমা এবং ইদের নামাজ জামাত ব্যতীত শুদ্ধ হবে না।

তারাবির নামাজ ও সূর্য গ্রহণের নামাজের জন্য জামাত করূ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। রমজান মাসে বিতরের নামাজের জন্য জামাত করা মুস্তাহাব। রমজান মাস ব্যতীত অন্য সময় বিতর নামাজ নিয়মিত জামাতের সাথে পরা মাকরূহে তানযীহী।
সুতরাং অনিয়মিত ভাবে দুই একবার পড়া মাকরূহ হবে না। চন্দ্র গ্রহণের নামাজের জন্য জামাত করা মাকরূহ। ডাকাডাকি ও ঘোষণার মাধ্যমে নফল নামাজ জামাতের সাথে পড়া মাকরুহ। কিন্তু যদি ডাকাডাকি ও ঘোষণার মাধ্যম ছাড়াই লোকজন সমবেত হয় এবং আজান ও ইকামত ছাড়া নফল নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়, তবে তা মাকরূহ হবে না।

যদি মহল্লার মসজিদের নির্দিষ্ট ইমাম ও মুয়াজ্জিন থাকে এবং মহল্লাবাসী আযান ইকামতের মাধ্যমে নামাজ পড়ে নেয়, তাহলে সেখানে ২য় বার নামাযের জামাত করা মাকরূহ। কিন্তু যদি প্রথম জামাতের রূপ পরিবর্তন হয়ে যায় যেমন, ২য় জামাতের ইমাম সাহেব ১ম জামাতের ইমামের দাঁড়ানোর স্থান বাদ দিশে অন্য জায়গায় দাঁড়ালো, তাহলে সেখানে ২য় জামাত করা মাকরূহ হবে না।

এই সমস্ত ফিকহী মাস’য়ালা প্রদান করেছেন, “হযরত মাওলানা শফীকুর রহমান নদভী (রঃ)”।

তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Leave a Comment