নোয়াখালীর ডিসি-এসপির অপসারণ চাইলেন রানা দাশগুপ্ত

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে মন্দির, দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নোয়াখালীর ডিসি (জেলা প্রশাসক) ও এসপির (পুলিশ সুপার) অনতিবিলম্বে অপসারণ দাবি করেছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। চৌমুহনীতে হামলা-ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি মন্দির আজ রোববার দুপুরে পরিদর্শন শেষে এ দাবি জানান তিনি।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘গত বছর অতিমারি পরিস্থিতির কারণে এ দেশের হিন্দুরা শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন করতে পারেননি। এ বছর তাঁরা ভেবেছিলেন, শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করবেন এবং ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে দুর্গাপূজা উৎসবে পরিণত হবে। এ রকম একটি আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়েছিল সপ্তমীর দিনে। কিন্তু অষ্টমীর দিন সেই যে কুমিল্লায় শুরু হলো, তারপর একটানা চলছে।’

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এই নেতা বলেন, কুমিল্লার ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রীর কথায় তাঁরা আশ্বস্ত হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ছাড় দেওয়া হবে না। তখন তাঁরা ভেবেছিলেন, হয়তো এই সাম্প্রদায়িক হামলা আর ঘটবে না। কিন্তু তাঁরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করলেন, পরদিনই চৌমুহনীতে, চট্টগ্রামে হামলা ও তাণ্ডবলীলা চালানো হলো।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, এসব ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে হরতাল হয়েছে। এই চৌমুহনীতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি দেশব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির আওতায় ২৩ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশে গণ–অবস্থান ও গণ–অনশন পালন করে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে। ধারাবাহিকভাবে তাঁরা আরও কর্মসূচি এগিয়ে নিতে চান। প্রয়োজনে দেশব্যাপী হরতালের কর্মসূচিও ভবিষ্যতে আসতে পারে।

হরতালের কর্মসূচি পর্যন্ত যাতে না যেতে হয়, সে জন্য সরকার ও প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানান রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘নোয়াখালীর ঘটনার ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নোয়াখালীর ডিসি ও এসপির অনতিবিলম্বে অপসারণ দাবি করছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও মন্দিরগুলো পুনরায় নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই। সেই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ মন্দির পরিদর্শনকালে রানা দাশগুপ্তের সঙ্গে জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক বিনয় কিশোর রায়, সদস্যসচিব আইনজীবী পাপ্পু সাহা, চৌমুহনী পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment