পোশাকশ্রমিক হয়রানি বন্ধের দাবি টার্গেটের নামে

টার্গেটের নামে পোশাকশ্রমিক হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। একই সঙ্গে শ্রমিকের অত্যধিক কাজের চাপ বন্ধ করা এবং দ্রব্যমূল্য কমানো ও মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে পোশাকশ্রমিকদের প্রোডাকশন টার্গেটের নামে হয়রানি, অত্যধিক কাজের চাপ বন্ধ করা এবং দ্রব্যমূল্য কমানো ও মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কেন্দ্রীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, করোনা মহামারিতে প্রায় তিন লাখ শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। এখন কাজের চাপ বাড়লেও নতুন করে শ্রমিক নিয়োগ না দিয়ে কম শ্রমিকের ওপর অধিক কাজের ভার চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০১০ সালে যেখানে ফাইভ পকেট প্যান্ট প্রতি ঘণ্টায় তৈরি করা হতো ৫০ থেকে ৬০টি, এখন একই প্যান্ট তৈরির টার্গেট ঘণ্টাপ্রতি ২৪০ থেকে ২৫০ পর্যন্ত। একই সঙ্গে শ্রমিকদের জোর করে চার ঘণ্টার বেশি সময় ওভারটাইম করতে বাধ্য করা হয়। এতে তরুণ শ্রমিকেরা অল্প সময়ের মধ্যেই কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলছেন। এভাবে বাংলাদেশের তারুণ্যের শক্তির অপচয় ঘটছে দারুণভাবে।


অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন করে পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে তাসলিমা আখতার বলেন, ২০১৮ সালে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড পোশাকশ্রমিকদের মজুরি ঘোষণা করার পরও তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে। অন্যদিকে গত ছয় মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেয়ে চলে গেছে শ্রমিকদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, ডিমসহ সব পণ্যের দাম এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে, শ্রমিকেরা এখন আগের চেয়ে অর্ধেক কিনেও কুলাতে পারছে না। এ অবস্থায় খাদ্যপণ্যসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কমাতে হবে এবং অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন করে পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্গঠন করতে হবে।

সমাবেশে বক্তব্য দেন ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সহসাধারণ সম্পাদক আলিফ দেওয়ান, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক নেতা বাচ্চু ভুইয়া, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু, আশুলিয়ার সভাপ্রধান বাবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জিয়াদুল ইসলাম, সাহিদা আক্তার, সাভারের সংগঠক সেলিনা আক্তার, মিরপুরের সংগঠক আসাদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা সম্পাদক কাওসার হামিদসহ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, চাকরি হারানো শ্রমিকেরা, যাঁরা নতুন করে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের মজুরি কমে গেছে। অন্যদিকে গত তিন বছরে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে দুবার, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে, এলপিজির দাম বাড়িয়েছে সরকার, বৃদ্ধি করা হয়েছে পানির দামও। ফলে শ্রমজীবী মানুষের বাসা ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে, বেড়েছে যাতায়াত খরচ, বেড়েছে শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যয়ও। ফলে অবিলম্বে সব ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি ঘোষণা করার কোনো বিকল্প নেই।

Leave a Comment