ডেঙ্গু এবং এর প্রতিকার…

ডেঙ্গু যার প্রকৃত উচ্চারণ ডেঙ্গী একটি ভাইরাসঘটিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ। ফ্লাভিভাইরাস বা ডেঙ্গী ভাইরাস নামক ভাইরাসের মাধ্যমে এই রোগটি ছড়ায়।এই ভাইরাসের বাহক Aedes aegypti L. ও Aedes albopictus নামক স্ত্রী মশা।প্রতিবছর সারা বিশ্বে প্রায় দশ কোটি মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়।

ডেঙ্গু জ্বরকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে।যথা:সাধারণ ডেঙ্গু জ্বর, হোমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বর,ডেঙ্গু শক সিনড্রোম।১.সাধারণ ডেঙ্গু জ্বর এ হঠাৎ করে জ্বর দেখা দেয়।জ্বর এ দেহের তাপমাত্রা ১০৩-১০৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে।সাধারণত স্ত্রী ডেঙ্গু মশা কামরানোর ২-৭ দিন পর জ্বর দেখা দেয়।একে হারভাঙ্গা জ্বর ও বলা হয়।২. হোমো রেজিক ডেঙ্গু জ্বর অত্যন্ত মারাত্মক ডেঙ্গু জ্বর। সাধারণ ডেঙ্গু জ্বরের জটিলতা থেকেই এর সৃষ্টি।এতে রোগীর নাক,মুখ,দাতের মাড়ী, ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। এ জ্বরে রক্তের অনুচক্রিকা অনেক কমে যায়।৩.ডেঙ্গু শক সিনড্রোম অত্যন্ত মারাত্মক।এতে হোমোকনসেন্ট্রেশন ঘটতে দেখা যায়।

ডেঙ্গু জ্বর হলে পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে এবং বেশি করে তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে।জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল দেওয়া হয়।এসপিরিন জাতীয় ঔষুধ দেওয়া যাবে না। প্রায়শ রোগীর শিরায় স্যালাইন দিতে হতে পারে।মারাত্মক রূপ ধারণ করলে রোগীকে রক্ত দিতে হতে পারে।ডেঙ্গু জ্বরে হলে কোন ধরনের এন্টিবায়োটিক ও ননস্টেরয়েডাল প্রদাহপ্রশমী ওষুধ সেবন করা যাবে না, করলে রক্তপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করতে মশা নিধন ই প্রধান উপায়।যেহেতু এই মশা দিনের বেলায় কামরায় তাই দিনের বেলায় মিশর কামড় থেকে বাঁচতে হবে।বাড়ির আশেপাশের ফুলের টব,ভাঙ্গা হাড়ী পাতিল,ডাবের খোসা ড্রাম এ যাতে পানি জমে না থাকে তা লক্ষ্য রাখতে হবে।এইসব উৎস থেকেই মশা জন্মায় তাই কোনোভাবেই এগুলোতে পানি জমতে দেওয়া যাবে না।

এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পাঁচটি মৌলিক দিশাসমেত সংবদ্ধ একমুখী নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর সুপারিশ করেছে:১.প্রচার, সামাজিক সক্রিয়তা, এবং জনস্বাস্থ্য সংগঠন ও সমুদায়সমূহকে শক্তিশালী করতে আইন প্রণয়ন,২. স্বাস্থ্য ও অন্যান্য বিভাগসমূহের মধ্যে সহযোগিতা (সরকারী ও বেসরকারী),৩. সম্পদের সর্বাধিক ব্যবহার করে রোগ নিয়ন্ত্রণে সুসম্বদ্ধ প্রয়াস,৪.যে কোন হস্তক্ষেপ যাতে সঠিক লক্ষ্যবস্তুতে হয় তা সুনিশ্চিত করতে প্রমাণ-জ্বরভিত্তিক সিদ্ধান্তগ্রহণ এবং৫.স্থানীয় অবস্থায় পর্যাপ্ত সাড়া পেতে সক্ষমতা বৃদ্ধি।

Leave a Comment