কাবুলে চীন-তালেবান প্রথম প্রকাশ্য বৈঠক

By Anowarul Hossain Aug 25, 2021

তালেবানরা কাবুল দখল করার পর প্রথমবারের মতো তাদের সঙ্গে কাবুলে প্রকাশ্য কূটনৈতিক বৈঠক করেছে চীন। তালেবানের রাজনৈতক অফিসের উপ প্রধান আব্দুল সালাম হানাফির এবং চীনা রাষ্ট্রদূত ওয়াং ইউ-র মধ্যে বুধবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এই বৈঠক সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেব, তালেবানদের সঙ্গে আমাদের এখন নিরবচ্ছিন্ন ও কার্যকর যোগাযোগ রয়েছে এবং নানা বিষয়ে শলা-পরামর্শও চলছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রধান ইস্যুগুলি নিয়ে আলোচনার জন্য কাবুল আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম এবং চ্যানেল।” তবে তিনি কাবুলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

তিনি বলেন, “নিজেদের ভবিষ্যত এবং ভাগ্য নির্ধারণে আফগান জনগণের স্বাধীন সিদ্ধান্তের প্রতি চীনের পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। আফগানদের নেতৃত্বে আফগান রীতি-নীতি বাস্তবায়নও সমর্থন করে চীন। আফগানিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সু-প্রতিবেশীমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্যও প্রস্তুত আছি আমরা। এছাড়া আফগানিস্তান শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং দেশটির পুনর্গঠনেও গঠনমূলক ভুমিকা পালন করতে চায় চীন।”

প্রসঙ্গত, গত ১৫ আগস্ট তালেবানরা কাবুল দখল করে নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ভারত আফগানিস্তান থেকে তাদের কুটনৈতিক মিশন প্রত্যাহার করে এবং দূতাবাস বন্ধ করে দেয়। কিন্তু পাকিস্তান, চীন এবং রাশিয়া কাবুলে তাদের দূতাবাস খোলা রাখে এবং তালেবানদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।

কাবুল দখলের আগে গত মাসেই মোল্লা আব্দুল গনি বারাদারের নেতৃত্বে তালেবানদের একটি প্রতিনিধি দল চীন সফরে গিয়েছিল। চীনও তাদেরকে সাদরে গ্রহণ করেছিল। সেসময় চীন তালেবানদের প্রতি শিনচিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এবং বিশেষকরে পূর্ব তুর্কিস্তান ইসলামি আন্দোলন (ইটিআইএম)-কে সহায়তা না করার আহবান জানায়।

তালেবান নেতা মোল্লা বারাদার চীনের সেই আহবানে সাড়া দিয়ে প্রতিশ্রুতি দেন যে, তালেবানরা ইটিআইএম-কে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে কোনো জঙ্গি তৎপরতা চালাতে দেবে না। এসময় মোল্লা বারাদার চীনকে আফগানিস্তানে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করার আহবানও জানান।

কাবুল দখল করার পর চীন তালেবানদের প্রতি একটি উম্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের আহবান জানায়। এছাড়া জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাধারণ প্রত্যাশার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি মধ্যপন্থী এবং বিচক্ষণ দেশীয় ও বৈদেশিক নীতি গ্রহণের পরামর্শও দেয়।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *