বন্যার আশংকা তিস্তায় ফের পানি বৃদ্ধি

উজানের পাহাড়ি ঢল ও হালকা বৃষ্টিতে আবারও তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তার তীরবর্তি নিম্নাঞ্চলে ফের বন্যা আশংকা দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ আগষ্ট) বেলা ১২ টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)। যা বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জানা গেছে, গত কয়েকদিন বাংলাদেশ ও ভারতের সিকিম উপত্তকা থেকে সৃষ্ঠ তিস্তা নদী ভারতে প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাট জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বর্ষাকালে অতিবর্ষনের ফলে ভারতের অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেয়ায় বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যা আর তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তীরবর্তী মানুষরা।

উজানের পাহাড়ি ঢলে গত মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) দিনগত রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পায়ে শুক্রবার(১৩ আগস্ট) বিপৎসীমা অতিক্রম করে। দিনভর বৃষ্টিতে আরও বাড়তে থাকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ। দুদিন পানি বেড়ে বেলা ১২টায় দেশের বৃহত্ততম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)। যা বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে ব্যারাজ রক্ষার্থে সকল জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। লকডাউনের ধকল না কাটতে বন্যার শ্বঙ্কায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষ।

অন্যদিকে কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ভোটমারী (নাককাটির ডাঙ্গা) গ্রামের শৌলমারী চর, মাঝখানে তৈরী হচ্ছে জমি কাঁটা তার দিয়ে ঘিরে ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র করছেন। সেখানে তিস্তার বুকে একটি রাস্তা তৈরী করে তারা। যার ফলে নদীর পানি বাধাগ্রস্ত হয়ে দুই তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাস্তার কারণে চরের মাঝে পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ডুবে আছে চরের অনেক জমি।

করোনার লকডাউনে দীর্ঘ দিন কর্মহীন থাকায় বন্যার জন্য গচ্ছিত খাদ্য শেষ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তিস্তা চরাঞ্চলের এসব ছিন্নমুল মানুষ। জেলার ৫টি উপজেলার শত শত পরিবার ইতোমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে শিশু বৃদ্ধ আর প্রতিবন্ধিদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। গবাদি পশু পাখি নিয়েও চরম কষ্টে পড়েছেন পানিবন্দি তিস্তা পাড়ের মানুষ।

তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দিয়ে পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফলে নিম্নাঞ্চল প্রাবিত হয়েছে। তবে তা রাতে বিপৎসীমার নিচে নেমে আসারও সম্ভবনা রয়েছে। এতে চিন্তার কোনো কারণ হবে না। তবে পানি কমে যাওয়ার পর ভাঙ্গনের কবলে পড়তে পারে অনেক পরিবার।

Leave a Comment