হবিগঞ্জে এসপি-ওসিসহ ৫৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

হবিগঞ্জে বিএনপির সমাবেশে গুলিবর্ষণের ঘটনায় এসপি, ওসিসহ ৫৪ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপরে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট শামছুল ইসলাম। বিচারক শুনানী শেষে মামলার আদেশ পরে দেবেন জানান।মামলার আসামিরা হলেন- হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুক আলী, ডিবির ওসি আল-আমিন, ওসি (তদন্দ) দৌস মোহাম্মদ, এসআই (নিরস্ত্র) নাজমুল হাসান, এএসআই আবু জাবের, এএসআই বাপ্পী রুদ্র পাল ও এএসআই আলমগীর হোসেনসহ ৫৪ জন পুলিশ সদস্য। আদালত পরিদর্শক আনিছুর রহমান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলায় অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি ২২ ডিসেম্বর একটি সমাবেশ আহ্বান করে। সমাবেশটি করতে হবিগঞ্জ পৌরসভার মাঠে ও চিলড্রেন পার্ক ব্যবহার করার জন্য প্রশাসনের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। এরই মধ্যে জনসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি সর্বমহলে প্রচারিত হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে শায়েস্তানগরস্থ বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা বিএনপি। যথারীতি বিষয়টি লিখিতভাবে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়। কিন্তু পুলিশ পার্টি অফিসের সামনে একটি ছোট মঞ্চ তৈরির কাজে বাঁধা দেয় এবং গলির পূর্ব, পশ্চিম মুখে বেরিকেড দিতে শুরু করে। বেলা ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অর্থাৎ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি ও চীফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সভাস্থলে উপস্থিত হন এবং সভাস্থলে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হতে শুরু করে। কিন্তু পুলিশ হবিগঞ্জ শহরের সকল প্রবেশ মুখে চেক পোস্ট বসিয়ে সভাস্থলে আসা নেতাকর্মীদের আটক ও হয়রানি করতে থাকে।

এক পর্যায়ে পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি, সদর থানার ওসি মাসুক আলী, ডিবি’র ওসি আল আমিন এবং ওসি (তদন্ত) দৌস মোহাম্মদের নির্দেশে উপস্থিত বিপুল সংখ্যক পুলিশ সমাবেশ স্থলের সামনে ছাত্রদলের মিছিলে গুলি বর্ষণ শুরু করে। পুলিশের গুলিতে বহু নেতাকর্মী আহত হয়।মামলার আসামিগণ বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে সর্বমোট ৭৫৪টি শর্টগানের বা ৪৪৮টি শর্টগানের সীশা এবং ৯০টি গ্যাস গানের শর্টসেল নিক্ষেপ করে বলে দাবি বিএনপির। এতে তাদের ৩০০ নেতাকর্মীকে আহত হয়েছে বলে জানানো হয়।

মামলার বাদী অ্যাডভোকেট শামছুল ইসলাম বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ প্রায় ১২০০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে। এতে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা সুষ্ট বিচারের আশায় আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছি।পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি জানান, অফিসিয়াল কাজে তিনি সিলেটে আছেন তবে মামলার বিষয়টি শুনেছেন। সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কেউ যদি মামলা করে সেটি আদালত দেখবে।

Leave a Comment