স্ত্রীকে মেরে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ, স্বামীর দাবি জীনের আসর

শরীয়তপুরে মারধরে আহত এক গৃহবধূ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বামী তাঁকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ। তবে তাঁর স্বামীর দাবি, ওই গৃহবধূকে জিনে আসর করেছে। জিনই তাঁকে মারধর করেছে।

ওই গৃহবধূর নাম তামান্না আক্তার (২২)। তিনি শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের খিলগাঁও গ্রামের দুলাল গাজীর স্ত্রী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষে পড়েন তামান্না।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের ভর্তাইসার গ্রামের তোতা মিয়ার মেয়ে তামান্না আক্তারের সঙ্গে ২০১৮ সালে একই উপজেলার খিলগাঁও গ্রামের দুলাল গাজীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই তামান্নাকে মারধর করেন দুলাল গাজী। তামান্নাকে জিনে আসর করেছে, এমন অভিযোগ তুলে মারধর করা হতো। কয়েক দফায় তাঁকে বাড়ি থেকেও বের করে দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে তাঁকে শৌচাগারে বেঁধে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে বাবার বাড়িতে নিয়ে যান। এ নিয়ে দুই পরিবারের স্বজনেরা একাধিকবার সালিস–মীমাংসা করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তামান্নাকে আবারও মারধর করেন দুলাল গাজী। এ অবস্থায় শরীয়তপুরের এক সাংবাদিকক খবর পেয়ে বিষয়টি স্থানীয় পালং থানা-পুলিশকে জানান। রাতে তামান্নার বাবা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

তামান্না আক্তার বলেন, ‘আমাকে শ্বশুরবাড়ির কেউ দেখতে পারেন না। সংসারের কোনো কাজকর্মে ভুলভ্রান্তি হলেই আমাকে মারধর করা হয়। আর তাঁরা অপবাদ দেন, আমাকে নাকি জিনে আসর করেছে। আমার তিন বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। এসব কারণে সন্তানটিও আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’

তামান্নার বাবা তোতা মিয়া বলেন, ‘এক নারীর সঙ্গে দুলালের অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় আমার মেয়েকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

জানতে চাইলে তামান্নার স্বামী দুলাল গাজী বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে মারধর করিনি। তাকে জিনে আসর করেছে। সে বিভিন্ন সময় বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়, আবার ফিরে আসে। তাকে কে মারধর করে, আমি জানি না।’

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, গৃহবধূ তামান্নার বাবার বাড়ির লোকজনকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তামান্নাকে জিনে আসর করেছে, এমন ভিত্তিহীন কথা তাঁর স্বামীর বাড়ির লোকজন কেন বলছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে।

Leave a Comment