সূরা নাযি’আত কেন পড়বেন?

নাযি’আত শব্দটির আভিধানিক অর্থ আকর্ষণকারীগণ, সজোরে কোনো বস্তুকে টেনে আনায়নকারীগণ।এ সূরায় ২টি রুকূ, ৪৬টি আয়াত, ১৭৩টি বাক্য এবং ৯৫৩টি অক্ষর রয়েছে।

শানে নুযূল:
হিজরতের পূর্বে যেসব অকাট্য প্রমাণসহ আয়াত নাজিল হয়েছিল, মক্কার হঠকারি কাফেররা নিজেদের জ্ঞান-বুদ্ধির ফলে, ঐ সকল আয়াত বিশ্বাস করতো না এবং এর প্রতি ভ্রুক্ষেপও করতো না। অথচ কিয়ামতের ধ্বংস-প্রলয় সম্পর্কে বারবার তাদেরকে বলা হচ্ছিল। আল্লাহর অসীম কুদরতের কথাও তাদের নিকট বারবার বিবমত হচ্চিল। তবু তারা বলত কিয়ামত হবেই এ কথাটা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। তখন আল্লাহ রব্বুল আলামিন এ সূরা নাযিল করে কিয়ামতের সম্ভাবনাকে পূর্ণ নিশ্চয়তার সাথে প্রমাণ করেন। [মা’আলিম]

সূরাটির ফজিলত:

১. সূরা আন-নাযি’আত দুশমনের সামনে পাঠ করলে তার শত্রুতা এবং অনিষ্টতা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

২. আর যে ব্যক্তি ঘুমের ঘোরে উক্ত সূরাটি তিলাওয়াত কটতে দেখে অথবা এমনিতেই দেখে, তার অন্তর থেকে সমস্ত চিন্তা-ভাবনা দূরীভূত হয়ে যায়। [নূরুল কুলূব]

৩. একটি দূর্বল বর্ণনায় এসেছে যে,
যে ব্যক্তি সূরা আন-নাযি’আত সর্বদা পাঠ করবে, মহান আরশের অধিপতি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করার পূর্বে কবর ও হাশরে এত আরাম ও প্রশান্তিতে রাখবেন যে, তার মনে হবে, সে যেন এই মাত্র এক ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সময় পরিমাণ তথায় অবস্থান করছে।

এছাড়াও-
☞এ সূরার আয়াতসমূহ অত্যন্ত ছোট ছোট। খুব সহজেই হিফজ করতে পারবেন।

☞চোখের সামনে থাকা অসংখ্য নিয়ামতরাজি আবার নতুন করে উপলব্ধি করতে পারবেন।

☞আরো জানতে পারবেন, জান্নাতি ও জাহান্নামীদের আলামত সমূহ জেনে, দুনিয়াতেই বিচার করতে পারবেন, আপনি জান্নাতি নাকি জাহান্নামী। অর্থাৎ, এক কথায় যাকে বলে, আত্মসমালোচনা করার মোক্ষম উপায় জেনে নিতে পারবেন।

এই সূরার তাফসীর পড়েও আপনি অভাবনীয় অনেক কিছু জানতে পারবেন। যেমন-

◑ কিছু কিছু গুরুত্ব আয়াতের শানে নুযূল। অর্থাৎ এইসব আয়াত কেন নাযিল হলো, তার পিছনে কী কী কাহিনি রয়েছে। এসব কিছুই সাহাবিদের বর্ণনায় পেয়ে যাবেন। তাতে কিছু ঘটনা আপনাকে নতুন করে ভাবাবে।

◑ কবরের ছওয়াব ও আজাব সমন্ধে তথ্যবহুল কিছু কথা জানতে পারবেন।

◑ নফস ও রূহ সম্পর্কে বিজ্ঞ সালাফ ও সালেহীনদের বিষ্ময়কর তথ্য আপনার জানার পরিধি বাড়িয়ে দিবে।

◑খেয়াল-খুশির বিরোধিতা করার জন্য আপনি পেয়ে যাবেন কিছু সহজসাধ্য কার্যকরী টিপস।

◑নফসের চক্রান্ত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

তাহলে আর দেরি কেন? অযু করে পবিত্র হয়ে কুরআন খুলে বসে পড়ুন। মস্তিষ্ককে ইনপুট দিয়ে মস্তিষ্কের কার্যকরী ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলুন। আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবেন, ইন শা আল্লাহ।

লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Leave a Comment