শেষটা আরো বাজে বাংলাদেশের

হতাশায় শুরু, চূড়ান্ত ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে শেষ। ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১ থেকে বাংলাদেশের পাওয়া হলো না কিছুই। বরং দুঃস্বপ্নের এই আসর ভুলে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে দল সেটাই প্রশ্ন।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে শেষ ভালোর আশা যদি কেউ করে থাকেন, তাদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হলো আরেকবার। দুবাইয়ে বৃহস্পতিবার দুই ইনিংস মিলে ৪০ ওভারের ম্যাচটা ২১.২ ওভারেই শেষ!

বাংলাদেশকে ৭৩ রানে অলআউট করে ৮২ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

সুপার টুয়েলভ পর্বে পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরে শেষ হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। এর আগে প্রথম পর্বে আছে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের ক্ষত। আইসিসির সহযোগী সদস্য দুই দেশ ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে জয়ই বাংলাদেশের এই আসরে প্রাপ্তি।

কিন্তু মূল পর্বে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর জয় অধরাই থেকে গেল বাংলাদেশের। অন্যদিকে অজিরা দাপুটে এই জয়ে সেমিফাইনালের স্বপ্নে জোর হাওয়া পেল।

গ্রুপ-১ এ ৪ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড চার ম্যাচের সবগুলো জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। অস্ট্রেলিয়ার সমান ম্যাচে সমান জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকা।

ইংল্যান্ড চার ম্যাচের চারটিতে জিতলেও এখনো সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়নি। শনিবার যদি দক্ষিণ আফ্রিকা ইংল্যান্ডকে হারায় তবে শেষ চারে যেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জিততেই হবে অজিদের।

এদিন দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার। বাংলাদেশের মতো শ্রীলঙ্কারও সেমির স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন উইন্ডিজের অনেক যদি কিন্তুর ওপর নির্ভর করছে সেমির স্বপ্ন।

এদিন বাংলাদেশের দেওয়া ৭৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দুই অজি ওপেনার উদ্বোধনী জুটিতেই যোগ করেন ৫৮ রান। পঞ্চম ওভারের শেষ বলে ফিঞ্চ ২০ বলে ৪০ রান করে ফেরেন তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে। পরের ওভারে ১৪ বলে ১৮ রান করা ডেভিড ওয়ার্নাকে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলাম। তবে অজিরা ততক্ষণে নিরাপদ অবস্থানে পৌঁছে গেছে। মিচেল মার্শ ৫ বলে অপরাজিত ১৬ রানে ম্যাচ শেষ করেন।

উইকেটটা ছিল ব্যাটারদের জন্য স্বর্গ। কিন্তু সেই ব্যাটিং বান্ধব উইকেটেই বাংলাদেশের ব্যাটাররা বাজেভাবে ব্যর্থ। প্রথম ওভারেই মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ড হন লিটন দাস (০)। পরের ওভারে জশ হ্যাজলউডের বলে বোল্ড হন সৌম্য সরকার (৫)।

উইকেট হারানোর এই ধারা বজায় থাকলে ৬.১ ওভারে ৩৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় বাংলাদেশ। যেখান থেকে কেউ আশা দেখাতে পারেননি।

সর্বোচ্চ ১৮ বলে ১৯ রান এসেছে সাত নম্বরে খেলতে নামা শামীম হোসেনের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া মোহাম্মদ নাঈম ১৬ বলে ১৭ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৮ বলে ১৬ রান করেন। বাকিদের কেউই দুই অঙ্কের স্কোর পাননি।

অজিদের পক্ষে অ্যাডাম জাম্পা ৪ ওভারে ১৯ রান খরচায় ৫ উইকেট নিয়েছেন। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক ও জস হ্যাজলউড।

চলতি আসরে এ নিয়ে দুইবার এক শর নিচে অলআউট হলো বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঠিক আগের ম্যাচ ৮৪ রানে অলআউট হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। 

প্রথম পর্বে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের এবারের বিশ্বকাপ মিশন। এরপর ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে সুপার টুয়েলভে পা রাখে মাহমুদউল্লাহরা।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটে হেরে শুরু হয় বাংলাদেশের সুপার টুয়েলভ পর্ব। সেই ম্যাচে ১৭১ রান করেও হেরে যায় বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরের ম্যাচে ১২৪ রান করে হার ৮ উইকেটে।

তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৪৩ রান তাড়ায় ৩ রানে হার মানে টাইগাররা। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ৮৪ রানে অলআউট হয়ে ৬ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তো আরো বাজে পারফরম্যান্স। সব মিলে হতাশার চাদরে ঢাকা থাকল বাংলাদেশের আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

Leave a Comment